মোদির ‘আত্মনির্ভর ভারতের’ পরীক্ষা বাংলাদেশে

hasina modi

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আগামী সপ্তাহে বাংলাদেশ সফর আসছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। করোনাভাইরাস মহামারি শুরু হওয়ার পর প্রথমবারের মতো বিদেশ সফর করছেন তিনি।

তার এই সফর নিয়ে ভারতীয় অর্থনীতিবিদ বিপুল চ্যাটার্জির বিশেষ কলাম প্রকাশ করেছে দি ইকোনোমিক টাইমস ইন্ডিয়া।

বিশেষ কলামে বিপুল চ্যাটার্জি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‌‘আত্মনির্ভর ভারত’ চিন্তাভাবনার অন্যতম এক পরীক্ষা বাংলাদেশ। যদিও ভারত আত্মনির্ভরশীলতার পথে এখনও অনেক পিছিয়ে রয়েছে। তারপরও ‘জিরো ডিফেক্ট, জিরো ইফেক্ট’ নীতি নিয়ে বিশ্বের কাছে সেবা এবং পণ্য পৌঁছে দিচ্ছে ভারত। ভারতের এই উদ্যোগ থেকে ক্রমবর্ধমান ক্রয় সক্ষমতাসহ অতিরিক্ত অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা যথাযথভাবে পেতে পারে বাংলাদেশ।

দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশ এমন এক প্রতিবেশী; যাকে নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দর্শন হলো ‘সবার সঙ্গে, সবার বিকাশ, সবার বিশ্বাস।’ নরেন্দ্র মোদির এই দর্শনের পরীক্ষাক্ষেত্র বাংলাদেশ। তার এই চিন্তা একটি কারণে বিশেষ; সেটি হলো— এর উদ্ভব হয়েছে ভারতের বহু প্রাচীন দর্শন থেকে; যা বর্তমানে মানবকেন্দ্রিক বিশ্বায়নের অন্যতম একটি ধাপ।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০তম বার্ষিকী এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর শুভক্ষণে সোনার বাংলা গড়ার সম্মিলিত প্রচেষ্টা আরও গতিশীল হোক। যদিও আমরা রাজনৈতিক সীমানায় পৃথক পৃথক প্রজাতন্ত্র থাকব; তারপরও আসুন আমরা বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং জ্ঞানের সহযোগিতায় সংযুক্ত নতুন ধরনের কনফেডারেশন সন্ধান করি।

এই সফরের মাধ্যমে প্রতিবেশী দুই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অবকাঠামো এবং অন্যান্য সংযোগ উদ্যোগ আরও জোরদার হতে পারে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। দ্বিপক্ষীয় সংযোগ এবং এ সংশ্লিষ্ট খাতে বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের প্রত্যাশাও করা হচ্ছে; দুই দেশের সম্পর্ককে পরবর্তী স্তরে নিয়ে যাওয়ার জন্য এসব পদক্ষেপকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা যেতে পারে।

ভৌগোলিক গুরুত্বের বিষয়টি কলামে আরও উল্লেখ করা হয়, ভারতের ইন্দো-প্যাসিফিক নির্মাণে বাংলাদেশের অবস্থান একটি প্রজাপতির মতো। এই প্রজাপতির মূল দেহ বাংলাদেশ; যার পাখা ছড়িয়ে আছে একপাশে রাশিয়া এবং মরিশাসের বিশাল ভৌগোলিক অঞ্চলজুড়ে এবং অন্য পাশে জাপান এবং অস্ট্রেলিয়া। এর ফলে বাংলাদেশ মুক্ত, উন্মুক্ত, সুরক্ষিত এবং সমৃদ্ধ ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার পাশাপাশি বৃহৎ অর্থনীতির প্রতিবেশী দেশ (ভারত) থেকেও সুবিধা পেতে পারে।

বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন করেছে। যে কারণে ভূ-অর্থনৈতিক ও ভূ-কৌশলগত অবস্থানের দিক থেকে উদীয়মান ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখবে দেশটি।