সেই সময়ে আইনজীবীরা তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন: প্রধান বিচারপতি

সামরিক শাসন আমলে আইনজীবীদের আন্দোলনের গৌরবময় অধ্যায়ের কথা তুলে ধরেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।

তিনি বলেন, সে আমলে এ দেশে বিচার বিভাগ নিয়ে অশুভ ও অবাস্তব অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছিল।

এরই অংশ হিসেবে অসাংবিধানিক উপায়ে হাইকোর্ট বিভাগকে খণ্ড খণ্ড করে দেশের বিভিন্ন জেলায় বেঞ্চ স্থাপন করা হয়েছিল। গণতন্ত্র নস্যাতের সেই সময়ে আইনজীবীরা তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন।

সংবিধান দিবস উপলক্ষে রোববার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি আয়োজিত এক আলোচনায় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোমতাজ উদ্দিন ফকিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

প্রধান বিচারপতি বলেন, আমাদের সংবিধানের ৫০ বছর পূর্ণ হয়েছে এ বছর। এই সংবিধানের ধারক ও বাহক হিসেবে দেশের সকল আইন ও সকল আইনগত কার্যক্রমে সাংবিধানিক চেতনার প্রতিফলন নিশ্চিত করার সুমহান দায়িত্ব বিচার বিভাগের। একটি শক্তিশালী বিচার বিভাগ বাংলার মানুষের আজন্ম লালিত স্বপ্ন।

দুর্নীতিকে মরণব্যাধি ক্যানসারের সঙ্গে তুলনা করে তিনি বলেন, এটি গণতন্ত্রকে নষ্ট করে, দেশকে ধ্বংসের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায় এবং রাষ্ট্রের ভিত্তিকে দুর্বল করে দেয়।

হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, দুর্নীতি জনগণকে বিক্ষুব্ধ করে, জন্ম দেয় ক্রোধের। এজন্য দুর্নীতিকে নির্মূল করতে হবে। রাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গের প্রতি জনগণের আস্থা দূর করতে সবাইকে সামান্যতম দুর্নীতি থেকেও দূরে থাকতে হবে। ন্যূনতম দুর্নীতিও আস্থার জায়গা ধ্বংস করে দেয়।

আগামী প্রজন্মকে দুর্নীতিমুক্ত একটি রাষ্ট্র উপহার দিতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান প্রধান বিচারপতি।

তিনি বলেন, আসুন বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ পতাকাবাহীদের জন্য একটি দুর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্রযন্ত্র রেখে যাই। যাতে তারা আরও উজ্জ্বল আলোয় প্রজ্বলিত হয়।

 

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল, তারা এবং তাদের বংশধররা চান বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের মানুষকে যে স্বপ্ন দেখিয়েছিল, সেটা বাস্তবতা না হোক। তারা চান, এদেশের মানুষ আবার তাদের প্রজা হয়ে থাক।

 

তিনি বলেন, খুনিরা সামরিক শাসনের বোঝা চাপিয়ে দিয়ে বঙ্গবন্ধুরকে এদেশের মানুষের মন থেকে মুছে ফেলতে চেয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ এক ও অবিচ্ছেদ্য। তাই এই দুটোকে যেমন বিচ্ছিন্ন করে ফেলা যাবে না, তেমনি ভোলাও যাবে না।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আবার গণতন্ত্রের পথে ফিরে এসেছে উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ বিনির্মাণে তিনি চেষ্টা করে যাচ্ছেন। আমরা যদি সেই চেষ্টায় সহযোগিতা করি, তাহলে শুধু বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন পূরণ হবে না। সেই সোনার বাংলায় যে মানুষ থাকবে তারাও উপকৃত হবেন।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান, বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন, সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ূন প্রমুখ।