দৈনিক দেশ রূপান্তর পত্রিকার সম্পাদক, প্রখ্যাত সাংবাদিক অমিত হাবিবের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। আজ শুক্রবার মাগরিবের নামাজের পর ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার কাজীরবেড়ে নিজ বাড়ির প্রাঙ্গণে তার সর্বশেষ নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাকে শায়িত করা হয়।
এর আগে ঢাকায় দুই দফা জানাজা শেষে বিকেল ৫টায় তার মরদেহ ঝিনাইদহ প্রেসক্লাব চত্বরে পৌঁছায়। এ সময় ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবের সভাপতি এম রায়হান, সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান টিপু, ঝিনাইদহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সেলিম রেজা, ঝিনাইদহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মো. সোহেল রানাসহ জেলার সাংবাদিকবৃন্দ তার মরদেহে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তারা শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
ঝিনাইদহ প্রেসক্লাব চত্বরে তার তৃতীয় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ঝিনাইদহের সাংবাদিক, প্রশাসনসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। জানাজা শেষে তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
ঝিনাইদপ্রেসক্লাব চত্বরে অমিত হাবিবের তৃতীয় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
এরপর তার মরদেহ তার জন্মস্থান কাজীরবেড় গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে শত শত মানুষ উপস্থিত হলে এক আবেগঘন আবহ তৈরি হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে রাজধানীর নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান অমিত হাবিব। তার বয়স হয়েছিল ৫৯ বছর।
গত বৃহস্পতিবার রাতে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তাকে রাজধানীর বিআরবি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দেশ রূপান্তরে কার্যালয়ে কাজ করা অবস্থায় তার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয় (স্ট্রোক)। এর আগেও একবার তার একই সমস্যা হয়। চিকিৎসকরা জানান, তার ‘হেমোরেজিক স্ট্রোক’ হয়েছে। রক্তনালী ছিঁড়ে মস্তিষ্কের অভ্যন্তরে রক্তক্ষরণ হয়েছে।
অমিত হাবিব ১৯৬৩ সালের ২৩ অক্টোবর ঝিনাইদহে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৮৭ সালে খবর গ্রুপ অব পাবলিকেশন্সে একই সঙ্গে রিপোর্টার ও সাব-এডিটর হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। পরে সাপ্তাহিক পূর্বাভাস পত্রিকায় সাব-এডিটর পদে যোগ দেন। ১৯৯১ সালে দৈনিক আজকের কাগজে সিনিয়র সাব-এডিটর হয়ে যোগ দেন। পরের বছর একই পদে যোগ দেন দৈনিক ভোরের কাগজে। অল্প দিনের মধ্যে পদোন্নতি পেয়ে তিনি সেখানে যুগ্ম বার্তা সম্পাদক ও পরে বার্তা সম্পাদক হন।
২০০৩ সালে দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকায় প্রধান বার্তা সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন অমিত হাবিব। ২০০৭ সালে তিনি চীনের আন্তর্জাতিক বেতারে বিদেশি বিশেষজ্ঞ হিসেবে যোগ দিয়ে বেইজিং যান। কিছুদিন পর তিনি সেখান থেকে দেশে ফিরে আসেন। এরপর যোগ দেন দৈনিক সমকালে প্রধান বার্তা সম্পাদক হিসেবে।
অমিত হাবিব দেশ রূপান্তরের আগে ২০১৩ সাল থেকে দৈনিক কালের কণ্ঠের উপদেষ্টা সম্পাদক ছিলেন। এর আগে ২০০৯ সালে কালের কণ্ঠে নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন। ২০১৮ সালে তিনি দৈনিক দেশ রূপান্তর সম্পাদকের দায়িত্ব নেন। তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
