তালেবান নেতাদের নিয়ে সংলাপে বসতে যাচ্ছে রাশিয়া

আফগানিস্তান নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজন করবে রাশিয়া। এই সম্মেলনে তালেবান নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হবে। রুশ পেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের আফগান বিষয়ক বিশেষ দূতের বরাতে রাশিয়ান নিউজ এজেন্সি এই খবর প্রকাশ করেছে।

এতে বলা হয়েছে, মস্কো আগামী ২০ অক্টোবর আফগানিস্তান নিয়ে আন্তর্জাতিক সংলাপ আয়োজন করতে যাচ্ছে। তবে পুতিনের আফগান বিষয়ক বিশেষ দূত জামির কাবুলভ এ নিয়ে বিস্তারিত তথ্য জানাননি।

চলতি বছরের মার্চে মস্কো, আফগানিস্তান নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করেছিল। এতে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও চীন ও পাকিস্তান অংশ নেয়। সংলাপ শেষে এই দেশগুলো এক যৌথ বিবৃতিতে, সহিংসতা দূর করে সমঝোতায় পৌঁছানোর আহ্বান জানিয়েছিল।

সংলাপের পর যুক্তরাষ্ট্র ও তার ন্যাটো মিত্ররা আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু করে। এরপর গত ১৫ আগস্ট তালেবান আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট প্যালেস দখল করে।

এর দুই সপ্তাহ পর মোল্লা হাসান আখুন্দজাদাকে প্রধানমন্ত্রী করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে তালেবান। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো আন্তর্জাতিক দেশ তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি প্রদান করেনি। তালেবান নেতৃত্ব স্বীকৃতি আদায়ে ব্যাপক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

আফগানিস্তানে তালেবানের উত্থানে ‘মধ্য এশিয়’ নিয়ে চিন্তিত রাশিয়া। দেশটির ধারণা, তালেবানের জয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো উৎসাহ পাবে।

সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে স্বাধীনতা হওয়া তাজিকিস্তান, তুর্কিমিনিস্তান, গিরকিজস্তানকে রাশিয়া প্রতিরক্ষামূলক বাফার রাষ্ট্র হিসেবে মনে কর।

তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পরপরই রাশিয়া তাজিকিস্তানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে যৌথ সামরিক মহড়ায় অংশ নেয়। তাজিকিস্তানে রাশিয়ার একাধিক সামরিক ঘাঁটি রয়েছে।

বৃহস্পতিবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তাজিকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইমোমালি রাখমোনের সঙ্গে সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন। দুই নেতা আফগানিস্তানের সর্বাশেষ অবস্থাসহ নিরাপত্তার নানা দিক নিয়ে আলোচনা করেন। তালেবান শাসনকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি না দিয়েই তাদের সঙ্গে ছয়টি দেশ ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখছে।

সেগুলো হলো পাকিস্তান, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, চীন ও ইরান। আফগানিস্তানে এই রাষ্ট্রগুলোর বৈচিত্র্যপূর্ণ এবং এমনকি পরস্পরবিরোধী স্বার্থ রয়েছে। রাশিয়া ও ইরান মনে করে, তারা মধ্যপ্রাচ্যে তাদের কৌশলগত লক্ষ্য যেভাবে অর্জন করেছে, একইভাবে মধ্য এশিয়াতেও যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যকে পরাজিত করতে পারবে।

অনেক বিশেষজ্ঞ বলছেন, তালেবান সরকারের প্রতি পাকিস্তান, চীন বা কাতারের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি অনেকটাই অপ্রাসঙ্গিক, কারণ সম্পর্ক শুরু হয়ে গেছে।