পদ্মা সেতুতে নয়, আমাদেরই আঘাত করা হচ্ছে: নৌ-প্রতিমন্ত্রী

পদ্মা সেতুতে আঘাত নয়, আঘাত আমাদেরকেই করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

মঙ্গলবার পদ্মা সেতুর স্প্যানে ফেরি বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীরের ধাক্কা লাগার ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি এ কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, এত সকালবেলা এই ঘটনা আমরা দেখলাম, জাহাজ গেল, আবার ওখানে গিয়ে কোনো চিহ্ন পাওয়া যাচ্ছে না। আবার ভিডিওতে দেখছি (মাস্তুল) বাড়ি খেয়ে পড়ে গেল।

বলা হচ্ছে ওটা লোহার, লোহার হলে তো পড়ে যাবে না, বেঁকে যাবে এবং ঘষা খাবে। কিন্তু ঘষার কোনো চিহ্ন নেই। এই সংবাদগুলো কেন আসছে, এটারও তদন্ত হওয়া দরকার।

তিনি বলেন, আমার কাছে মনে হচ্ছে, আজকের ঘটনায় মধ্যে আমি গভীর ষড়যন্ত্র খুঁজে পাচ্ছি। এটার পেছনে কোনো আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে আমি বলেছি, সিনিয়র মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও আজকে নির্দেশনা দিয়েছেন। এটা গভীরভাবে তদন্ত করতে হবে এবং এটা অবশ্যই উদঘাটন করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, পদ্মা সেতুর যে নকশা করা হয়েছে, সেই নকশা অনুযায়ী যে উচ্চতা থাকার কথা। সেখানে কোনোভাবেই ওপরের স্প্যানে আঘাত লাগার কথা নয়।

আজকে এটা হয়েছে, কেন হয়েছে? আমরা বলেছি, এটার নিবিড় তদন্ত করতে হবে। এই ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত এই ঘটনার পেছনে অন্য কিছু উদ্দেশ্য আছে কি-না সেটা আমাদের ভাবিয়ে তুলছে।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, পদ্মা সেতু যেভাবে তৈরি করা হয়েছে এই ধরনের ধাক্কা দিয়ে সেতুর কোনো ক্ষতি হবে না, ক্ষতি হবে আমাদের মনের।

আজকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে বলছে, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় বিশ্বাস ঘাতকতার জায়গায় চলে গেছে। এটা কেন বলছে? এটা তাদের অনুভূতির জায়গায় চলে গেছে। এটাই হচ্ছে আমাদের বড় কষ্ট।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) সকালে মুন্সীগঞ্জের লৌহজং এলাকায় ২ ও ৩ নম্বর খুঁটির মাঝখানে ১-বি স্প্যানে এ ধাক্কা লাগে। এতে ফেরির মাস্তুল ভেঙে গেছে। তবে সেতুর কোনো ক্ষতি হয়নি।

এর আগে গত ১৩ আগস্ট মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাট থেকে আসছিল ফেরি কাকলি। সকাল ৮টার দিকে প্রবল স্রোতের কারণে ফেরিটি সেতুর ১০ নম্বর পিলারে আঘাত হানে। এতে তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। ৯ আগস্ট সন্ধ্যায় ১০ নম্বর পিলারে আঘাত হানে ফেরি বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর।

এ সময় ২০ যাত্রী আহত হন। ২৩ জুলাই সকাল ১০টার দিকে পদ্মা সেতুর ৭ নম্বর পিলারের সঙ্গে ধাক্কা খায় রো রো ফেরি শাহজালাল। এতে ২০ জন যাত্রী আহত হন। এসব ঘটনায় থানায় জিডি, তদন্ত কমিটি গঠন ও ফেরিচালকদের সাময়িক বরখাস্তও করা হয়েছে।

ঘটনা তদন্তে ওই দিনই চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বিআইডাব্লিউটিসি। তাদের দাখিল করা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পিলারের সঙ্গে সংঘর্ষের পেছনে রো রো ফেরিটির ইনচার্জ মাস্টার আব্দুর রহমান খান ও সুকানি সাইফুল ইসলামের দায়িত্বহীনতা রয়েছে। ফেরি বা অন্য কোনো জলযানের সংঘর্ষ থেকে নিরাপদে রাখতে পদ্মা সেতুর পিলারগুলো রাবার দিয়ে মোড়ানোর পরামর্শও দিয়েছে ওই কমিটি।