শুরুতে অল্প যাত্রী নিয়ে চলবে মেট্রোরেল

মেট্রোরেলের চাকা ঘোরার সব প্রস্তুতি শেষ। সময় যত গড়াচ্ছে মানুষের কৌতূহলও বাড়ছে। ২৮ ডিসেম্বর উদ্বোধনের পর ওঠা যাবে এই স্বপ্নযাত্রায় সমকাল
মেট্রোরেলের চাকা ঘোরার সব প্রস্তুতি শেষ। সময় যত গড়াচ্ছে মানুষের কৌতূহলও বাড়ছে। ২৮ ডিসেম্বর উদ্বোধনের পর ওঠা যাবে এই স্বপ্নযাত্রায় সমকাল

প্রথম তিন মাস স্বল্পসংখ্যক যাত্রী নিয়ে চলবে মেট্রোরেলের ট্রেন। সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতা ২ হাজার ৩০৮ জন হলেও ১০০ থেকে ৩৫০ জন যাত্রী নিয়ে চলবে। আগামী ২৮ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী মেট্রোরেলের এমআরটি-৬ লাইনের দিয়াবাড়ী-আগারগাঁও অংশ উদ্বোধন করার পরদিন থেকে শুরু হবে যাত্রী পরিবহন। প্রথম দিকে এই রুটের ৯টি স্টেশনের তিনটি দিয়াবাড়ী, পল্লবী ও আগারগাঁওয়ে যাত্রী ওঠানামা করবে।

মেট্রোরেলের ছয় বগির ট্রেনের দুই দিকেই থাকবে ট্রেইলার কোচ। যেখান থেকে চালকরা ট্রেন পরিচালনা করবেন। প্রতিটি ট্রেইলার কোচের যাত্রী ধারণক্ষমতা ৩৭৪ জন। মাঝখানের চারটি বগির প্রতিটির যাত্রী ধারণক্ষমতা ৩৯০ জন করে।
এমআরটি-৬-এর অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক (পূর্ত) আবদুল বাকি মিয়া সমকালকে বলেছেন, শুরুতে সীমিত পরিসরে চলবে বলে খুব বেশি যাত্রী হবে না। তাই সব ক’টি স্টেশন এখনই চালু হচ্ছে না। তবে ৯টি স্টেশনেরই নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে।
গত সোমবার আগারগাঁও, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, মিরপুর-১০, মিরপুর-১১, পল্লবী, উত্তরা দক্ষিণ স্টেশন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ঘষামাজার কাজ চলছে। শেওড়াপাড়া স্টেশনের পশ্চিমাংশে লিফট স্থাপন চলছে। কাজীপাড়ায় সিঁড়ির গোড়ায় ফুটপাত সংস্কার করা হচ্ছে। আবদুল বাকি মিয়া বলেন, শেওড়াপাড়ায় শুধু লিফটের কাঠামো বসে গেছে। কাজীপাড়ায় নির্মাণকাজ অবশিষ্ট নেই। পরিচ্ছন্নতা চলছে।

এই দুই স্টেশনের সিঁড়ির পাশেই দোকানপাট। সিঁড়ি ও দোকানপাটের মধ্যে এক থেকে দেড় ফুট জায়গা অবশিষ্ট রয়েছে। এতে পথচারীর চলাচলে সমস্যা হবে দাবি করে আপত্তি জানিয়েছিল ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। তবে অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক বলেছেন, আগের চেয়ে ফুটপাত এক মিটার প্রশস্ত হয়েছে। মেট্রোরেল চালুর পর স্টেশনের নিচে পথচারী ও গাড়ি কমবে।

মেট্রোরেল উদ্বোধন প্রস্তুতিতে গতকাল মঙ্গলবার সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরীর সভাপতিত্বে সচিবালয়ে বৈঠক হয়েছে। এতে সিদ্ধান্ত হয়, প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে আগারগাঁও
থেকে দিয়াবাড়ী অংশ সাজানো হবে। দিয়াবাড়ীতে স্টেশনের ৩০০ মিটারের মধ্যে সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।
তবে আর্থিক কৃচ্ছ্র সাধনে মেট্রোরেলের উদ্বোধন অনুষ্ঠান হবে সাদামাটা। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মতো জাঁকজমক থাকবে না বলে জানিয়ে সড়ক পরিবহন বিভাগ সূত্রটি জানায়, প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচিতেও কিছুটা পরিবর্তন আসতে পারে। আগারগাঁও থেকে দিয়াবাড়ীতে সড়কপথে যেতে পারেন সরকারপ্রধান। সেখানে ভাষণ ও উদ্বোধন ফলক উন্মোচনের পর প্রথম যাত্রী হিসেবে টিকিট কেটে প্রধানমন্ত্রী ট্রেনে চড়ে আগারগাঁও স্টেশনে যাবেন।

মেট্রোলের নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে সরকারি কোম্পানি ডিএমটিসিএল। কোম্পানি সূত্র জানিয়েছে, জনবল সংকট ও অপ্রতুল প্রস্তুতির কারণে সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কয়েক দফা বিরতি দিয়ে চার ঘণ্টা ট্রেন পরিচালনা করা হতে পারে। এমআরটি-৬ লাইন পরিচালনাতেই ৭০০ জনবল প্রয়োজন। কোন প্রক্রিয়ায় কত দিনে মেট্রোরেল পুরো অপারেশনে যাবে, তা এখনও চূড়ান্ত নয়।

পুরো অপারেশনে যাওয়ার পর ভোর সাড়ে ৫টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত সাড়ে তিন মিনিট অন্তর চলবে ট্রেন।