ঘূর্ণিঝড় শাহীনের তাণ্ডবে ওমান ও ইরানে নিহত ১৩

gurni jhor
ফাইল ছবি

ওমান ও ইরানের কয়েকটি অংশে ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড় শাহীনের তাণ্ডবে অন্তত ১৩ জন নিহত হয়েছেন। ওমানের উত্তরাঞ্চলীয় উপকূলে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৫০ কিলোমিটার বাতাসের বেগ নিয়ে শহীন স্থলে উঠে আসে, এর সঙ্গে শুরু হওয়া প্রবল বৃষ্টিপাতে দেশটির ওই উপকূলীয় অঞ্চলের বিশাল এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। খবর বিবিসি।

ওমানের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, উত্তর আল-বাতিনাহ প্রদেশে সোমবার সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে রোববার পানিতে ডুবে অথবা ভূমিধসে চার জনের মৃত্যু হয়।

ইরানে দুই জেলের মৃতদেহ পাওয়া গেছে বলে রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম জানিয়েছে। ইরানের দক্ষিণপূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ সিসতান-বালুচিস্তানের উপকূলে পাকিস্তান সীমান্তের কাছে আরও তিন জেলে নিখোঁজ রয়েছেন।

ইরানের পার্লামেন্টের ডেপুটি স্পিকার ছয় জনের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়েছিলেন। শাহীনের তাণ্ডবে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা, সড়কসহ বিভিন্ন অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সোমবার ঘূর্ণিঝড়টি স্থলের ওপর দিয়ে দক্ষিণপশ্চিম দিকে অগ্রসর হওয়ার পর দুর্বল হয়ে পড়ে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের ওমান সীমান্ত সংলগ্ন এলাকাগুলোতে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

ওই অঞ্চলের আল-আয়িন শহরের বাসিন্দাদের জরুরি কাজ ছাড়া বাড়ির বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ওমানের উত্তরাঞ্চলে আরব সাগরের উপকূলে এত শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের আঘাত একটি বিরল ঘটনা।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ওমানের রাজধানীর মাস্কাটের উত্তরপশ্চিমে আল-বাতিনাহ প্রদেশের আল-খাবউরা শহরে ৩৬৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে আর মাস্কাটে হয়েছে ২০০ মিলিমিটারেরও বেশি।

শাহীনের তীব্র ঝড়ো হওয়ার কারণে উপকূলজুড়ে ১০ মিটার উঁচু ঢেউ তৈরি হয়। রোববার ঘূর্ণিঝড় শাহীন স্থলে উঠে আসার আগে মাস্কাট প্রদেশে পানিতে ভেসে যাওয়া একটি শিশুকে পরে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে বলে দেশটির ন্যাশনাল কমিটি ফর ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট (এনসিইএম) জানিয়েছে।

একটি শিল্প এলাকায় ভূমিধসে দুই এশীয় শ্রমিক মারা যায়। সোমবার এনসিইএম জানায়, নিখোঁজ এক ব্যক্তির মৃতদেহ দক্ষিণ আল-বাতিনাহ প্রদেশের ওয়াদি-আল-সিলিলে পাওয়া গেছে এবং উত্তর আল-বাতিনাহতে আরও ছয় জনের মৃত্যু হয়েছে।

ওমানের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সশস্ত্র বাহিনীগুলো বন্যার পানিতে আটকা পড়া লোক জনকে উদ্ধারে কাজ করছে। এর পাশাপাশি তারা ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাগুলো মেরামত করে উপদ্রুত অঞ্চলে ত্রাণ পাঠানোর পথ সুগম করছে।

ওমানের ক্ষতিগ্রস্ত প্রদেশগুলোতে স্থাপন করা ৮০টি আশ্রয় কেন্দ্রে পাঁচ হাজারেরও বেশি লোককে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

দেশের বিভিন্ন অংশে আবহওয়া পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত লোকজনকে সতর্ক থাকতে বলেছে দেশটির ন্যাশনাল মাল্টি হ্যাজার্ড আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেম। তাদের খাঁড়ি, উপত্যকা ও নিচু এলাকাগুলো এড়িয়ে যেতে বলা হয়েছে।