ভয়াবহ বন্যার কবলে সিডনি

টানা বর্ষণের কারণে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস ও সিডনিতে। সেখানকার হাজারো বাসিন্দাকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে বন্যায় বেশ কয়েকটি বাড়ি ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছে এবং সিডনির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে এটি মারাত্মক রূপ নিয়েছে।

কর্তৃপক্ষ নিউ সাউথ ওয়েলস (এনএসডব্লিউ) রাজ্যের প্রায় ১২টি অঞ্চলে বন্যার ঝুঁকি ও বাসিন্দাদের সরিয়ে নেয়ার জন্য সতর্কতা জারি করেছে। এই অঞ্চলের মধ্যে রয়েছে রাজধানী সিডনিও। খবর আল জাজিরার।

এনএসডব্লিউ রাজ্য জরুরি পরিষেবার সহকারী কমিশনার ডিন স্টোরি রবিবার বলেন, এসব অঞ্চলের বাসিন্দাদের দ্রুত নিরাপদ স্থানে চলে যেতে হবে। এটি অত্যন্ত গুরুতর পরিস্থিতি। সবাইকে ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি নেয়া প্রয়োজন।

এর আগে শনিবার বিকেলে নিপান ও হকসবারি বাঁধে জলের স্তর বেড়ে যাওয়ায় বাসিন্দাদের মধ্যে খাওয়ার পানি সরবরাহ করে। এনএসডব্লিউ এর প্রধান গ্লাডিস বেরেজিক্লিয়ান এই অবস্থাকে একশ বছরের মধ্যে অন্যতম হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, তবুও আমরা মনে করি না যে উত্তর উপকূলের পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। তবে খারাপ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকবে।

তিনি জানান, অবস্থা এমন থাকলে আরও চার হাজার লোককে বাড়ি ছেড়ে নিরাপদে আশ্রয়ে যেতে বলা হতে পারে।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, রবিবারও সিডনিসহ রাজ্যজুড়ে ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকবে। কিছু কিছু জায়গায় ২০০ মিলিমিটার (৭.৯ ইঞ্চি) পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

জরুরি সেবা সংস্থা জানিয়েছে যে, তারা গত রাতে ছয় শতাধিক কল পেয়েছে। তার মধ্যে ৬০ জনেরও বেশি বন্যা থেকে তাদেরকে উদ্ধারের আবেদন জানান।

টেলিভিশন ও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যে, বন্যার তোড়ে বাড়ি ভেসে যাচ্ছে। রাস্তাঘাট পানির নিচে চলে গিয়েছে। গাছপালা উপড়ে পড়েছে এবং রাস্তার অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন শনিবার বন্যা পরিস্থিতিকে ‘হৃদয়বিদারক দৃশ্য’ উল্লেখ করে দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং জরুরিক্ষেত্রে সেনাদের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।

চরম আবহাওয়া ও বন্যার কারণে রাজ্যজুড়ে করোনাভাইরাসের টিকাদান বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ছয় মিলিয়ন লোককে টিকা দেয়ার যে পরিকল্পনা অস্ট্রেলিয়া হাতে নিয়েছে এমন আবহাওয়া তা ব্যাহত করছে।