বাজেট: দরিদ্রদের সহায়তায় সরকার কিছুই করছে না বললেন ফখরুল

mirza fokrul
ফাইল ছবি

আসন্ন বাজেটে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সহায়তায় সরকার কিছুই করছে না বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট পেশের আগের দিন বুধবার দুপুরে এক আলোচনাসভায় তিনি এ অভিযোগ করেন। পুরান ঢাকার জজকোর্টে ঢাকা আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪০তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলোচনাসভায় আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের ঢাকা বার ইউনিট।

মির্জা ফখরুল বলেন, করোনার এ দুঃসময়ে অর্থনীতিকে সচল রাখতে হলে যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি দরকার তা হলো- ‘দিন আনে দিন খায়’ মানুষের জন্য সহায়তা। পত্র-পত্রিকায় বেরিয়েছে, করোনা মহামারির ফলে দারিদ্র্যসীমার নিচে এসেছে আড়াই কোটি মানুষ। আগের দরিদ্র তিন কোটি। তার মানে প্রায় ৬ কোটি মানুষ এখন দারিদ্র্যসীমার নিচে। এ মানুষগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে, অর্থনীতিকে সচল রাখতে হলে অবশ্যই এ মানুষগুলোর ক্রয়ক্ষমতা বাড়াতে হবে। তাদের কাছে টাকা পাঠাতে হবে। কিন্তু সরকার সেটা করছে না। এখনও তারা তেলে মাথায় তেল দিচ্ছে। অর্থাৎ যাদের শিল্প কলকারখানা আছে তাদের আবারও প্রণোদনা দিচ্ছে। এই যে দিন আনে দিন খায় মানুষ তাদের কিছুই দিচ্ছে না।

তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার (আজ) বাজেট দিতে যাচ্ছে সরকার। আ হ ম মুস্তফা কামাল সাহেব (অর্থমন্ত্রী) একটি পত্রিকায় ইন্টারভিউতে বলেছেন, ‘সব ধরনের মানুষকে মাথায় রেখে বাজেট করছেন। মুস্তফা কামাল সাহেব ব্যবসায়ী মানুষ, তিনি ব্যবসাটা ভালো বোঝেন। অর্থনীতি কতটুকু বোঝেন তার নিদর্শন আমরা খুঁজে পাইনি।’ বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকার যে প্রণোদনা দিয়েছে তা কিসের? মানুষকে তারা বোকা বানিয়েছে। ব্যাংক থেকে লোন নিতে হবে সবাইকে। ব্যাংক থেকে লোন নিলে সরকারের কী দরকার? ব্যাংক থেকে নেবে। এটা প্রণোদনা হলো কিভাবে? এটা প্রণোদনা নয়। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ব্যাংকে শোধ করতে হবে। প্রণোদনা তাকেই বলে সরকার দুঃসময়ে যে আর্থিক সাহায্যটা করছে সেটা ফেরত নেবে না। সেই প্রণোদনার টাকা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি কাজে লাগাবেন।’ মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা প্রস্তাবনায় বলেছিলাম, দিন আনে দিন খায় মানুষগুলো ১৫ হাজার টাকা করে ৩ মাস অনুদান দিতে হবে। কিন্তু সেটা করা হয়নি। কয়েকদিন আগে পত্রিকায় উঠেছে গাইবান্ধার একজন কৃষক সবজি চাষ করে বলেছেন যে, ভাই বিক্রি হচ্ছে না। কারণ ট্রাক যায় না, ট্রাক আসে না- সরকারের কোনো ব্যবস্থা নেই। এর চেয়ে আমাদের মেরে ফেললে ভালো হতো। তাহলে কাকে প্রণোদনা দিচ্ছে? যারা লুট করছে, দেশের অর্থনীতিকে একেবারে শূন্য পর্যায় নিয়ে গেছে তাদের। মনগড়া প্রবৃদ্ধি হার দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, বড় বড় দালাল তৈরি করছেন আর বলছেন উন্নয়ন। আর মনগড়া প্রবৃদ্ধির হার দিয়ে বলছেন যে উন্নয়ন। আসলে এটা উন্নয়ন নয়।

উন্নয়ন হচ্ছে- জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নত করা; যেখানে তারা যেন ভালো খেতে পারেন, বাচ্চাদের লেখাপড়া করাতে পারেন, স্বাস্থ্যসেবা পেতে পারেন। বর্তমান সরকার এমন উন্নয়ন করেছেন যে, হাসপাতালে বেড নেই। একটা হাসপাতাল বানিয়েছেন কোভিডের সময়ে- তা রাতের মধ্যে উধাও হয়ে গেল, হাসপাতাল নেই। বার ইউনিটের সভাপতি অ্যাডভোকেট মাসুম আহমেদ তালুকদারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক ফারুকীর সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন- জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোন্দকার হযরত আলী, আইনজীবী সমিতির সাবেক নেতা আজিজুল ইসলাম খান বাচ্চু, মহসিন মিয়া, খোরশেদ আলম, হোসেন আলী খান হাসান, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া প্রমুখ। পরে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়।