এবার চিনি রপ্তানিতে ‘লাগাম টানছে’ ভারত

অভ্যন্তরীণ বাজারে মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে গত ছয় বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো চিনি রপ্তানি সীমিত করার পরিকল্পনা করছে ভারত। ভারতীয় খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা মঙ্গলবার রয়টার্সকে জানিয়েছেন, এ বছর দেশটি চিনি রপ্তানির সীমা এক কোটি টন নির্ধারণের পরিকল্পনা নিয়েছে।

প্রাথমিকভাবে ভারত চিনি রপ্তানির সীমা ৮০ লাখ টন করার পরিকল্পনা নিয়েছিল। কিন্তু পরে স্থানীয় কারখানা গুলোকে বিশ্ববাজারে আরও কিছু চিনি বিক্রির সুযোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।

বিশ্বে সবচেয়ে বেশি চিনি উৎপাদনকারী দেশ ভারত রপ্তানিতেও দ্বিতীয়। রপ্তানিতে শীর্ষে থাকা ব্রাজিলেও এবার উৎপাদন কম হয়েছে। পাশাপাশি তেলের উচ্চ মূল্যের কারণে মিলগুলো আখভিত্তিক ইথানল উৎপাদনে ঝুঁকছে, যার দাম ইতোমধ্যে বিশ্ববাজারে চড়ে গেছে।

ভারত বিশ্বের অন্তত ১২১টি দেশে চিনি রপ্তানি করলেও তাদের প্রধান ক্রেতা ইন্দোনেশিয়া, বাংলাদেশ, সুদান ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। ভারতের চিনি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন ইন্ডিয়ান সুগার মিলস এসোসিয়েশন দেশটিতে এ বছর চিনির উৎপাদন ৩ কোটি ১০ লাখ টন হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছিল।

পরবর্তীতে এই পূর্বাভাস সংশোধন করে চিনির উৎপাদন ৩ কোটি ৫৫ লাখ টনে উন্নীত হতে পারে বলে জানায় সংস্থাটি। মঙ্গলবার দেশটির নেতৃস্থানীয় চিনি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বলরামপুর চিনি, ডালমিয়া ভারত সুগার, ধমপুর সুগার মিল, ওয়ারিকেশ সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ এবং শ্রী রেনুকা সুগারসের শেয়ার দাম প্রায় ৮ শতাংশ পড়েছে।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক মুম্বাই-ভিত্তিক এক ডিলার বলেছেন, এক কোটি টনের সীমা যথেষ্ট বড়। এতে কারখানা ও সরকার উভয়ই খুশি থাকবে। তিনি জানান, এক কোটি টন রপ্তানির পর আগামী ১ অক্টোবর ২০২২০২৩ মৌসুম শুরুর সময় ভারতে চিনির মজুত দাঁড়াতে পারে মোট ৬০ লাখ টন, যা উৎসব মৌসুমের চাহিদা পূরণ করতে যথেষ্ট।

মহামারীর ধাক্কা সামলে ওঠার আগেই ইউক্রেন যুদ্ধ আন্তর্জাতিক পণ্য বাজারে অস্থিরতা তৈরি করেছে। তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী খাদ্য মূল্য গত বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।সূর্যমুখী তেল না পাওয়ায় এবং ইন্দোনেশিয়া পাম তেল রপ্তানি বন্ধ রাখায় রান্নার তেলের দাম চড়ে গেছে অনেক দেশেই।