রূপদিয়ায় শীতবস্ত্রের অস্থায়ী হাট জমে উঠেছে

প্রতি বছরের ন্যায় এবারও জমে উঠেছে রূপদিয়া বাজারের শীত বস্ত্র বিক্রির অস্থায়ী হাট। শীত শুরুর সাথে সাথে মানুষ তাই ছুটছে সাধ্য অনুযায়ী স্বল্পমূল্যে শীতের গরম কাপড়ের এসব দোকানে। প্রতি বছরে রূপদিয়া বাজারে শীত মৌসুমে অস্থায়ী ভাবে গড়ে ওঠা এই মার্কেটে ছোট-বড় ১৫-২০ টি দোকানে দূরদুরান্ত থেকে আসেন ব্যবসায়ীরা।

সপ্তাহের দুদিন (শুক্রবার ও সোমবার) নিম্ন আয়ের মানুষ থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্তরের মানুষের পদচারনায় মুখরিত হয়ে ওঠে রূপদিয়ার এই পুরাতন কাপড়ের মার্কেট। শীতের নতুন কাপড়ের চেয়ে বিদেশি পুরনো এসব কাপড়ের চাহিদা বেশি বলে ক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। বিদেশি পুরনো শীতের কাপড়ের দাম তুলনামুলক কম। তাছাড়া এই কাপড়গুলো দেখতে সুন্দর, মানসম্পন্ন ও টেকসই হওয়ায় ক্রেতাদের এসব কাপড়ে আগ্রহ অনেক বেশি। আশে-পাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সাধারণ মানুষ এখানে ছুটে আসে গরম কাপড় কিনতে। পুরাতন শীতবস্ত্রের দাম গতবারের চাইতে তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। তারপরও নতুনের চেয়ে কম দাম বলে সব বয়স ও শ্রেণীর মানুষ এখান থেকে শীতের পোশাক কিনছে।এখানে মুলত বিভিন্ন ডিজাইনের কোট, জ্যাকেট, সোয়েটার, ট্রাউজার, ওভারকোট, হাফ ও ফুল হাতা গেঞ্জি, কম্বল, মেয়েদের কার্টিগান, হাতমোজা ও পা মোজার ক্রেতার সংখ্যা বেশি। সপ্তাহের দুদিনই শত শত মানুষ শীতের গরম কাপড় কিনতে ভীড় জমান।

তবে গত বছরের চেয়ে এ বছর পুরাতন কাপড়ের দাম অনেক বেশি বলে ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা বলছেন। প্রত্যেক বছরেই এসব কাপড়ের দাম কিছুটা বাড়ে। রূপদিয়া বাজারে আগত এসব ব্যবসায়িরা বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর পুরাতন কাপড়ের দাম বেশি দিয়ে কিনচ্ছেন। ফলে তাদেরও একটু বাড়তি দামে বিক্রি করা লাগছে। ক্রেতাদেরও অভিযোগ, দাম বেশি দিতে হচ্ছে। গত ৫বছর ধরে এখানে কাপড় বিক্রি করতে আসা শফিয়ার রহমান বলেন প্রতি বছর শীতের সময় মহাজনদের কাছ থেকে গরম কাপড়ের গাইড নিয়ে তা খোলা বাজারে খুচরা বিক্রি করেন। গত বছর ১০ থেকে ১২ হাজার টাকায় একটি কাপড়ের গাইট বা বেল কেনা যেতো। এ বছর একটি গরম কাপড়ের গাইড বা বেল কিনতে ১৬ থেকে ১৮ হাজার টাকা পড়ে যায়। আরেক ব্যবসায়ী আল মামুন বলেন, শীত উপলক্ষে চীন, তাইওয়ান, জাপান, কোরিয়া ও রাশিয়া থেকে পুরাতন শীতবস্ত্র এদেশে আশে। ১০০ কেজি ওজনের এক বেল ছোটদের পুরনো শীত পোশাক চট্টগ্রাম ও ঢাকায় সাড়ে ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা। বড়দের ১০০ কেজি ওজনের এক বেল পোশাকের দাম ৭ হাজার থেকে সাড়ে ৯ হাজার টাকা। ৮০ থেকে ১০০ কেজি ওজনের জ্যাকেট ও সোয়েটারের এক বেলের দাম পড়ছে ১৩ হাজার টাকা। এখানে এনে পরিবহন খরচ ও অন্যান্য খরচ মিলিয়ে দাম বেশি পড়ে যায়। ফলে খুচরা বাজারেও দাম বাড়ছে। একটি গাটে ১০ টাকা থেকে শুরু করে ১০০০ টাকার কাপড়ও থাকে। এবার বিক্রি শুরু হয়েছে নভেম্বর থেকে চলবে যতোদিন শীত থাকবে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত বছর বাচ্চাদের যে কাপড় ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল তা এবার ৮০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বড়দের যে কাপড় ১০০ থেকে ১৫০ টাকায় কেনা গেছে, এবার তা কিনতে হচ্ছে ২০০ থেকে ৩০০ টাকায়। গত বছর যে সোয়েটার বিক্রি হয়েছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায়, সে সোয়েটার এবার বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকায়। একইভাবে জ্যাকেট, ট্রাউজার, কম্বলসহ অন্য গরম কাপড়ের দামও বেশি। কাপড় কিনতে আসা ক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, পুরাতন কাপড়ের মধ্যে অনেক ভালো মানের কাপড় পাওয়া যায়। তবে বেছে কিনতে হয়। গত বছরের চেয়ে এবছর প্রতিটি কাপড়ের দাম দ্বিগুন।