সরকার চোখ বুজে ধ্যান করছে : রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দেশের লক্ষ কোটি শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ নিয়ে সরকারের কোনো ভিশন নেই বলেই লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী অন্ধকারের অতল গহব্বরে তলিয়ে যাচ্ছে। অথচ অফিস, আদালত, শিল্প, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, যানবাহন সবকিছুই খুলে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে জ্যামিতিক হারে। প্রতিদিনই হাজার হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, করোনা নিয়ে সরকার তথ্য গোপন করে অতি সামান্য আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা প্রকাশ করছে। অথচ প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যান্য নেতা-মন্ত্রীরা নিরাপদে আইসোলেশনে থেকে নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছেন। আর সাধারণ মানুষ বিনা চিকিৎসায় ভেন্টিলেটর, অক্সিজেন, হাসপাতালের বেড ইত্যাদির অভাবে কাতরাচ্ছে। ঢাকাসহ কোথাও আইসিইউ খালি নেই। অক্সিজেনের অভাবে মায়ের কোলেই সন্তান মারা যাচ্ছে। বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে করোনা রোগীকে ফেরত দেওয়া হচ্ছে। সরকার যেন চোখ বুজে ধ্যান করছে।

তিনি বলেন, গ্রেট ব্রিটেন, ভারত, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা বা আমেরিকাসহ কোনও দেশেই করোনাকালীন বাস্তবতায় অটো পাস দেয়া হয়নি। সকল দেশেই শিক্ষার্থীর মেধার মূল্যায়নের জন্য পরীক্ষার বিকল্প শুধু পরীক্ষাই রাখা হয়েছে। অন্য কিছু নয়। অথচ বাংলাদেশ চলছে সম্পূর্ণ উল্টো পথে উল্টো রথে। এখানে সব চলছে করোনা ভাইরাসের অজুহাতে। অটো পাস আর ফটোকপির পাস দিয়ে বর্তমান সরকার একটি প্রজন্মকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

বিএনপির এই শীর্ষনেতা আরো বলেন, বাংলাদেশ চলছে সম্পূর্ণ উল্টো পথে-উল্টো রথে। সব চলছে করোনা ভাইরাসের অজুহাতে। শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য বন্ধ করে রাখা রয়েছে। সরকার সারাক্ষণ ডিজিটাল বাংলাদেশের স্লোগান দিচ্ছে তাহলে বাসায় থেকে কিংবা অন্য কোনও বিকল্প পদ্ধতিতে কিভাবে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা অব্যাহত রাখতে পারে, সে ব্যাপারে সরকার কি আদৌ কোনও পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে? তা না করে অটো পাস আর ফটোকপির পাস এসব করে সরকার একটি প্রজন্মকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

তিনি বলেন, শুরু হলো মহান বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তীর ক্ষণ গণনা। গণতন্ত্র, সাম্য-মানবিক মর্যাদা-ন্যায়বিচার, এই মূলমন্ত্রে গোটা জাতি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল। বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। আমরা বিজয়ী হয়েছিলাম। বিজয়ের এই পঞ্চাশ বছরের যাত্রাকালে দেখছি, রাষ্ট্র ও সমাজে আবারও একদলীয় কর্তৃত্ববাদী নিষ্ঠুর শাসনের উত্থান এবং বেপরোয়া ‘দুর্নীতির উন্নয়নের’ মহামারি। সরকার ব্ল্যাক-আউট করে দিয়েছে সাম্য, মানবিক-মর্যাদা ও ন্যায়বিচার। নিরুদ্দেশ হয়েছে গণতন্ত্র। ভোটাধিকার, মানবাধিকার অন্ধকার গোরস্থানে শায়িত করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ ও ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।