এবার ছোট্ট আয়াতের মাথা উদ্ধার

দুই পায়ের পর এবার আলীনা ইসলাম আয়াতের মাথার অংশ উদ্ধার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। আজ বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম নগরের ইপিজেড আকমল আলী ঘাটের স্লুইসগেট এলাকা থেকে মাথাটি উদ্ধার করা হয়। পিবিআই কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। শিশু আয়াতের চেহারা দেখে আর্তনাদ করে ওঠেন তার বাবা। কান্নায় ভেঙে পড়েন বাবা, দাদাসহ স্বজনেরা। তাঁদের আহাজারিতে উপস্থিত অনেকেই চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি। একদিন আগে বুধবার একই এলাকা থেকে আয়াতের পলিথিন মোড়ানো দুই পা উদ্ধার করা হয়েছিল।

গত ১৫ নভেম্বর নগরের ইপিজেড থানার বন্দরটিলা নয়ারহাট এলাকায় বাসার সামনে থেকে নিখোঁজ হয় আলীনা ইসলাম আয়াত। এ ঘটনায় ২৪ নভেম্বর রাতে তাদের ভাড়াটিয়া আজহারুল ইসলামের ১৯ বছর বয়সী ছেলে আবীর আলীকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। জিজ্ঞাসাবাদে সে আয়াতকে শ্বাসরোধে হত্যার পর ছয় টুকরো করে সাগরে ভাসিয়ে দেওয়ার কথা স্বীকার করে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরদিন লাশ টুকরোর কাজে ব্যবহূত দা ও আয়াতের পায়ের জুতা উদ্ধার করা হয়।

পিবিআইয়ের ভাষ্যমতে, মুক্তিপণ আদায়ের জন্য আয়াতকে অপহরণের পরিকল্পনা করে আবীর। ১৫ নভেম্বর বিকেলে বাসার সামনে থেকে আয়াতকে কোলে নিয়ে আদর করতে করতে আবীর ঢুকে যায় তার বাবার বাসায়। সেখানে ১৫ মিনিটের মধ্যে শ্বাসরোধ করে সে আয়াতকে খুন করে। এর পর লাশ ব্যাগে ভরে নিয়ে যায় নগরের আকমল আলী সড়কের পকেট গেট বাজার এলাকায় তার মা আলো বেগমের বাসায়। মা-বাবার মধ্যে বিচ্ছেদের পর আবীর মায়ের বাসায় থাকত। বাবার বাসায়ও তার যাতায়াত ছিল। আবীর মায়ের বাসায় নিয়ে লাশ বাথরুমের সানশেডের ওপর লুকিয়ে রাখে। রাতেই ওই লাশ বাথরুমে নিয়ে কেটে ছয় টুকরো করে ছয়টি ব্যাগে ভরে রাখে।

পরদিন ১৬ নভেম্বর সকালে লাশের তিনটি টুকরো আউটার রিং রোড এলাকায় সাগরে ভাসিয়ে দেয়। ওই দিন রাতে বাকি তিন টুকরো আকমল আলী রোডের স্লুইসগেট এলাকায় ফেলে দেয়। কিন্তু মুক্তিপণ আদায়ের জন্য সংগ্রহ করা সিম ব্লক থাকায় পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারেনি আবীর।

১৫ নভেম্বর বিকেলে আরবি পড়তে স্থানীয় মসজিদের উদ্দেশে বাসা থেকে বের হলে আয়াতকে বাসার গলিতেই কোলে নেয় আবীর। অন্য শিশুরা এটা দেখেছিল। আশপাশের বিভিন্ন সিসি ক্যামেরার ভিডিও বিশ্নেষণ এবং স্থানীয় শিশুদের সঙ্গে কথা বলে আবীরকে আটক করা হয়। হত্যার ঘটনায় আয়াতের বাবা সোহেল রানা ইপিজেড থানায় মামলা করেন।