সুপার সোলজার তৈরি করছে চীন-ফ্রান্স

নতুন যুগের যুদ্ধের প্রস্তুতি হিসেবে বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন সেনা তৈরি করছে বিশ্বের পরাশক্তি দেশগুলো। অস্ত্র প্রতিযোগিতার দৌড়ে ইতোমধ্যে প্রকল্প শুরুর ঘোষণা দিয়েছে চীন ও ফ্রান্স। যুদ্ধক্ষেত্রে শুধু হত্যা করার লক্ষ্যে ল্যাবে তৈরি হচ্ছে ‘ক্যাপ্টেন আমেরিকা’ ও ‘টারমিনেটর’র মতো ‘নতুন প্রজন্মের সেনা’।

যাদের নাম দেয়া হয়েছে ‘সুপার সোলজার’। মূলত ডিএনএ সংস্কার, বায়ো ইঞ্জিনিয়ারিং ও উন্নত রোবট প্রকৌশলের সমন্বয়ে তৈরি এসব সেনাকে শিগগিরই যুদ্ধক্ষেত্রে সাধারণ সেনার মতোই দেখা যাবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। সেই সঙ্গে সুপার সোলজার নিয়ে উদ্বেগও জানাচ্ছেন তারা। দ্য নিউ ইয়র্কপোস্ট, দ্য সান।

২০২০ সাল করোনা মহামারীর হলেও যুদ্ধ-সংঘাতও কম হয়নি বিশ্বে। আর এসব যুদ্ধে নতুন নতুন প্রযুক্তির ব্যবহারও ছিল চোখে পড়ার মতো। যেমন সর্বশেষ নাগারনো-কারাবাখ যুদ্ধে আনকোরা মডেলের সব ড্রোন ব্যবহার করেছে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া।

আগামী দিনে আরও ভয়ংকর সব অস্ত্রশস্ত্র দেখা যাবে বলেই মনে হচ্ছে। দক্ষিণ চীন সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সামরিক উত্তেজনার মধ্যে সম্প্রতি সুপার সোলজার’ বানানোর ঘোষণা দেয় চীন। এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে সে পথেই হাঁটার ঘোষণা দিয়েছে ফ্রান্সও।

দেশ দুটি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ব্যবহার করে সৈন্যদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে। বিশেষ প্রজাতির এই সেনাদের তৈরি করা হবে কেবল খুন করার জন্য। গত সপ্তাহে এমন সেনা তৈরির অনুমোদন দিয়েছে ফরাসি সরকার।

অনেকে আশঙ্কা করছেন, ভবিষ্যতে সব দেশেই এরকম কৃত্রিম উপায়ে শক্তি বর্ধিত করে সেনা তৈরি করা হতে পারে। খবরে বলা হয়, ফ্রান্স ‘বায়ো ইঞ্জিনিয়ারিং’ বা জৈব প্রকৌশল পদ্ধতিতে সেনাদের ‘শারীরিক, মানসিক, জ্ঞান ও অনুভব করার ক্ষমতা’ বৃদ্ধি করতে চাইছে। এসব সেনার অবস্থান সম্পর্কে সব সময় নিশ্চিত থাকতে তাদের শরীরে থাকতে পারে ‘লোকেশন ট্র্যাকিং’ প্রযুক্তি।

তাদের সঙ্গে থাকতে পারে বিশেষ অস্ত্র। ফরাসি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এসব সেনা তৈরিতে বিভিন্ন ওষুধ তৈরি করেছে যেগুলো সেনাদের দীর্ঘক্ষণ সজাগ থাকতে বা লড়াই করতে সহায়ক হবে।

এমনকি তাদের শ্রবণশক্তি বাড়াতে সার্জারিও করা হতে পারে। নতুন প্রজাতির এ বিশেষ সেনাদের ডাকা হচ্ছে ‘হোমো রোবোকোপস’।

ভারত মহাসাগরে ঝাঁকে ঝাঁকে চীনের আন্ডারওয়াটার ড্রোন : ভারত মহাসাগরে ঝাঁকে ঝাঁকে ঘুরে বেড়াচ্ছে চীনের আন্ডারওয়াটার তথা পানির নিচে চলার বিশেষ ড্রোন। গুপ্তচরবৃত্তি চালানোর লক্ষ্যে মোতায়েন ড্রোনগুলোর নাম সি উইং গ্লাইডার। চীনা ভাষায় তাদের নাম হাইয়ি।

প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক এইচআই সুটনের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে এএনআই। প্রতিবেদন মতে, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের মাঝামাঝি ড্রোনগুলো পাঠানো হয়। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে সেগুলো ৩৪০০ বার গোপন তথ্য সংগ্রহ করেছিল।

হাই সুট্টন লিখেছেন, একসময় মার্কিন নৌবাহিনী ভারত মহাসাগরে ওই ধরনের ড্রোন পাঠিয়েছিল। ২০১৬ সালে চীন আমেরিকার একটি ড্রোনকে ধ্বংস করে দেয়। তাদের বক্তব্য ছিল, ড্রোনগুলো জাহাজ চলাচলে বাধা সৃষ্টি করছে। কিন্তু তারপরে চীন নিজেই ওই ধরনের ড্রোন পাঠিয়েছে।

একইসঙ্গে দক্ষিণ মেরুতেও ড্রোন পাঠিয়েছে চীন। ফোর্বস ম্যাগাজিনে জানানো হয়েছে, চীনের সামরিক নথিপত্রে বলা হয়েছিল, গত বছর ডিসেম্বরে ভারত মহাসাগরে ১৪ টি ড্রোন পাঠানো হবে। পরবর্তী সময় দেখা যায় ১২টি পাঠানো হয়েছে।