সমুদ্র সম্পদ নিয়ে যৌথভাবে কাজ করবে বাংলাদেশ ও ভারত

সমুদ্র সম্পদ নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারত যৌথভাবে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এমপি।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তর কক্ষে ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামীর সাথে সৌজন্য সাক্ষাত শেষে সাংবাদিকদের একথা জানান মন্ত্রী। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানিয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রওনক মাহমুদ ও অতিরিক্ত সচিব মোঃ তৌফিকুল আরিফ এসময় উপস্থিত ছিলেন।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, “বন্ধুপ্রতিম দুটি দেশ মিলে কিভাবে সমুদ্র সম্পদ আহরণ করা যায় এবং আহরিত সম্পদ কিভাবে দুদেশের চাহিদা অনুযায়ী আমদানি-রপ্তানি করা যায় সে লক্ষ্যে ভারত সকল প্রকার সহযোগিতা প্রদান করবে। এর মধ্যে মেরিটাইম রিসোর্স সেন্টার প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে ভারত আগ্রহ প্রকাশ করেছে। সমুদ্রে মৎস্যসম্পদ প্রাপ্তিস্থান সনাক্তকরণে স্যাটেলাইট ডাটা ব্যবহার, অত্যাধুনিক ফিশিং ট্রলার প্রদান, জেলেদের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও সুরক্ষা, আবহাওয়া সংক্রান্ত সহযোগিতাসহ অন্যান্য সহযোগিতা দিতে আগ্রহী ভারত। এছাড়াও আমাদের সমুদ্র বা উপকূলীয় এলাকায় মাছ ধরা বন্ধ থাকাকালে যাতে অবৈধভাবে কোন নৌকা বা জাহাজ মাছ ধরতে না পারে সেজন্য ভারতীয় কোস্টগার্ড ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আমাদের সাথে যৌথভাবে কাজ করবে।”

মন্ত্রী আরো বলেন, “ডেইরি, পোল্ট্রি ও মৎস্য খাতে উভয় দেশ কিভাবে কাজ করতে পারে সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমাদের মাছ ও মাংসের উৎপাদন বৃদ্ধি ও চাহিদা অনুযায়ী বিদেশে রপ্তানির ব্যাপারে ভারত সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে। যে সময় বাংলাদেশে মাছ আহরণ বন্ধ থাকে সে সময়ে যৌথভাবে মাছ আহরণ বন্ধ রাখার বিষয়ে আমাদের ঐকমত্য হয়েছে। আগামীতে মা ইলিশ আহরণ ও জাটকা আহরণ বন্ধে একই সময়ে আমাদের সাথে ভারতও ব্যবস্থা নেবে।”

মন্ত্রী আরো যোগ করেন, “উভয় দেশে উৎপাদিত মৎস্য ও প্রাণিজাত সামগ্রী কিভাবে আমদানী-রপ্তানি করা যায় সে বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়নে দেশের অভ্যন্তরে গবেষণাগার নির্মাণ, রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য সীমান্ত এলাকায় মাছ, মাংস, দুধ, ডিম সংরক্ষণে কোল্ড স্টোরেজ তৈরী, প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট নির্মাণ প্রভৃতি ক্ষেত্রে যৌথভাবে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে ভারত। সামগ্রিকভাবে দুটি বন্ধুপ্রতিম দেশ যৌথভাবে আমরা কাজ করতে চাই।”

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের বড় ত্যাগ ও অবদানের কথা স্মরণ করে মন্ত্রী বলেন, “ভারত বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু। ভারত মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের এককোটি মানুষকে আশ্রয় দিয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে। তাদের সৈন্যরা আমাদের সাথে মিত্র বাহিনীতে যুদ্ধ করেছেন। বাংলাদেশের যেকোন প্রয়োজনে ভারত পাশে দাঁড়ায়। যেকোন সময়ের তুলনায় ভারতের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক এখন অনেক ভালো। ভারতের সাথে বন্ধুত্ব আরো নিবিড় করে আমরা একসাথে এগিয়ে যেতে চাই।”

এছাড়া বাংলাদেশে ডেইরি খাতের অপার সম্ভাবনা রয়েছে উল্লেখ করে এ খাতে সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প নিয়ে বাংলাদেশের সাথে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী। বাংলাদেশের মৎস্য রপ্তানির সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে ভারতে বিশেষ করে ত্রিপুরা রাজ্যে বাংলাদেশের মাছের প্রচুর চাহিদা রয়েছে বলেও জানান তিনি। এজন্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে অংশীদারিত্বমূলক প্রকল্প গ্রহণেরও কথাও উল্লেখ করেন তিনি।