টাইব্রেকারে যেতে চাইছে না ব্রাজিল

কাতারে আসার পর প্রতিদিনই ব্রাজিলের ম্যাচ শেষে দলের খেলোয়াড়দের নিয়ে ব্রাজিলিয়ান এক চ্যানেলের অনুষ্ঠান সঞ্চালন করছেন রোনালদো নাজেরিও। এর বাইরে প্রায়ই ভিনিসিয়ুস, রদ্রিগোর মোবাইলে টেক্সট পাঠিয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন। তেমনই টেক্সট পেয়েছেন কাল দানিলোও। কী লিখেছেন তাঁকে রোনালদো? জানতে চেয়েছিলেন এক ব্রাজিলিয়ান সাংবাদিক। ‘তাঁর খেলা দেখেই বড় হয়েছি, যখন ২০০২ বিশ্বকাপে ব্রাজিল চ্যাম্পিয়ন হয়, তখন দেশের পতাকা নিয়ে মিছিল করেছি। তাঁর অনুপ্রেরণামূলক বার্তা আমাদের আরও সাহস জুগিয়েছে।’

আজও যে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে সেই সাহস নিয়েই মাঠে নামবে ব্রাজিল দল, সে কথা বলতে দ্বিধা ছিল না দানিলোর। কিন্তু ক্রোয়াটদের এই দলটির একটা অদ্ভুত ক্ষমতা রয়েছে। নকআউট পর্বের পেনাল্টিতে তাদের নার্ভ বেশ শক্ত। শেষ আটটি গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্টের নকআউট ম্যাচে তারা সাতটি জিতেছে টাইব্রেকারে। সর্বশেষ প্রি-কোয়ার্টারেই জাপানকে হারিয়েছে তারা টাইব্রেকারে গিয়ে। গত বিশ্বকাপেও তারা ডেনমার্ক, রাশিয়া আর ইংল্যান্ডকে নকআউট পাঞ্চ বসিয়েছিল পেনাল্টিতে। সে তথ্য হাতে নিয়েই সতর্ক তিতে, ‘আমাদের লক্ষ্যই থাকবে ম্যাচের শুরুতে গোল করা। তাহলে বাকিটা সময় চাপমুক্ত হয়েই খেলা যাবে। আমরা কিছুতেই চাইব না ম্যাচটি অতিরিক্ত সময়ে গড়াক।’

 

তিতের থা শুনে উপস্থিত এক ব্রাজিলিয়ানের প্রশ্ন- তাহলে কি আমরা নিজেদের খেলার স্টাইল থেকে বেরিয়ে আসব? প্রশ্নের ধরনটি বুঝতে কষ্ট হচ্ছিল তিতের। আসলে ক্রোয়াটদের নিয়ে এতটা সম্মান দেখানোয় বোধ হয় ওই সাংবাদিকের অহমে লেগেছিল। ‘প্রতিপক্ষ কেমন, পরিস্থিতি কেমন- তা নিয়েই আমাকে কৌশল সাজাতে হয়।’

দানিলোও ব্যাপারটি পরিস্কার করেছিলেন এভাবে, ‘ব্রাজিলিয়ান ফুটবলাররা ভার্সেটাইল। তাঁরা যে কোনো প্রতিপক্ষের সামনে, যে কোনো পরিস্থিতিতে নিজেদের বদলে নিতে পারে। আর এটাই তো ব্রাজিল ফুটবলের সৌন্দর্য।’

ক্রোয়াটদের নিয়ে সতর্ক থাকার কারণও রয়েছে। ক্রোয়েশিয়ায় ব্রজোভিচ, কোভোভিচ আর লুকা মডরিচের মতো অভিজ্ঞ ফুটবলার রয়েছেন। তাঁদের গতি আর ক্ষিপ্রতা প্রতিপক্ষের কাছে আতঙ্কের মতো। জাপানের সঙ্গে ম্যাচটিতে ১৬.৭ কিলোমিটার দৌড়েছেন ব্রজোভিচ! যা কিনা বিশ্বকাপের ইতিহাসেই কোনো ফুটবলারের সবচেয়ে বেশি মাঠ কভার করার রেকর্ড। চার বছর আগে তিনি নিজেই ইংল্যান্ডের সঙ্গে এই রেকর্ড গড়েছিলেন। তা ছাড়া ক্রোয়াটদের ডিফেন্সও বেশ শক্তিশালী। তারা যে কোনো মূল্যে ম্যাচটি অতিরিক্ত সময়ে নিতে চাইবে। ক্রোয়াট কোচ দালিচও জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা তৈরি। ‘বিশ্বকাপের সেরা দল তারা। তবে আমরাও তৈরি। ব্রাজিল কিন্তু এখন পর্যন্ত সে ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েনি। বলছি না ম্যাচটি ফিফটি ফিফটি হবে। বলতে চাচ্ছি, আমরা ম্যাচটি জেতার জন্যই নামব।’

তবে যে দলের সামনে নেইমার, রিচার্লিসন, ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, ক্যাসিমিরো, রাফিনহা থাকবেন- তাঁরা নিশ্চয়ই মুখের কথায় ম্যাচ জিতে যাবে না। ছন্দে থাকা ব্রাজিল ঠিক কতটা ভয়ংকর হতে পারে, তা ঠিক আগের ম্যাচেই টের পেয়েছে সুইজারল্যান্ড।