রূপদিয়া অঞ্চলে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে

যশোর সদরের রূপদিয়া অঞ্চলের কৃষকরা বিরুপ আবহাওয়া (গরম-শীত) ও হিমেল হাওয়া উপেক্ষা করে এখন বোরো ধান রোপণ করতে ব্যস্ত সময় পার করছে।

সদরের নরেন্দ্রপুর ইউনিয়নের রূপদিয়া, হাটবিলা, জিরাট, শাখাঁরীগাতী, বলরামপুর, গোপালপুর, ঘোড়াগাছা ও কচুয়া ইউনিয়নের, মথুরাপুর, মুনসেফপুর, মালিডাঙ্গা, দিয়াপাড়া, ঘুনি, পদ্মবিলা, সহ এতদাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকার মাঠ জুড়ে এখন বোরো চাষ কাজের ব্যাপক তোড়জোড় চলছে। ভোরের আলো ফোটার আগেই কোমর বেঁধে ফসলের মাঠ প্রস্তুতের কাজে নেমে পড়ছে অঞ্চলের বোরো চাষিরা। শীতের সকালে বীজতলায় বোনা ধানের চারা পরিচর্যার পাশাপাশি চারা রোপনের জমি প্রস্তুত করার কাজ চলছে পুরোদমে।

নদীর পাড়ে, খালের ধারে, রাস্তার পাশের জমিতে, বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠে ধানের কচি চারার সবুজ গালিচা। কোথাও গভীর নলকূপ থেকে চলছে জলসেচ কোথাও দেখা যাচ্ছে ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার, গরু নাঙ্গল প্রভৃতি দিয়ে চলছে জমি চাষ সহ চারা রোপণের উপযুক্ত করে তোলার শেষ কাজ। অনেকের আবার জমি প্রস্তুত শেষে বোরো ধান রোপণের জন্য বীজতলা থেকে তোলা হচ্ছে ধানের চারা। সদর উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকার মাঠজুড়ে কোথাও কোথাও ইতোমধ্য বোরো আবাদের জন্য কৃষকরা জমি তৈরি করে ধানের চারা রোপণও শেষ করেছে।

সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুর ইউনিয়নের জিরাট গ্রামের কৃষক মুন্সী ফারুক হোসেন জানান, প্রায় ৩ একর জমিতে এবার বোরো আবাদ করেছেন তিনি। এজন্য ২ কাঠা জমিতে বীজতলা তৈরি করেছিলেন। ইতোমধ্যে তিনি পুরো জমি রোপনও সম্পন্ন করে ফেলেছেন। গত মওসুমে ভালো ফলন হওয়ায় এবারো বোরো চাষে উৎসাহ পেয়েছেন।

একই ইউনিয়নের হাটবিলা গ্রামের কৃষক জামাল গাজী জানান, প্রায় ৫ একর জমিতে এবার বোরো আবাদ করবেন তিনি। আল্লাহ সহায় থাকলে কোন ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে না পড়লে এবং আবহাওয়া ভাল থাকলে আশানুরূপ ফসল হবে বলে ধারণা তার। অনেক স্থানের জমিতে এরই মধ্যে রোপনকৃত ধানের চারা বেশ বেড়েও উঠছে। ধান ক্ষেতের পাশে গেলে মন জুড়িয়ে যায়।

আর এখনো বেশির ভাগ জমিতে চলছে চারা রোপনের প্রস্তুতি। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কৃষকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন এ কাজে। দ্রুত সময়ের মধ্য ক্ষেত প্রস্তুতিকরণ কাজ সারতে জমির আইলে বসেই দুপুরের খাবার সেরে নিচ্ছেন কৃষকরা। শীত ও হিমেল হাওয়া উপেক্ষা করে বীজতলা থেকে চারা তুলে রোপন করছেন জমিতে।বিগত আমন মৌসুমে ধানের ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় বোরো মৌসুমে ধান চাষের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে যশোর সদর সহ বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষকদের। এই অঞ্চলে আবহাওয়া ও রোগ বালাই কম হওয়ায় প্রতিবছর ধানের উৎপাদন ভালো হচ্ছে।

যশোর সদর উপজেলা কৃষি উপ-সহকারী প্রতিমা রানী জানান, আবহাওয়া ও পরিবেশ অনুকূলে থাকলে এবারও বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।