চাঁপাইনবাবগঞ্জে ‘বিশেষ লকডাউন’ এক সপ্তাহ বাড়ল

চাঁপাইনবাবগঞ্জে সাম্প্রতিক সময়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মারাত্মক বেড়ে যাওয়া ও করোনার ভারতীয় ধরন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় জারি করা বিশেষ লকডাউনের মেয়াদ আরো সাত দিন বাড়ানো হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসকের (ডিসি) সম্মেলন কক্ষে আজ সোমবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিসি মঞ্জুরুল হাফিজ এ ঘোষণা দেন।

রবিবার চাঁপাইনবাবগঞ্জে আরো ৪৫ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর আগে শনিবার ১৮৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হন ১০৭ জন। জেলায় যে কয়েকজনের মধ্যে করোনার ভারতীয় ধরন শনাক্ত করা হয়েছে, তাদের বাড়িতে লাল পতাকা টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর আগে গত ২৫ মে থেকে এক সপ্তাহের জন্য ‘বিশেষ লকডাউন’ শুরু হয়েছিল। আজ এই লকডাউনের শেষ হওয়ার কথা ছিল।

সংবাদ সম্মেলনে ডিসি মঞ্জুরুল হাফিজ জানান, গত সাত দিনের কঠোর লকডাউনের কারণে চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনা সংক্রমণের হার নিম্নমুখী হয়েছে। কিন্তু সংক্রমণের হার নিম্নগামী হলেও তা কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে নেমে আসেনি। এমন অবস্থায় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে আগের লকডাউনের ১১ দফা নির্দেশনা বহাল রেখে আবারও সাত দিনের বিশেষ লকডাউন ঘোষণা করা হলো। তবে, আগের নির্দেশনার মধ্যে শুধু আম কেনাবেচার জন্য অন্য জেলা থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে আম ব্যবসায়ীদের আসতে পারার সুযোগ সংযুক্ত করা হয়েছে।

এ সময় জরুরি প্রয়োজনে চলাচলকারী সকলকে মাস্ক পরিধান করতে হবে। শিল্প-কারখানায় স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালু থাকবে। তবে শ্রমিকদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নিজস্ব পরিবহনে আনা-নেওয়ার ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে। আইন-শৃঙ্খলা ও জরুরি পরিষেবা যেমন কৃষি উপকরণ সার বীজ কীটনাশক কৃষি যন্ত্রপাতি ইত্যাদি খাদ্যশস্য ও খাদ্য দ্রব্য পরিবহন, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা প্রদান বিদ্যুৎ, পানি, ফায়ার সার্ভিস, স্থলবন্দরের কার্যক্রম টেলিফোন, ইন্টারনেট, সরকারি-বেসরকারি গণমাধ্যমকর্মীদের সরকারি নিরাপত্তা ব্যবস্থা ডাকসেবাসহ অন্যান্য অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসসমূহ তাদের কর্মচারী ও যানবাহন এ নিষেধাজ্ঞা আওতাবহির্ভূত থাকবে।

অতি জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত ওষুধও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য বিক্রয় চিকিৎসাসেবার মৃতদেহ সৎকার ইত্যাদি কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না। তবে টিকা কার্ড প্রদান সাপেক্ষে টিকা গ্রহণের জন্য যাতায়াত করা যাবে। খাবারের দোকান ও হোটেল-রেস্তোরাঁয় কেবল খাদ্য বিক্রয়-সরবরাহ করা যাবে। স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে জুমার নামাজসহ প্রতি ওয়াক্তে নামাজ এর সর্বোচ্চ ২০ জন মুসল্লি অংশগ্রহণ করতে পারবে। অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয় সমসংখ্যক ব্যক্তি উপাসনা করতে পারবে।

এর আগে ১১ দফা নির্দেশনা দিয়ে জেলা জুড়ে ২৪ মে রাত এক সপ্তাহের জন্য লকডাউন ঘোষনা করে জেলা প্রশাসন।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার এ এইচ এম আবদুর রকিব, সিভিল সার্জন ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরীসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

এ ছাড়া লকডাউনে জেলার প্রধান প্রধান মার্কেট বন্ধ রয়েছে। তবে, খোলা থাকছে কাঁচাবাজার, ফার্মেসিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান।