রংপুর সিটি নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে এগিয়ে আ.লীগ প্রার্থীরা

সদ্য সমাপ্ত রংপুর সিটি করপোরেশন (রসিক) নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন। আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া হয়েছেন চতুর্থ, হারিয়েছেন জামানত। তবে কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরা এগিয়ে রয়েছেন।

রংপুর সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ৪৪ জন। এর মধ্যে ৩৩টি ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর এবং ১১ জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর। তবে ৪৪ জনের মধ্যে কাউন্সিলর পদে ৪৩ জন নির্বাচিত হয়েছেন। ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে দুজন কাউন্সিলর প্রার্থী সমান ভোট পাওয়ায় সেখানে আবারও নির্বাচন হবে।

গতকাল মঙ্গলবার রংপুর সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এদিন সকাল সাড়ে ৮টা থেকে শুরু হয়ে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলে। পরে রাত সোয়া ১২টার দিকে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেন নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেন।

বেসরকারি ফলাফল অনুযায়ী, সাধারণ কাউন্সিলরের মধ্যে ১৬ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরদের মধ্যে চারজন নির্বাচিত হয়েছেন যারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। বাকিদের মধ্যে জাতীয় পার্টি সমর্থিত পাঁচজন, বিএনপির তিনজন, জাসদ ও বাসদের একজন করে এবং বাকি ১৩ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন।

আওয়ামী লীগ ঘরানার কাউন্সিলররা হলেন ২ নম্বর ওয়ার্ডের গোলাম সরওয়ার মির্জা, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের হারাধন চন্দ্র রায়, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের আনোয়ারুল ইসলাম, ১১ নম্বর ওয়ার্ডের ওয়াজেদুল আরেফীন, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের ফজলে এলাহী, ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের জাকারিয়া আলম, ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের আমিনুর রহমান, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুল গাফফার, ২০ নম্বর ওয়ার্ডের তৌহিদুল ইসলাম, ২২ নম্বর ওয়ার্ডের মিজানুর রহমান মিজু, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের রফিকুল আলম, ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের শাহাদাত হোসেন, ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের হারুন অর রশীদ, ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের জাহাঙ্গীর আলম তোতা, ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের শাহাদৎ হোসেন এবং ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের সিরাজুল ইসলাম।

এছাড়া সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরদের মধ্যে ১ নম্বর ওয়ার্ডের দিলারা বেগম, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মনোয়ারা সুলতানা মলি, ১১ নম্বর ওয়ার্ডের ঝরনা খাতুন ও ১০ নম্বর ওয়ার্ডের সাজমিন রহমান শিউলি আওয়ামী লীগ ঘরানার।

জাতীয় পার্টির নির্বাচিত কাউন্সিলররা হলেন ১ নম্বর ওয়ার্ডের রফিকুল ইসলাম, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আশেক আলী, ২১ নম্বর ওয়ার্ডের মাহবুবুর রহমান মঞ্জু, ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের রেজওয়ান আল মেহেদী ও ৩১ নম্বর সামসুল হক।

বিএনপি থেকে নির্বাচিত কাউন্সিলররা হলেন ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নজরুল ইসলাম দেওয়ানী, ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের লিটন পারভেজ ও ১২ নম্বর ওয়ার্ডের মকবুল হোসেন।

এছাড়া জাসদ থেকে ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মোখলেছুর রহমান তরু এবং বাসদের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে মমদেল হোসেন সরকার নির্বাচিত হয়েছেন।

এদিকে স্বতন্ত্র কাউন্সিলরদের মধ্যে রয়েছেন ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আবু হাসান চঞ্চল, ৮ নম্বর ওয়ার্ডে আফছার আলী, ১০ নম্বর ওয়ার্ডে শাহ মো. কামরুজ্জামান, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে মাসুদ রানা, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে মাহমুদুর রহমান টিটু এবং ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে নুরুন্নবী ফুলু।

অন্যদিকে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরদের মধ্যে রয়েছেন ২ নম্বর ওয়ার্ডে সুলতানা পারভীন, ৩ নম্বর ওয়ার্ডে মোসলেমা বেগম, ৪ নম্বর ওয়ার্ডে শামীমা আক্তার, ৫ নম্বর ওয়ার্ডে মোছলেমা বেগম, ৬ নম্বর ওয়ার্ডে জাহেদা আনোয়ারী, ৭ নম্বর ওয়ার্ডে ফেরদৌসী বেগম এবং ৮ নম্বর ওয়ার্ডে হাসনা বানু।

রংপুর সিটি নির্বাচনের বেসরকারি ফলাফলে জাতীয় পার্টি মনোনীত লাঙ্গল মার্কার প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বিপুল ভোটে বিজয়ী হন। এক লাখ ৪৬ হাজার ৭৯৮ ভোট পেয়ে দ্বিতীয়বারের মতো রংপুরের নগরপিতার আসনে বসতে যাচ্ছেন তিনি।

মোস্তফার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী আমিরুজ্জামান পিয়াল হাতপাখা প্রতীক নিয়ে ৪৯ হাজার ৮৯২ ভোট পান। অন্যদিকে মোস্তফার চেয়ে ১ লাখ ২৪ হাজার ৪৯২ ভোট কম পেয়ে চতুর্থ হয়েছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া। যা জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তফার পাওয়া ভোটের চেয়ে সাড়ে ৬ গুণ কম।