মোবাইল ইন্টারনেটের গতিতে বিশ্বে সবচেয়ে বাজে অবস্থানের পঞ্চমে বাংলাদেশ

mobile lifestyle

মোবাইল ইন্টারনেট সার্ভিসের গতিতে বিশ্বে সবচেয়ে বাজে পারফরমেন্সের দিক দিয়ে বাংলাদেশ পঞ্চম। বৈশ্বিক মোবাইল, ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক বিষয়ক প্রতিষ্ঠান ওকলা প্রকাশিত সর্বশেষ রিপোর্টে এ কথা বলা হয়েছে।

এ প্রতিষ্ঠানটি মোবাইল ও ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক ইন্টেলিজেন্স, টেস্টিং অ্যাপ্লিকেশন্স এবং প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করে। ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসের জন্য প্রণীত তাদের ‘স্পিডেস্ট গ্লোবাল ইনডেক্সে’ বলেছে, মোবাইল গতির দিক দিয়ে ১৩৯টি দেশের ওপর তারা বাংলাদেশকে ১৩৫ নম্বরে দেখতে পেয়েছে।

এখানে উল্লেখ্য, আফগানিস্তান বাদে দক্ষিণ এশিয়ার অন্য কোনো দেশেই বাংলাদেশের মতো দুর্বল গতির মোবাইল ইন্টারনেট নেই। অর্থাৎ আফগানিস্তান বাদে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে দুর্বল গতির মোবাইল ইন্টারনেট বাংলাদেশে। বাংলাদেশের চেয়ে কম মোবাইল ইন্টারনেটের যেসব দেশ রয়েছে তারা হলো আফগানিস্তান, সুদান, ফিলিস্তিন এবং ভেনিজুয়েলা। পক্ষান্তরে বাংলাদেশে যে গতির মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করেন ব্যবহারকারীরা তার চেয়ে দ্বিগুন গতি ব্যবহার করেন পাকিস্তান ও নেপালের ব্যবহারকারীরা।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক কমিশন (বিটিআরসি) মোবাইল ইন্টারনেট অপারেটরদের গতি বাড়ানো বা গুণগত মান উন্নয়নের জন্য চাপ দিয়ে যাচ্ছে। তা সত্ত্বেও মোবাইল ইন্টারনেটের গতি দুর্বল অবস্থায় রয়েছে। এ অবস্থায় সরকার বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় ৫জি টেলিকম সার্ভিস চালু করতে যাচ্ছে এবং তা থেকে সুবিধা পেতে চায়।

বিশ্ব যখন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের দিকে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে তখন এর জন্য বড় একটি ফ্যাক্টর হয়ে উঠেছে ইন্টারনেটের গতি। সর্বশেষ ওই রিপোর্টে দেখা গেছে, দেশে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীরা ইন্টারনেটের স্পিড পাচ্ছেন ১০.৬৪ এমবিপিএস। পক্ষান্তরে কাতারে এই স্পিড ১৭৮.০১ এমবিপিএস। তাদের এই গতি ওকলা’র স্পিডটেস্ট গ্লোবাল ইনডেক্সে কাতারকে শীর্ষে রেখেছে। সেখানে মোবাইলে ইন্টারনেট ডাউনলোড স্পিড ৪৭.২০ এমবিপিএস। আপলোড স্পিড ১২.৬৭ এমবিপিএস। পক্ষান্তরে বাংলাদেশে মোবাইল নেটওয়ার্কে ইন্টারনেটে আপলোডের স্পিড হলো ৭.২৫ এমবিপিএস। এক্ষেত্রে বৈশ্বিক গড় ১২.৬৭ এমবিপিএস।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশে মোবাইল ইন্টারনেটের ডাউনলোড স্পিড ছিল ১০.৮ এমবিপিএস এবং আপলোড স্পিড ছিল ৭.৭৬ এমবিপিএস। দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত, পাকিস্তান ও নেপালে মোবাইলে ইন্টারনেট স্পিড যথাক্রমে ১২.৯১ এমবিপিএস, ১৮.৪২ এমবিপিএস এবং ১৮.৪২ এমবিপিএস।

অন্যদিকে, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের গতির দিক দিয়ে ১৭৬টি দেশের মধ্যে ওকলা বাংলাদেশকে রেখেছে ৯৭তম স্থানে। এক্ষেত্রে ডাউনলোড ও আপলোড স্পিড যথাক্রমে ৩২.৯৪ এমবিপিএস এবং ৩৩.১৮ এমবিপিএস। এক্ষেত্রে বৈশ্বিক হার যথাক্রমে ৯৬.৪৩ এমবিপিএস এবং ৫২.৩১ এমবিপিএস।

নেটওয়ার্কের দুর্বল পারফরমেন্টের কথা স্বীকার করে বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার জানুয়ারিতে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, অপারেটরদের স্পেকট্রামের পরিমাণ ব্যবহারের কারণে নেটওয়ার্কের মান দুর্বল। তিনি আরো বলেন, প্রতি ১০ লাখ কাস্টমারকে সেবা দিতে টেলিকম অপারেটররা ব্যবহার করছেন ০.৮২ মেগাহার্টজ স্পেকট্রাম। এক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়ার অপারেটররা একই সংখ্যক ব্যবহারকারীর জন্য ব্যবহার করছেন ১২.৩ মেগাওয়ার্টজ স্পেকট্রাম।