ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে লার্ভা নয় অ্যাডাল্ট মশা নিধন করতে হবে বলে উল্লেখ করেছেন সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তাওহীদ উদ্দিন আহমেদ।
শনিবার ১৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সেন্টার ফর গভার্নেন্স স্টাডিজ আয়োজিত নগরীর মশা নিবারণে সমস্যা টেকসই সমাধানের একটি রূপরেখা শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
তাওহীদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, মশার লার্ভা তিন থেকে চার সপ্তাহ পর অ্যাডাল্ট মশা হবার পর মানুষকে কামড়াবে এবং রোগ ছড়াবে। কিন্তু ইতোমধ্যে যেসব মশা রোগ ছড়াচ্ছে তাদের মেরেই ডেঙ্গু কমাতে হবে।
কিন্তু যে পদ্ধতিতে অ্যাডাল্ট মশা মারা যায়, সিটি করপোরেশনের পক্ষে থেকে সেই পদ্ধতিতে জোড় দেওয়া হয়নি। লার্ভা মারার জন্য সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে পথে-ঘাটে প্রচার করা হচ্ছে।
বাসা-বাড়িতে লার্ভা পাওয়া গেলে জরিমানা করা হচ্ছে। তারা লার্ভা মারা জন্যই প্রচার করে যাচ্ছে। কিন্তু মারতে হবে অ্যাডাল্ট মশা।
তিনি বলেন, মশার লার্ভা নিধনে সিটি করপোরেশন যেভাবে কাজ করেছে, তাদের কাজ কার্যকর হয়নি, তাই ডেঙ্গু এখনও আছে।
বৃষ্টি কমতে শুরু করেছে, এক থেকে দুই সপ্তাহ পর বৃষ্টি আরও কমে গেলে ডেঙ্গুও কমে যাবে। তখন যদি সিটি করপোরেশন কৃতিত্ব নেয়, তাদের প্রচেষ্টায় ডেঙ্গু কমে গেছে, সেটা সত্য হবে না।
সেমিনারে বক্তারা এ বছর ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব না কমার কারণ হিসেবে বলেন, এ বছর যেমন আগে বৃষ্টি শুরু হয়েছে, তেমন আগে থেকেই এডিস মশা মারার কার্যক্রম শুরু করা উচিত ছিল, যা করা হয়নি।
জরিপ করে বেশি মশা আছে এমন জায়গা নির্ধারণ করে সেখানে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। রোগী আছে এমন হটস্পট বের করে সেখানে মশা মারার কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
সর্বোপরি ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের সময় অ্যাডাল্ট মশা মারার জন্য যে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল তা নেওয়া হয়নি। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে করণীয় প্রসঙ্গে সেমিনারে বলা হয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ডেঙ্গু রোগের সংক্রমণ বন্ধের জন্য প্রতি সপ্তাহে ফগিং, লার্ভিসাইডিং, সোর্স রিডাকশন কার্যক্রম অক্টোবরের শেষ পর্যন্ত চালানো দরকার।
ছাত্র-ছাত্রীদের ফুলহাতা পোশাক পরা। বাড়িতে সকাল-বিকেল অ্যারোসল প্রয়োগ, দিনে ও রাতে ঘুমানো বা বিশ্রামের সময় মশারি ব্যবহার করা।
বাড়ির আশেপাশের জমে থাকা অপ্রয়োজনীয় পানি বা পাত্র সপ্তাহান্তে ফেলে দেয়া। ডেঙ্গু উপদ্রুত এলাকা গুলোতে জরুরিভিত্তিতে নগর কর্তৃপক্ষের ইন্টেনসিভ ভেক্টর কন্ট্রোল কার্যক্রম চালু করা।
কিউলেক্স মশার প্রজনন হটস্পট চিহ্নিত করা। কিউলেক্স মশার মূল প্রজননস্থল প্রবাহমান করা। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সিজিএস’র চেয়ারম্যান এবং কীটতত্ত্ববিদ ড. মনজুর আহমেদ। সেমিনার পরিচালনা করেন সিজিএস’র নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান।