রাজতন্ত্রকে অবমাননা করলে শাস্তি অনিবার্য: থাই আদালত

থাইল্যান্ডের শাসনব্যবস্থা সংস্কারকামী জনগণকে হতাশ করেছে দেশটির সাংবাধানিক আদালতের রায়।

শনিবার এক ঘোষণায় আদালত জানিয়েছেন, গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে থাইল্যান্ডে শাসনতন্ত্রের সংস্কারের দাবিতে যে আন্দোলন চলছে- তা বাগাড়ম্বরপূর্ণ ও ধর্মদ্রোহীতা বা রাজদ্রোহীতার থেকেও বড় অপরাধ।

২০২০ সালের জুলাইয়ে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককসহ দেশটির বিভিন্ন শহরে শুরু হয় সরকারবিরোধী আন্দোলন। আন্দোলনের প্রধান তিন নেতা আরনন নামপা, পানুপং জাডনক ওরফে মাইক ও পানুসায়া সিথিজিরাওয়াতানাকুল ওরফে রাংয়ের বিরুদ্ধে রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগে মামলা করা হয় চলতি বছর।

এই তিনজনই আন্দোলনের প্রধান সংগঠক হিসেবে কাজ করেছেন। তাদের নেতৃত্বে থাইল্যান্ডের সরকারে পতনের পাশাপাশি রাজতন্ত্রের সংস্কার, রাজপরিবারের আর্থিক সম্পদের বিবরণী প্রকাশ করা ও রাজপরিবারের সদস্যদের ট্যাক্সের আওতায় আনার দাবি জানিয়েয়ে আসছে আন্দোলনকারী জনগণ।

শনিবারের শুনানিতে থাই সাংবিধানিক আদালতের বিচারক উইরুন সাংতিয়ান বলেন, থাইল্যান্ডের সংস্কৃতি ও সাধারণ জনগণের কাছে রাজতন্ত্র কতখানি সম্মানিত, তা আমরা সবাই জানি। সাংবিধানিক রাজতন্ত্রকে ছুঁড়ে ফেলার হুমকি শুধু বাগাড়ম্বরপূর্ণ নয়, এটি ধর্মদ্রোহীতার মতো গুরুতর অপরাধ।

আদালত সূত্র জানিয়েছে, যদি অপরাধ প্রমাণিত হয়, সেক্ষেত্রে আরনন নামপা ও পানুপং জাডনংয়ের ১০০ বছরের কারাদণ্ড বা ফাঁসি হতে পারে। অপর ‘আসামি’ পানুসায়া সিথিজিরাওয়াতানাকুল ওরফে রাংয়ের হতে পারে ২৫ বছরের জেল।

রাজপরিবার অত্যন্ত সম্মান ও শ্রদ্ধা করে থাইল্যান্ডের সাধারণ জনগণ। ২০১৪ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশটির ক্ষমতায় সামরিক সরকার থাকলেও দেশের সার্বিক শাসন ও সামাজিক ব্যবস্থায় রাজপরিবারের গুরুত্ব এতটুকুও কমেনি।

দেশটির প্রচলিত আইন ও সংবিধান অনুযায়ী, প্রকাশে রাজপরিবারের সমালোচনা করা বা বিরুদ্ধে কথা বলা রাষ্ট্রের প্রতি বিদ্রোহের শামিল। তবে সাংবিধানিক আদালতের রায়ের পর হতাশা জানিয়েছেন আন্দোলনের দায়ে অভিযুক্ত তিন সংগঠকের আইনজীবী কৃশাদাং নাতচারুত। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে তিনি বলেন, আজকের দিনটি থাইল্যান্ডের ইতিহাসের একটি কালো দিন।