‘শেখ কামালের জীবন-আদর্শ যুব সমাজের কাছে অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে’

জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে ৫ আগস্ট শুক্রবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠপুত্র শেখ কামালের ৭৩তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হয়।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই শেখ কামাল এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকের নির্মম বুলেটে জাতির পিতার পরিবারের সকল শহীদ সদস্যগণের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।

এরপর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ এবং শেখ কামালের জীবন ও কর্মের উপর একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
মূল বক্তব্যে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত বলেন, “শেখ কামাল ছিলেন অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল, এবং আধুনিক একজন বাঙালি। তিনি ছিলেন সাধারণের মধ্যে অসাধারণ। অমায়িক ব্যবহার, মানবিক গুণাবলী এবং সাংগঠনিক দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে তিনি অসংখ্য সামাজিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। তিনি ছিলেন আবাহনী ক্রীড়া চক্রের প্রতিষ্ঠাতা, ঢাকা থিয়েটারের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, স্বাধীন বাংলাদেশে গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন আন্দোলনের একজন পুরোধা। তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন স্পন্দন শিল্পীগোষ্ঠী। বহুমূখী প্রতিভার অধিকারী এই ক্ষণজন্মা তরুণ ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মাধ্যমে যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশের পুনর্গঠনে দেশের যুবসমাজকে কাজে লাগাতে চেয়েছিলেন।”

উন্মুক্ত আলোচনা পর্বে মিশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারিগণ বক্তব্য রাখেন। শহীদ শেখ কামালের জীবন ও কর্মের নানা দিক উঠে আসে উন্মুক্ত আলোচনায়। শেখ কামালের আদর্শ ধারণ করে দেশের যুব সমাজ ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশকে আরও উচ্চতর আসনে তুলে ধরবে মর্মে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন বক্তাগণ।

এদিকে, নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কন্স্যুলেটের অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সামাজিক, সাস্কৃতিক ও ক্রীড়া সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং বাংলাদেশ কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম উপস্থিত সকলকে নিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ শেখ কামালের প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করেন।

এ দিবস উপলক্ষে ঢাকা থেকে প্রেরিত রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়। অনুষ্ঠানে শহীদ শেখ কামালের উপর নির্মিত একটি প্রামান্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়। জাতিরপিতা ও তাঁর পরিবারের অন্যান্য শহিদ সদস্য সহ সকল শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এবং দেশের অব্যাহত সমৃদ্ধির জন্য বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। কনসাল জেনারেল সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শেখ কামালের জীবন সম্বন্ধে আলোচনাকালে কনসাল জেনারেল মহান মুক্তিযুদ্ধে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা উল্লেখ করেন।

অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত শেখ কামালের স্ত্রী সুলতানা কামালের বড়বোন খালেদা রহমান টেলিফোনে সংযুক্ত হয়ে স্মৃতিচারণ করেন। অন্য বক্তাগণ শেখ কামালের আলোকিত জীবন ও কর্মের উপর স্মৃতিচারণ ও আলোচনা করতে গিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়াঙ্গনে তাঁর অবিস্মরণীয় অবদানের কথা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন।