জলবায়ুর থাবায় বাংলাদেশ ১০-১৮% জিডিপি হারাতে পারে: গবেষণা

বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কা প্রাকৃতিক নানা দুর্যোগ—দাবানল, বন্যা, বড় ধরনের ঝড় এবং পানির ঘাটতির মুখোমুখি হওয়ায় দক্ষিণ এশিয়ার মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১০ থেকে ১৮ শতাংশ কমে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

জিডিপি হারানোর এই হার উত্তর আমেরিকার ৩ গুন এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে সবচেয়ে কম ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল ইউরোপের তুলনায় ১০ গুন বেশি।

বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল বিভিন্ন দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে ঋণের স্কোর নির্ধারণ করে থাকে। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংস্থাটি বলেছে, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, নিয়মিত তাপদাহ, খরা এবং ঝড়ের প্রভাব জিডিপির ঝুঁকি বৃদ্ধি করছে।

বিশ্বের ১৩৫ দেশকে নিয়ে নতুন গবেষণায় এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল বলেছে, জলবায়ু পরিবর্তন ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের বার্ষিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৪ শতাংশ হ্রাস এবং বিশ্বের অনেক দরিদ্র অঞ্চলে কঠোর আঘাত হানতে পারে।

জলবায়ু পরিবর্তনের নীতি থেরে দূরে সরে যাওয়া দেশগুলো খারাপ পরিস্থিতিতে নিম্ন এবং নিম্ন-মধ্য আয়ের দেশের তুলনায় মোট দেশজ উৎপাদনের ক্ষতি গড়ে ৩ দশমিক ৬ গুণ বেশি দেখতে পারে।

মধ্য এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা এবং আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চলের দেশগুলো বিশাল ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। পূর্ব এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলো ঝড়, বন্যার তুলনায় দাবদাহ এবং খরার কারণে সাব-সাহারান আফ্রিকার মতো একই মাত্রার ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে।

এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল শীর্ষ সরকারি ক্রেডিট বিশ্লেষক রবার্তো সিফন-আরেভালো বলেছেন, এটি বিশ্বের জন্য বিভিন্ন মাত্রার সমস্যা। তবে একটি বিষয় পরিষ্কার যে, বিশ্বের অনেক অংশের জন্য আন্তর্জাতিক সমর্থন দরকার।

নিরক্ষরেখা অথবা ছোট দ্বীপের আশপাশের দেশগুলো বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। কৃষির মতো অন্যান্য খাতের ওপর বেশি নির্ভরশীল অর্থনীতির দেশগুলোর বড় বড় পরিষেবা খাত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের মুখোমুখি হওয়া বেশিরভাগ দেশে ইতোমধ্যে খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। আন্তর্জাতিক বীমা সংস্থা সুইস রি’র মতে, গত ১০ বছরে শুধুমাত্র ঝড়, দাবানল এবং বন্যায় বিশ্বব্যাপি বার্ষিক জিডিপির প্রায় ০ দশমিক ৩ শতাংশ ক্ষতি হয়েছে।

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও) বলছে, গত ৫০ বছর ধরে প্রতিদিন বিশ্বের কোথাও না কোথাও আবহাওয়া, জলবায়ু অথবা পানি সম্পর্কিত বিপর্যয় ঘটেছে। যার ফলে দৈনিক ১১৫ জনের প্রাণহানি এবং ২০২ মিলিয়ন ডলারের বেশি ক্ষতি হয়েছে।

সূত্র: রয়টার্স।