যশোরে মুক্তিপন আদায়ের ঘটনায় মামলা, আটক এক

বাড়িতে ডেকে নিয়ে আটকে রেখে মারপিট করে মুক্তিপন আদায়ের ঘটনায় কোতয়ালি থানায় মামলা হয়েছে। ঝিনাইদহ জেলার সদর উপজেলার জিথড় গ্রামের মৃত শংকর মন্ডলের ছেলে বর্তমানে শার্শা উপজেলার রামপুর গ্রামের সুজন হোসেনের বাড়ির ভাড়াটিয়া আর এফ এল কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি প্রতুল মন্ডল (২৬) বুধবার মামলা করেন। মামলায় ৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়া অজ্ঞাত নামা আরো ২/৩ জনকে আসামি করা হয়। আসামিরা হচ্ছে যশোর সদরের বালিয়াডাঙ্গা মান্দিয়া গ্রামের ইব্রাহিম মোল্লার মেয়ে কুলসুম বেগম (৩৪) শহরের নীল গঞ্জের সুমাইয়া ওরফে সুমি (২৫) জিসান (২২) আরিয়ান (২১) ও রবি (২৫)। এঘটনায় পুলিশ কুলসুম বেগমকে আটক করে।

মামলায় প্রতুল মন্ডল বলেন, তিনি আরএফএল গ্রুপে এস আর সেলস রিপ্রেজেনটিটিভ পদে কর্মরত। কুলসুম বেগমের সাথে তার মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পরিচয় হয়। তাদের মধ্যে আলাপচারিতার এক পর্যায় কুলসুম বেগম বাদিকে ধর্মের ভাই বলে ডাকে। বিভিন্ন সময় তার পারিবারিক সমস্যার কথা বলে প্রতুল মন্ডলের কাছ থেকে বিভিন্ন অংকের টাকা গ্রহন করে। মঙ্গলবার ২২ নভেম্বর কুলসুম বেগম প্রতুলকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জানায় তার স্বামী অসুস্থ্য। তাকে বাসা থেকে যশোর সদর হাসপাতালে নিতে হবে। সাহায্য করার মত নিকটতম কোন আত্মীয় নেই।

প্রতুল মানবিক কারনে কুলসুম বেগমের বাড়িতে মঙ্গলবার ২২ নভেম্বর সন্ধ্যা আনুমানিক সাড়ে ৬ টায় পৌছায়। কুলসুম বেগম তার বাড়িতে প্রতুলকে বসতে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তার সহযোগি আসামিসহ অজ্ঞাতনামা আসামিদের সহায়তায় মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে প্রতুলকে তার বাড়িতে অবৈধ ভাবে আটক করে। সহযোগি আসামি সুমাইয়া ওরফে সুমি খানের সাথে অশ্লীল স্থির ও ভিডিও চিত্র ধারন করে। ধারণকৃত অশ্লীল ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারের ভয়ভীতি দেখিয়ে মারপিট করে প্রতুল মন্ডলের কাছে থাকা নগদ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে নেয়।

টাকা নেয়ার পরও আসামিরা প্রতুলের কাছ থেকে আরো টাকা নেওয়ার জন্য মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে নিকট আত্মীয় স্বজনদের কাছ থেকে টাকা আনতে বলে। এক পর্যায় প্রতুল তার ভগ্নিপতি উজ্জল মন্ডলের কাছ থেকে তার বিকাশে ১৫ হাজার টাকা, বাড়ির মালিক সুজন হোসেনের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা গ্রহন করে। পরে আসামিরা ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রতুলের বিকাশ পিন নাম্বার নিয়ে টাকা উত্তোলন করে। এরপরও আসামিরা প্রতুলের কাছে আরো মুক্তিপণ দাবি করে। প্রতুল বিষয়টি তার ভগ্নিপতি উজ্জল মন্ডলের কাছে আরো টাকা চাইলে তিনি বিষয়টি মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) ডিবি পুলিশকে জানায়। ডিবি’র একটি চৌকস টিম বুধবার রাত দেড়টায় সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা মান্দিয়া গ্রামের ইব্রাহিম মোল্লার বাড়িতে অভিযান চালায়।

ডিবি পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অন্যান্য আসামি ও তাদের সহযোগি অজ্ঞাতনামা আসামিরা পালিয়ে গেলেও কুলসুম বেগমকে আটক করে। এ সময় তার থেকে মুক্তিপণ আদায়ের ৪ হাজার ৮শ’ টাকা ও প্রতুলকে উদ্ধার করে। ঘটনাস্থল থেকে ডিবি পুলিশ একটি ওড়না, প্লাস্টিকের লাঠি, কুলসুম বেগমের মোবাইল ফোন জব্দ করে। এঘটনায় বুধবার দুপুরে প্রতুল কোতয়ালি থানায় মামলা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করে। ডিবি পুলিশ গ্রেফতারকৃত আসামি কুলসুম বেগমকে আদালতে সোপর্দ করে।