গ্রামের মানুষের মাথাপিছু আয় ৯০ হাজার মার্কিন ডলার!

সুইজারল্যান্ডের অপরূপ সৌন্দর্যের একটি গ্রাম লুঙ্গার্ন। গ্রামটির মানুষের মাথাপিছু আয় প্রায় ৯০ হাজার মার্কিন ডলারেরও বেশি। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে গ্রামটির উচ্চতা পৌনে এক কিলোমিটার বা ২৪৬০ ফুট।

আল্পস পর্বতের সারনেরা উপত্যকায় অবস্থিত গ্রামটির উত্তরে খোলা উপত্যকা এবং তিনদিকে খাড়া পাথর বেষ্টিত পাহাড়। মাঝখানে স্নিগ্ধ ঝর্নার জলে সুবিশাল লুঙ্গার্ন লেক।

২১৪৮ জন মানুষের বসতির দীর্ঘ গ্রামটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে বিশ্বের টপ টেন বিউটিফুল গ্রামের অন্যতম। সুইজারল্যান্ডের অপরূপ সৌন্দর্যের “লুঙ্গার্ন গ্রাম”।

সৌন্দর্যের এক ভূস্বর্গ হলো সুইজারল্যান্ড। দেশটির মধ্য-দক্ষিণের সারনেরা উপত্যকার সমুদ্র পৃষ্ঠের পৌনে এক কিলোমিটার উপরের চোখ জুড়ানো নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের গ্রাম লুঙ্গার্ন।

তিনদিকে খাড়া পাথরের আড়াই থেকে তিন কিলোমিটার সুউচ্চ পাহাড়, আর উত্তরে খোলা উপত্যকার মাঝখানে সুন্দর এই গ্রামটি, যার কেন্দ্রে রয়েছে স্নিগ্ধ ঝর্ণার জলে সুবিশাল লুঙ্গার্ন লেক।

প্রায় ২১৪৮ গ্রামবাসীর কেউ নেই বেকার। গ্রামটির মানুষের মাথাপিছু আয় প্রায় ৯০ হাজার মার্কিন ডলার। প্রকৃতির মাঝে ছিমছাম পরিপাটি গ্রামটির অধিকাংশ বাড়িতে আছে গৃহপালিত গরু, ছাগল ও ভেড়ার খামার।

তারা নিজহাতে তৈরি করেন পনির। পাশের বনের গাছের কাঠ দিয়ে তৈরি করেন রকমারি হস্তশিল্প। গ্রামের মানুষ সবচেয়ে পছন্দ করেন পাহাড়ি ঝর্ণার গড়ে উঠা লেকটি, আর তাদের তৈরি খাঁটি দুধের পনির বিশ্বখ্যাত।

বর্তমানে বিশ্বে চকলেটে উৎপাদনেও সুইজারল্যান্ড প্রথম সারিতে উঠে এসেছে শুধু দুধের গুনগত মানের জন্য।
সুইজারল্যান্ড পৃথিবীর একমাত্র দেশে যেখানে গাভী ভাড়া পাওয়া যায়।

কেউ এপার্টমেন্টসহ দেশটিতে ছুটি কাটাতে নিরিবিলি পরিবেশে গ্রাম অঞ্চলে থাকতে চাইলে সঙ্গে গাভীও ভাড়া নিতে পারে। নিজে নিজের প্রয়োজনীয় দুধ গাভী থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন।

বর্তমানে লুঙ্গার্ন গ্রামটি অপরূপ সৌন্দর্যের কারিশমা সাজিয়ে বিশ্ব সৌখিন পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রে অবস্থান করলেও,এই গ্রামটি দুর্গম পাহাড় বেষ্টিত হওয়ায় ১৮৬১ সালের পূর্বে এখানে যাতায়াতের তেমন ভালো রাস্তাও ছিলো না ।

তবে আধুনিক সুইজারল্যান্ড কঠিন বাধা জয়করে, পাহাড়ের বুক চিরে মাইলের পর মাইল টার্নেল রাস্তা সৃষ্টি করে লুঙ্গার্ন গ্রামে পৌঁছার বাস ,ট্রেনের ও অসংখ্য সহজ যাতায়াতের পথ সৃষ্টি করেছেন।

তাই দিন দিন গ্রামটির সৌন্দর্যের জৌলুস বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং তা ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বময়। তাই অনেক বিদেশিও গড়ে তুলছেন নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।

অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমিতে পরিণত হয়েছে আধুনিক সুইজারল্যান্ড। দেশটির বড় শহরগুলোতে সহজেই ভ্রমণ করা যায় উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য।

সুইজারল্যান্ডের ভ্রমণ ব্যয় তুলনামূলক অন্য যেকোন দেশের চাইতে বেশি। তবে প্রত্যন্ত গ্রাম গুলো আরো বেশি সুন্দর ও মনোহারি,যেখানে ছুটি কাটাতে ও ভ্রমণ করতে খরচ শহরের তুলনায় আরো বেশি।

তাই সবার পক্ষে এতো বেশি খরচ করে, প্রত্যন্ত অঞ্চলে ভ্রমণে যাওয়া সম্ভবও হয়ে উঠে না। তবে একবার গ্রামগুলোতে ভ্রমণে গেলে, বারবার সেখানে ফিরে যেতে চায় সৌন্দর্য পাগল পর্যটকরা।