পাকিস্তানের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক নিয়ে ভারতের অনুরোধ

বিতর্কিত হিমালায় সীমান্ত মুখোমুখি অবস্থান করা দুদেশের সেনাবাহিনীকে সরিয়ে নিলেই কেবল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার হতে পারে বলে চীনকে জানিয়েছে ভারত।

বৃহ্স্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুসানবেতে এক আঞ্চলিক সম্মেলনের ফাঁকে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই-এর সঙ্গে আলোচনাকালে এমন মন্তব্য করেন ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর।

এক টুইটবার্তায় ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সীমান্ত এলাকা থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে যা অপরিহার্য। দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কোন্নয়নে এটি তাৎপর্যপূর্ণ বলে তিনি মন্তব্য করেন। এতে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে পাকিস্তানের চোখে না দেখতে চীনকে অনুরোধ করা হয়েছে।

কয়েক বছর ধরে পশ্চিমাঞ্চলীয় হিমালয় অঞ্চলে হাজার হাজার চীন ও ভারতীয় সেনা মুখোমুখি অবস্থান করছে। বিতর্কিত সীমান্ত নিয়ে কয়েক দশক ধরে চলা এই দ্বন্দ্ব সংঘাতেও রূপ নিয়েছিল।

গেল বছরের জুনে দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে হাতাহাতিতে দুপক্ষের প্রাণহানি ঘটেছিল। কয়েক দশকের মধ্যে তারা এই প্রথম সরাসরি সংঘাতে লিপ্ত হয়েছিলেন।

ইতিমধ্যে দুদেশের কমান্ডারদের মধ্যে কয়েক দফা আলোচনার পর সীমান্তের কয়েকটি অংশ থেকে নিজেদের বাহিনী সরিয়ে নিয়েছে তারা।

চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেন, আমরা সবসময়ই সীমান্ত কার্যক্রম ইতিবাচক মনোভাব ও যথাযথভাবে পরিচালনা করি। দুপক্ষেরই উচিত শান্তি বজায় রাখা এবং সংঘর্ষের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে, তা নিশ্চিত করা।

তিনি আরও বলেন, দুটি বড় উদীয়মান অর্থনীতি হিসেবে, চীন ও ভারতের উচিত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে স্বস্তি ও স্থিতিশীল জায়গায় নিয়ে যাওয়া।

১৯৬২ সালে সীমান্ত নিয়ে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল চীন ও ভারত। কিন্তু এই বিতর্কের অবসান এখন পর্যন্ত ঘটেনি। যদিও সম্প্রতি দুদেশের মধ্যকার বাণিজ্যিক সম্পর্কের বিকাশ ঘটছে।

ওয়াং ই-এর সঙ্গে সাম্প্রতিক বৈশ্বিক বিভিন্ন ঘটনাবলী নিয়ে আলোচনা করেন জয়শঙ্কর। কিন্তু এ নিয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি।

ভারতের চিরবৈরী পাকিস্তানের সঙ্গে চীনের ঘনিষ্ঠ সামরিক সম্পর্ক উত্তেজনার আরেকটি কারণ হলেও জয়শঙ্কর বলছেন, দ্বিপাক্ষিকভিত্তিতে ভারত-চীনের সম্পর্ক দেখা উচিত। এটাও অপরিহার্য যে, তৃতীয় কোনো দেশের লেন্স দিয়ে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে যেন বিবেচনা না করে চীন।

সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার সম্মেলনে দেখা হয়েছে দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর। এতে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিরও বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে।