স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য আগাম পদক্ষেপ নিতে হবে: ড.আজিজ

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেছেন, মূল্যস্ফীতির হার বাড়তে থাকায় সার্বিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় এখন ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হার ধরে রাখাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

এর পাশাপাশি সামজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতা বাড়ানো, রপ্তানির ধারাবাহিতা ধরে রাখাও চ্যালেঞ্জিং। কেননা বর্তমানে যে মূল্যস্ফীতি ঘটছে তার বড় কারণ হচ্ছে বৈশ্বিক পরিস্থিতি।

রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী খাদ্যসহ প্রায় সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। এসব পণ্য আমদানি করতে বৈদেশিক মুদ্রার ব্যয় বেড়েছে। অথচ এর আয় কমে গেছে। ফলে বাজারে ডলারের সংকট দেখা দিয়েছে। এতে ডলারের বিপরীতে মুদ্রার মান পড়ে যাচ্ছে।

এটি ধরে রাখাই এখন অন্যতম চ্যালেঞ্জ। এর পাশাপাশি রেমিট্যান্স বাড়ানোর পদক্ষেপ নিতে হবে। রেমিট্যান্সে হুন্ডি বন্ধ করলে কিছুটা বাড়তে পারে।

বৈদেশিক ভারসাম্য রক্ষায় এখন রেমিট্যান্স বড় কাজ দেবে। এ ছাড়া তিনি দেশের স্বল্প আয়ের মানুষকে দুর্যোগের আঘাত থেকে রক্ষা করতে সরকারকে আগাম পদক্ষেপ নিয়ে রাখতে হবে। কারণ মূল্যস্ফীতিতে বড় আঘাতপ্রাপ্ত হচ্ছেন স্বল্প আয়ের মানুষ।

এদের জন্য সরকারের সহায়ক সব ধরনের কার্যক্রম বাড়াতে হবে। এর মধ্যে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতা বাড়াতে হবে। খাদ্য সহায়তা দিতে হবে। খাদ্য সহায়ক অন্য কার্যক্রমগুলোকেও চলমান রাখতে হবে। এগুলো যাতে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা যায় সেদিকেও নজর রাখতে হবে।

এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে স্বল্প আয়ের মানুষকে সহায়তা দিলে তাদের ওপর মূল্যস্ফীতির আঘাতটা কমে আসবে। পরিস্থিতি যত দিন নিয়ন্ত্রণে না আসে তত দিন এসব সহযোগিতা দিতে হবে। পাশাপাশি কর্মসংস্থানের দিকেও নজর রাখতে হবে। কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা থাকলে মূল্যস্ফীতির আঘাত কিছুটা কম লাগে।

আগামী পরিস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম কিছুটা কমতে শুরু করেছে। আগামীতে আরও কমতে পারে বলে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো পূর্বাভাস দিয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম কমলে দেশের আমদানি খাতে চাপ কমবে। এতে বৈদেশিক মুদ্রার ওপর চাপও কমে যাবে। তখন বিনিময় হারেও স্থিতিশীলতা আসতে পারে। এতে অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় সুফল আসবে। তবে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় রেখে দেশের ভেতরেও যাতে পণ্যের দাম কমে সেদিকে নজর রাখতে হবে।

তিনি আরও বলেন, সরকারি তথ্য অনুযায়ী ইতোমধ্যে মূল্যস্ফীতির হার কিছুটা কমতে শুরু করেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম কমলে মূল্যস্ফীতির হার আরও কমে যেতে পারে। তবে অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার দিকে সরকারকে নজর রাখতে হবে। কেননা দুর্যোগ যেকোনো সময়েই আসতে পারে। সে ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে সরকারের প্রস্তুতি থাকতে হবে।