যশোরে স্ক্যান হাসপাতালের তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা

যশোরের বহু বিতর্কিত স্ক্যান হসপিটাল এন্ড ডায়গনস্টিক সেন্টারের তিন ডাক্তারসহ চারজনের বিরুদ্ধে যশোর আদালতে মামলা হয়েছে।

প্রসুতির সিজারের সময় মলদ্বারের নাড়ী কেটে ফেলার অভিযোগে মামলা হয়। মামলাটি করেছেন ভুক্তভোগী ওই নারীর বোন যশোর শহরের পশ্চিম বারান্দীপাড়া নাথ পাড়ার জুয়েল আহমেদের স্ত্রী
তাহমিনা বেগম।

আসামিরা হলেন, স্ক্যান হসপিটালের ডাক্তার
মাহফুজা মনি, এসিসট্যান্ট শুভ, ডাক্তার তুহিন ও ডাক্তার ওহিদুজ্জামান আজাদ। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মঞ্জুরুল ইসলাম অভিযোগ আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্ত করে
প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।

ভিকটিম নাজমা আক্তার মণিরামপুরের ফরিদ আহমেদের স্ত্রী। মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, আসামিরা প্রতারক, লোভী ও অপচিকিৎসার মাধ্যমে অর্থআদায় করায় তাদের পেশা।

তার বোন নাজমা বেগম গর্ভবতী থাকা অবস্থায় প্রসবের ব্যাথা উঠলে গত ৮ জানুয়ারী যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের সামনের স্ক্যান হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করা হয়।

এরপর আসামিরা তাদেরকে জানায় অবস্থা খুবই খারাপ জরুরী অপারেশন করতে হবে। বাধ্য হয়ে আসামিদের কথায় রাজি হয়ে অপারেশনের
স্বীদ্ধান্ত নেয়া হয়। রাত আটটায় অপারেশনের মাধ্যমে পুত্র সন্তানের জন্ম হয়।

পরে হাসপাতালের ১৩ নং কেবিনে চিকিৎসাসেবা নিয়ে ১০ জানুয়ারি নাজমাকে রিলিজ দেয়া হয়। নাজমা বাড়ি নিয়ে গেলে পরের দিন ১১ জানুয়ারী অপারেশনের স্থানে তীব্র যন্ত্রনা শুরু হয়। এরপর নাজমাকে আবার স্ক্যান হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

সেখানে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত থেকেও কোনো অবস্থার উন্নতি হয়না। একপর্যায় আসামিরা স্বিকার করে অপারেশনের সময় মলদ্বারের নাড়ী কাটা পড়েছে ফলে এ যন্ত্রণা হচ্ছে। পরে নাজমাকে দ্রুত খুলনার গাজী মেডিকেলে ভর্তি করা হয়।

একটানা ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সেখানে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিয়ে যশোরে আনা হয়। এরপর আবারো অসুস্থ্য হয়ে পরে নাজমা। পহেলা মার্চ আবার তাকে খুলনার গাজী মেডিকেলে ভর্তি করা হয়।

দীর্ঘ দিন ওই হাসপাতালে ভর্তি রাখার পর কোনো উন্নতি না হওয়ায় ২৮ মার্চ নাজমাকে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। কিন্তু সেখানেও উন্নতি না হওয়ায় ফের তাকে খুলনার ডাক্তার গাজী মিজানুরের কাছে আনা হয়।

বাদী মামলায় উল্লেখ করেন, নাজমা এখন মৃত্যু
পথযাত্রী। ডাক্তার জানিয়েছেন মলদ্বার নাড়ী ও খাদ্যনালী একসাথে হয়ে গেছে। এজন্য আবারো তার অপারেশন করতে হবে। বাদী আসামিদের
শাস্তি কামনায় আদালতে এ মামলা করেন।