জামালপুরে এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে তথ্য গোপনের অভিযোগ

জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার গুনারীতলা ইউনিয়ন পরিষদের নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে তথ্য গোপনের অভিযোগ উঠেছে। ঋণের দায় থেকে অব্যাহতি পেতে অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর রহমান আদালতে নিজেকে মৃত দেখানোর অভিযোগ উঠেছে।

মাদারগঞ্জের গুনারীতলা ইউনিয়নের আবু শোয়েব নামে একজন ভোটার বৃহস্পতিবার জামালপুর জেলা নির্বাচন অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান ফাতেমা আফসার এগ্রো কমপ্লেক্স লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের এক্যুইটি এন্ড অন্ট্র্যাপ্র্যানারশীপ ফান্ড ইউনিট-ইইএফ (ব্যবস্থাপনায় ইনভেষ্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ) এর সহায়তায় বিগত ২০১২ সালের ২৯ এপ্রিল ৩০ লাখ, একই বছরের ১৬ অক্টোবর ৫১ লাখ ও ২০১৩ সালের ৪ ডিসেম্বর ২১ লাখ ২১ হাজারসহ সর্বমোট ১ কোটি ২ লাখ ২১ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করেন।

নির্ধারিত সময়ে ঋণ পরিশোধ না করায় খেলাপী হন। ঋণ খেলাপী ও ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় মোস্তাফিজুর রহমানসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার পঞ্চম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে মামলা হয়। মানিস্যুট মামলা নং ২৯/২০১৮। তাদের বিরুদ্ধে সমন জারি হয়।

মামলা ও ঋণ থেকে মুক্তি পেতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তাদের সহায়তায় তিনি মারা গেছেন মর্মে আদালতে মৃত্যুর সনদ প্রদান করা হয়। ২০২০ সালের ৩ মার্চ আদালতকে অবহিত করা হয় মোস্তাফিজুর রহমান ও তার বাবা আফছার আলী মিয়া মারা গেছেন।

আফছার আলীর মৃত্যুর খবর সঠিক থাকলেও তার পুত্র ফাতেমা আফসার এগ্রো কমপ্লেক্স লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমানের মৃত্যুর খবরটি মিথ্যা।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, মাদারগঞ্জের মোসলেমাবাদ গ্রামের মৃত আফছার আলীর পুত্র মোস্তাফিজুর রহমান ঋণ খেলাপী ও মামলার তথ্য গোপন করে গুনারীতলা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন।

গত ২৯ নভেম্বর যাচাই বাছাইয়ের সময় সংশ্লিষ্ট ব্যাংক তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন না করায় তিনি বৈধ প্রার্থী ঘোষিত হন। তথ্য গোপন করে তিনি স্থানীয় সরকার আইন ২০০৯ এর ৪(জ) উপধারা লঙ্ঘন করেছেন।

এ ব্যাপারে মাদারগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং গুনারীতলা ইউনিয়ন পরিষদে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি নিজেকে অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর রহমান না বলে দাবি করেন।

তিনি নিজেকে মোস্তাফিজুর রহমান সাজু বলে দাবি করেন এবং তিনি উল্লেখিত নামের কোন প্রতিষ্ঠানের সাথে কোন দিন জড়িত ছিলেন না বলেও দাবি করেন। তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি বলেও দাবি করেন।

এ ব্যাপারে জামালপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কোন প্রার্থী প্রতারণার আশ্রয় নিলে তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।