সরকারকে ধাক্কা দিতে গিয়ে বিএনপিই পড়ে গেছে: তথ্যমন্ত্রী

hasan mahamud
ফাইল ছবি

সরকারকে ধাক্কা দিতে গিয়ে বিএনপি ইতোমধ্যেই পড়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। আজ রোববার দুপুরে সচিবালয়ে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) নবনির্বাচিত পরিষদের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বিএনপি নেতাদের সাম্প্রতিক মন্তব্য ‘সরকারকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়া বাকি’ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

ড. হাছান বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার অনেক শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে। আপনারা জানেন, কোনো শক্ত দেয়ালে যদি কেউ ধাক্কা দেয়, সে নিজেই পড়ে যায়, দেয়াল কিন্তু নড়েও না কিংবা সেই দেয়ালে যদি কেউ মাথা ঠুকে, তাহলে মাথা ফেটে যায়। আওয়ামী লীগের ভিত অনেক গভীরে প্রোথিত। আসলে আওয়ামী লীগ সরকারকে ধাক্কা দিতে গিয়ে বিএনপি ইতোমধ্যেই পড়ে গেছে। সুতরাং আবার যদি ধাক্কা দিতে যায়, তখন আবার পড়ে যাবে, মাথাও ফেটে যেতে পারে।

বিএনপি নেতাদের আরেক মন্তব্য ‘বিদ্যুতের লোডশেডিং-এর জন্য দায়ী সরকারের দুর্নীতি’ এর জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সারাবিশ্বে আজকে বিদ্যুতের জন্য, জ্বালানির জন্য হাহাকার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যে জার্মানিতে কখনও বিদ্যুৎ যায়নি, সেখানে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য জনগণকে আহ্বান জানানো হয়েছে এবং পানি গরম করার বিদ্যুৎ বন্ধ রয়েছে।

আমেরিকায় বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য নাগরিকদের কাছে এসএমএস করা হয়েছে। ফ্রান্সেও একই আহ্বান জানানো হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ায় নিউ সাউথ ওয়েলস এবং সিডনিতে দুই ঘণ্টা করে লোডশেডিং হয়েছে। স্পেনে প্রধানমন্ত্রী আহ্বান জানিয়েছেন, টাই না পরার জন্য। কারণ টাই পরলে গরম লাগবে। গরম লাগলে এসি বেশি চালাতে হয়।

বিদ্যুৎ উৎপাদনের জ্বালানির দাম বেড়ে গেছে, গ্যাসের দাম ১০ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, এ জন্য সমগ্র পৃথিবীব্যাপী বিদ্যুতের রেশনিং করা হচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, উন্নত দেশে যে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, আমাদের দেশেও সেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমরা আশা করছি ডিসেম্বর নাগাদ এ অবস্থা আর থাকবে না।

হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি এগুলো বুঝে। বুঝেও তারা এ রকম কথা বলে। বিএনপির তো এ নিয়ে কথা বলার সুযোগ নেই। কারণ তারা তো মানুষকে বিদ্যুৎ দিতে পারে নাই। মানুষ যখন বিদ্যুতের দাবি করেছে, তখন গুলি করে তাদের হত্যা করেছে। বিদ্যুৎ তারা দিতে পারেনি কিন্তু তারেক জিয়ার প্রতিষ্ঠানে উৎপাদিত বিদ্যুতের খাম্বা লাগিয়েছে সারাদেশে।
দেখলাম তারা হারিকেন নিয়ে মিছিল করেছে। এর অর্থ দুটি হতে পারে। একটি হচ্ছে হারিকেন মার্কার মুসলিম লীগ মিলিয়ে গেছে, এখন তারা আবার হারিকেন ধরে মুসলিম লীগ হতে চায় কি না। আরেকটি হচ্ছে, হারিকেনকে যেকোনো সময় পেট্রোল বোমা বানিয়ে ফেলা যায়।

নবম ওয়েজবোর্ড নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, যে মামলার পরিপ্রেক্ষিতে জটিলতা তৈরি হয়েছে, তা নিষ্পত্তির জন্য মন্ত্রণালয় কাজ করছে। সাংবাদিকদের অনুরোধ জানাব, মালিক পক্ষকে ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন করার জন্য বলতে।

সংবাদপত্র মালিক সমিতি-নোয়াবের দৈনিক পত্রিকার মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণা সম্পর্কে প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান বলেন, নোয়াব বলেছে তাদের অনেক দাবি ছিল, যার বেশকিছু বাস্তবায়িত হয়নি। সব দাবির বাস্তবায়ন সম্ভব হয় না, সরকারকে সবকিছু মিলিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। আর সংবাদপত্রগুলো বেসরকারি মালিকানাধীন, তারা দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে সবার সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে বাড়ালে ভালো হত।

ডিইউজে সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরীর নেতৃত্বে সিনিয়র সহ-সভাপতি এম. এ. কুদ্দুস, সহ-সভাপতি মানিক লাল ঘোষ, সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক খায়রুল আলম, কোষাধ্যক্ষ আশরাফুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক এ জিহাদুর রহমান জিহাদ, আইন বিষয়ক সম্পাদক এসএম সাইফ আলী, দপ্তর সম্পাদক আমানউল্লাহ আমান, কল্যাণ সম্পাদক জুবায়ের রহমান চৌধুরী, নারী বিষয়ক সম্পাদক সুরাইয়া অনু, নির্বাহী সদস্য ইব্রাহীম খলিল খোকন, আসাদুর রহমান, সলিম উল্লাহ সেলিম, আনোয়ার হোসেন, মহিউদ্দিন পলাশ, রেহানা পারভীন, শফিক বাশার, কুদ্দুস আফ্রাদ প্রমুখ এসময় ডিইউজের ১০ দফা দাবি সংবলিত একটি পত্র তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন।