মির্জা আব্বাসকে হয়রানি করতেই দুদককে দিয়ে চার্জশিট: বিএনপি

মির্জা আব্বাস ও তার স্ত্রী আফরোজা আব্বাসকে হয়রানি করতেই দুদককে দিয়ে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।

বুধবার দলটির ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ অভিযোগ করা হয়।

বিবৃতিতে প্রিন্স বলেন, সাবেক মন্ত্রী ও ঢাকার সাবেক মেয়র মির্জা আব্বাস জাতীয়তাবাদী দলের একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা। একই সঙ্গে তার স্ত্রী আফরোজা আব্বাস জাতীয়াতাবাদী মহিলা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে মির্জা আব্বাস এবং আফরোজা আব্বাস অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন। এ কারণেই বিগত ১০ ডিসেম্বর বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশের আগে মির্জা আব্বাসকে কোনো কারণ ছাড়াই গভীর রাতে গ্রেফতার করে গণসমাবেশ পণ্ড করার ষড়যন্ত্র করেছে কর্তৃত্ববাদী সরকার; কিন্তু তা ব্যর্থ হওয়ায় এখন আবার আটক থাকাবস্থায় স্ত্রীসহ দুদক চার্জশিট দিয়েছে।

বিবৃতিতে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও তার স্ত্রী মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাসের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার দুদক চার্জশিট প্রদান করায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। একই সঙ্গে এ মামলাকে মিথ্যা বলে দাবি করা হয়।

প্রিন্স বলেন, বর্তমান অবৈধ সরকার রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানকে তার আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠানে পরিণত করে বিরোধী দল দমনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো বিরোধী দল ও মত ধ্বংস করার প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। সরকারের প্রতিটি কর্মকাণ্ডে দুর্নীতির ব্যাপক বিস্তার ঘটলেও দুদক যেন ‘চোখ থাকতেও অন্ধ’ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, দুদক দুর্নীতি দমন নয়, বিএনপি দমনে ব্যস্ত।

তিনি বলেন, ব্যর্থ, অযোগ্য, দুর্নীতিবাজ, লুটেরা সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে জনগণ এখন আন্দোলন করছে। যখন মির্জা আব্বাস, আফরোজা আব্বাসসহ দলের নেতারা এই আন্দোলনকে সফল করতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন; তখন তাদের বিরুদ্ধে দুদকের মিথ্যা মামলায় চার্জশিট প্রদান বিএনপি ও আন্দোলনকে নেতৃত্বশূণ্য ও বিভ্রান্ত করবার চক্রান্তেরই বহি:প্রকাশ।

প্রিন্স আরও বলেন, সম্প্রতি বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির অপর সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ তার স্ত্রী ও স্ত্রীর বোনের বিরুদ্ধেও দুদক মিথ্যা অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে। প্রতিহিংসা পরায়ণ সরকার তাদের অতিপরিচিত পুরাতন অস্ত্র ব্যবহার করে বিরোধী মতের সব নেতাকর্মীর কণ্ঠরোধ করতেই এ ধরনের মামলা, চার্জশিট প্রদান করছে। অবিলম্বে বিরোধী দলকে নিষ্ঠুর দমনের কূটকৌশল থেকে বিরত থাকার আহবান জানান তিনি।

বিবৃতিতে প্রিন্স আরও বলেন, ১/১১-এর জরুরি অবস্থার অনৈতিক সরকার মির্জা আব্বাসকে ১নং ও আফরোজা আব্বাসকে ২নং আসামি করে তাদের নামে সম্পদের হিসাবের একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে। ২০১০ সালে এই মামলাটি থেকে উচ্চ আদালত আফরোজা আব্বাসের নাম খারিজ করে দিলেও ২০১৮ সালে প্রহসনের নির্বাচনের পর দুদক একই বিষয়বস্তু নিয়ে আফরোজা আব্বাসকে ১নং ও মির্জা আব্বাসকে ২নং আসামি করে নতুন করে মিথ্যা মামলা দায়ের করে। মঙ্গলবার দুদক এ মামলায় প্রহসনের চার্জশিট প্রদান করেছে।