যশোরে এহসান গ্রুপের চেয়ারম্যানসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা

যশোরের ৩০জন আমানতকারীর কাছ থেকে প্রায় আড়াই কোটি টাকা (দুই কোটি ৪৫ লাখ ৩৬ হাজার) হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে এহসান গ্রুপের চেয়ারম্যানসহ ২৮ জনের নাম উল্লেখ করে কোতয়ালি থানায় মামলা হয়েছে।

উল্লেখিত আসামি ছাড়াও অজ্ঞাত আরো ৪০/৫০ জনের কথা উল্লেখ করে ১৯ সেপ্টেম্বর রোববার মামলাটি করেন যশোর শহরের পশ্চিম বারান্দিপাড়া কদমতলা এলাকার রবিউল হোসেনের ছেলে মফিজুল ইসলাম ইমন (৪৪)। আসামিরা হলো এহসান গ্রুপের চেয়ারম্যান মুফতি আবু তাহের নদভী (৫৭), প্রধান নির্বাহী ব্যবস্থাপক কাজী রবিউল ইসলাম (৬০), জিএম জুনায়েদ আলী (৫০),

পরিচালক আজিজুর রহমান (৬০), মঈন উদ্দিন (৪৮), মুফতি গোলাম রহমান (৬৫), আব্দুল মতিন (৬০), পরিচালক (প্রশাসন) আমিনুল হক, কলিমুল্লাহ কলি (৪৫), মিজানুর রহমান (৫০), মুফতি ইউনুস আহমেদ (৫২), মনিরুল ইসলাম (৫২), আইয়ুব আলী (৫২), শাসুজ্জামান টিটো (৪০), যশোর শাখার ম্যানেজার আতাউল্লাহ (৪২), আব্দুল হালিম (৬০),

সংস্থান মাঠকর্মী সিরাজুল ইসলাম সোনা মিয়া (৫৩), সংস্থার এফও কমিটির সভাপতি শামছুর রহমান (৫৫), সেক্রেটারি বাবর আলী (৫০). সংস্থার এফ ও কমিটির প্রচার সম্পাদক আব্দুল হক (৫৫), সংস্থার এফও কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম সেলিমউল আজম চৌধুরী (৫২),

অর্থ সম্পাদক মোকসেদ আলী (৫০), এফও কমিটির সাবেক সেক্রেটারি মুফতী ফুরকান আহমেদ (৫০), লোকমান হোসেন (৪৮), এফ ও মোহাম্মদ আলী, আক্তারুজ্জামান, এহসান গ্রুপের পরিচালক এসএম মিরাজুর রহমান ও হাফিজুর রহমান।

এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, আসামিরা আলেম পরিচয় দিয়ে ধর্মীও অনুভ’তিকে কাজে লাগিয়ে, ইসলামধর্মী সহজ সরল মানুষকে কুরআন হাদিসের বয়ান দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে বিদেশি পাচার করে থাকে। ২০০৮ সাল থেকে ২০১৪ সালের ১ জুলাই পর্যন্ত আসামিরা ওই ৩০ জনকে নানা ভাবে বুঝিয়েছে। তারা আলমে, সৎ পথে উপার্যন করে থাকেন।

তাদের প্রতিষ্ঠানে টাকা রাখলে সুদ বিহিন মুনাফ অর্জন করা সম্ভব হবে। এই ভাবে সাধারণ মানুষকে বুঝিয়ে এহসান রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড ডেভোলপমেন্ট লিমিটেড এবং এহসান ইসলামী মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের অফিসে মানুষকে নিয়ে যায়;

ওই অফিস দুইটি যথাক্রমে শহরের চৌরাস্তার মোড়ের শরীফ মার্কেটের তৃতীয় তলায় ও আরএন রোডস্থ হোমিও প্যাথিক কলেজের পেছনে ঊমেষ চন্দ্র লেনে। ফলে সাধারণ ইসলাম প্রিয় মানুষ তাদের কথায় বিশ্বাস স্থাপন করে তাদের কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে।

এজাহারে ইমন উল্লেখ করেছেন, তার জানামতে কমপক্ষে ৩০জন আমানতকারী ওই প্রতিষ্ঠানে মোট ২ কোটি ৪৫ লাখ ৩৬ হাজার টাকা জমা করেন। প্রতিষ্ঠানটি কয়েক বছর কয়েকজন আমানতকারীকে সামান্য কিছু মুনাফা দেয়। এরপর ২০১৪ সালের ১ জুলাই রাতারাতি প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে যায়।

যশোরসহ এই প্রতিষ্ঠান মূল কর্মকর্তারা নিজেদের আত্মগোপন করে রাখে। সম্প্রতি এই বিষয়ে পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে তিনি জানতে পারেন যশোর থেকে প্রতিষ্ঠানটি ৩২২ কোটি ১১ লাখ ৮০ হাজার ৭৫০ টাকা নিয়েছে বিভিন্ন আমানতকারীর কাছ থেকে।

আর দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাতিয়ে নেয়া টাকার পরিমান আড়াই হাজার কোটি টাকা। তিনি পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ পড়ে যশোরের আমানতকারীদের পক্ষে টাকা ফেরৎ পাওয়ার আশায় গত রোববার বিকেলে কোতয়ালি থানায় মামলাটি করেন।

এ বিষয়ে কোতয়ালি থানার ওসি তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, এহসান গ্রুপের টাকা আত্মসাতের ঘটনাটি দেশের অনেক মানুষ যানে। এই গ্রুপের শীর্ষ এক কর্মকর্তা ঢাকায় আটক হয়েছে। যশোরের অনেক মানুষ এই গ্রুপের আমানত রেখে ক্ষতির শিকার হয়েছেন বলে জানতে পেরেছি। এই ঘটনায় ভুক্তোভোগিদের একজন থানায় মামলা দিলে তা রেকর্ড করে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।