যশোরে কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের উপপরিচালককের বিরূদ্ধে হিস্যা নেয়ার অভিযোগ

যশোর জেলা কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের উপপরিচালককের বিরুদ্ধে ২২৫ জন সেচ্ছাসেবী এআই টেকনিশিয়ানদের কাছ থেকে সম্মানীর টাকা ছাড় করাতে মাথাপিছু ৩শ’ টাকা করে হিস্যা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।

তবে অভিযোগকে অস্বীকার করে রেভিন্যু স্ট্যাম্প বাবদ ৩০ টাকা নেয়ার কথা জানিয়েছেন অভিযুক্ত উপ-পরিচালক। উল্টো টেকনিশিয়ানদের বিরুদ্ধে তাকে জিম্মি করে অবৈধ সুযোগ আদায়ের অভিযোগ তোলেন তিনি। তবে এ ব্যাপারে দৃশ্যত কোন পদক্ষেপ নেয়নি কর্তৃপক্ষ।

যশোর জেলা কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের তথ্যানুযায়ী, দেশের তৃণমূল পর্যায়ে মানুষকে স্বাবলম্বী ও আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য উন্নত জাতের গরু উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃত্রিম প্রজনন কার্যক্রম হাতে নেয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। এর অংশ হিসেবে যশোর, মাগুরা, ঝিনাইদহ ও নড়াইল জেলায় বিভিন্ন সময়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে ২২৫ জন এআই টেকনিশিয়ানকে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।

তারমধ্যে যশোরে ১০৭ জন, ঝিনাইদহে ৫২ জন, নড়াইলে ৩৩ জন, মাগুরায় ৩৩ জন এবং যশোর সদর উপজেলায় ২০ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়। সূত্রটি জানিয়েছে, প্রানীসম্পদ অধিদপ্তরের টার্গেট অনুযায়ী মাঠ পর্যায়ে ঘুরে প্রজনন কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকেন ওই ২২৫ জন স্বেচ্ছাসেবী।

যাদেরকে অধিদপ্তরের কৃত্রিম প্রজনন ও ভ্রুণ স্থানান্তর প্রকল্পের আওতায় সম্মানী দেয়া হয়। বিগত বছরগুলোতে প্রতি মাসে তারা মাত্র ৫শ’ টাকা করে সম্মানী পেতেন। তবে ২০২১ সালের জানুয়ারি মাস থেকে তাদের সম্মানী বৃদ্ধি করে ২ হাজার টাকা করা হয়।

একাধিক ভুক্তভোগী জানান, গত ঈদুল আজহার আগে ওই ২২৫ জন টেকিনিশিয়ানের ৫শ’ টাকা করে ৮ মাসের এবং ২ হাজার টাকা করে ৩ মাসের সম্মানী ছাড় করা হয়। ১১ হাজার টাকার সম্মানী সিটে তাদের স্বাক্ষরও নেয়া হয়েছে। তবে তাদেরকে দেয়া হয়েছে ১০ হাজার ৭শ’ টাকা।

এক্ষেত্রে প্রয়োজনের কথা বলে মাথাপিছু ৩শ’ টাকা করে কেটে নেয়া হয়েছে বলে স্বেচ্ছাসেবীরা অভিযোগ করেছেন। সে হিসেবে স্বেচ্ছাসেবীদের সম্মানী থেকে মোট ৬৭ হাজার ৫শ’ টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে।

ভুক্তভোগীরা আরোও জানান, টেকনিশিয়ানরা যখন তরল ও হিমায়িত সিমেন এবং গ্লোবস এআই টিউব তুলতে যান, সেসময়ও তাদেরকে গুণতে হয় টাকা। লোকভেদে ২শ’ ৩শ’ টাকা আদায় করেন হিসাব রক্ষক আমজাদ হোসেন। পরিবহন ও শ্রমিক খরচের দোহাই দিয়ে আদায় করা হয় এ টাকা।

অথচ এ ব্যাপারে খরচের আলাদা বিল ভাউচার করে থাকে কর্তৃপক্ষ। এসব বিষয় নিয়ে আলাপকালে যশোর জেলা কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের উপপরিচালক ডা. ডাক্তার স্বপন কুমার রায় অভিযোগগুলোকে মিথ্যা বলে দাবি করেছেন। ডা. ডাক্তার স্বপন কুমার রায় বলেন, ৩শ’ টাকা নয়, রেভিন্যু স্ট্যাম্প কিনতে স্বেচ্ছাসেবীদের কাছ থেকে মাত্র ৩০ টাকা নেয়া হয়েছে।

তরল ও হিমায়িত সিমেন এবং গ্লোবস এআই টিউব তুলতে কোন টাকাই নেয়া হয়না। কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের উপপরিচালক জানান, তরল ও হিমায়িত সিমেন এবং গ্লোবস এআই টিউব তুলতে যশোরের স্বেচ্ছাসেবীরা তাকে প্রায়ই চাপ প্রয়োগ করতো।

যোগদানের পর থেকে তিনি স্বেচ্ছাসেবীদের এ অন্যায় আব্দারকে মেনে নেননি। এছাড়াও স্বেচ্ছাসেবীরা কাজকর্মে ঢিলে ভাব দেখাচ্ছিলো। সেগুলোও কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছিলো। এতে কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবী ক্ষিপ্ত হয়ে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু করে। তারই ধারাবাহিকতায় তারা এসব অভিযোগ তুলছে।