যশোরে যুবক খুনের ঘটনায় আটক মানিকের আদালতে জবানবন্দি, ১১ জনের নামে মামলা

যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটিতে আলম মন্ডল হত্যাকান্ডে তদন্তকারী কর্মকর্তা এজাহার নামীয় আসামী দু’জনকে গ্রেফতার দেখিয়েছেন। এ ঘটনায় গভীর রাতে কোতয়ালি মডেল থানায় আলম মন্ডলের স্ত্রী মোছাঃ রেকসোনা বেগমের দায়ের করা মামলায় ১১ জনের নামসহ অজ্ঞাতনামা আরো অনেকে উল্লেখ করা হয়েছে। তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতয়ালি মডেল থানার এসআই সালাউদ্দিন খান এই হত্যা মামলায় সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের ছাতিয়ানতলার দাউদ হোসেনের ছেলে তানভির হাসান রক্সি (৩২) ও চুড়ামনকাটি গ্রামের আবু বক্কার সিদ্দিক ওরফে সিদ্দিকের ছেলে মানিককে এহাজার নামীয় আসামী হিসেবে শনিবার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করেছে। এর মধ্যে মানিক আলম মন্ডল হত্যাকান্ডের বর্ননা দিয়ে আদালতের বিজ্ঞ বিচারকের সামনে ১৬৪ ধারায় জবান বন্দি দিয়েছেন বলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন।

এই মামলায় বাদি মোছাঃ রেকসোনা বেগম যে ১১ জনের নাম উল্লেখ করেছেন। তারা হচ্ছে, সদর উপজেলার ছাতিয়ানতলার দাউদ হোসেনের ছেলে তানভির হাসান রক্সি,চুড়ামনকাটি গ্রামের মোফাজ্জেল হোসেনের ছেলে মেহেদী হাসান রুনু, একই গ্রামের মৃত আবু বক্কার সিদ্দিক ওরফে সিদ্দিকের ছেলে মানিক, ছাতিয়ানতলা মাঠপাড়ার শহিদের ছেলে সুমন হোসেন,চুড়ামনকাটি কুটিপাড়ার ওসমানের ছেলে মাহমুদুর রহমান হাসান মামুন,ছাতিয়ানতলা মন্ডল পাড়ার জালালের ছেলে স্বাদ,চুড়ামনকাটি গ্রামের রবির ছেলে রকি, বাগডাঙ্গা পালপাড়া গ্রামের মজনুর ছেলে ইকরাম হোসেন,সদর উপজেলার শ্যামনগর গ্রামের আষাড়ের ছেলে বাদল,বাগডাঙ্গা মধ্যপাড়ার মৃত সৈয়দ আলীর ছেলে আমিরুল ইসলাম ও চুড়ামনকাটি গ্রামের মোফাজ্জেল হোসেনের ছেলে রানাসহ অজ্ঞাতনামা আরো অনেকে।

মামলায় বাদি উল্লেখ করেন, আসামীরা বেশ কয়েক মাস পূর্বে বাদির স্বামী আলম মন্ডলকে খুন করার জন্য হুমকি দেয় এবং এলাকা ছাড়িয়া না দিলে হত্যা করে ফেলবে মর্মে বিভিন্ন ভাবে ষড়যন্ত্র করতে থাকে। আসামীদের ভয়ে আলম মন্ডল এলাকা থেকে পালবাড়ী এর এলজিডিই অফিসের সামনে ভাড়া তাকে। গত ৪/৫ দিন পূর্বে বাদি চুড়ামনকাটি ষ্টেশনের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় তানভীর হাসান রক্সি বলে আলমকে ভাল হয়ে চলতে বলো নইলে তাকে যেকোন সময় হত্যা করা হবে বলে হুমকী দেয়। আসামী জাকির হোসেন দ্বারা ও রুনু গত ২/৩ দিন পূর্বে চুড়ামনকাটি রেলষ্টেশনের পাশ হতে বাদির স্বামীকে বলে এলাকায় আসবি না পূনরায় এলাকায় আসলে তোকে হত্যা করে ফেলবো বলে হুমকী দেয় যা আলম তার স্ত্রী রেকসোনা বেগমে জানায়। গত ২৩ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বেলা ১ টায় ছাতিয়ানতলা বাদির পুরাতন বাড়ির সামনে আসামীরা পূর্বে শত্রুতার কারনে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তানভীর হাসান রক্সির নেতৃত্বে ও হুকুমে উল্লেখিত আসামীরা হাতে লোহার রড.দা ও অবৈধ অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ছাতিয়ানতলা ষ্টেশনের পাশে বাদির পুরাতন বাড়ির সামনে হতে আলম মন্ডলকে আক্রমন করে ধরে মারপিট করতে করতে একটি গাড়ীতে তুলে খুন করার উদ্দেশ্যে চুড়ামনকাটি কাজীর বাগান নামক স্থানে নিয়ে তানভীর হাসান রক্সির নেতৃত্বে ও হুকুমে আসামীরা পরস্পর যোগসাজসে লোহার রড দিয়ে বুকে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ী আঘাত করে জখম করে। পরে হত্যার উদ্দেশ্যে গলা চেপে শ^াসরোধ করে হত্যার চেষ্টা চালায়। ধারালো অস্ত্র দিয়ে হাটুর নীচে আঘাত করে জখম করে। বাদি ও তার মা সংবাদ পেয়ে দ্রুত স্বামীকে উদ্ধারের জন্য কাজীর বাগানে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা করে খয়েরতলা নামকস্থানে পৌছায়ে দেখেন পুলিশ বাদির স্বামীকে উদ্ধার করে ইজিবাইক যোগে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে আনছে। বাদি ও তার মা রোকেয়া বেগম উক্ত ইজিবাইকে উঠে স্বামী আলম মন্ডলের গুরুতর জখমের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে জানায় উল্লেখিত আসামীরা তাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করার চেষ্টা করে। আলম মন্ডল কথা বলতে বলতে কিছুপথ যাওয়ার অজ্ঞান হয়ে পড়ে। পরে হাসপাতালে বিকেল ৩ টায় আনলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষনা করে। শনিবার সকালে লাশের ময়না তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।