কেউ এখন আর পুরনো কাপড় কেনে না: মতিয়া চৌধুরী

motia chowdhury
ফাইল ছবি

জাতীয় সংসদের উপনেতা ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, একসময় ঢাকার পুরোনো রেলস্টেশনের কাছে ও গুলিস্তানের দিকে বিরাট পুরোনো কাপড়ের মার্কেট ছিল। বিদেশিদের ওজন দরে বিক্রি করে দেওয়া পরিধেয় বস্ত্র সেখানে বিক্রি হত। সেখানে আর এই মার্কেট নেই। কেউ আর পুরোনো কাপড় কেনে না।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে শুক্রবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনার সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘জাতির পিতার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন: ভেঙেছ দুয়ার, এসেছ জ্যোতির্ময়’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে ছাত্রলীগ।

সাবেক মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, পাকিস্তানের সংসদে একজন সংসদ সদস্য বক্তব্য দিচ্ছিলেন তারা বর্তমান পাকিস্তানকে সুইজারল্যান্ড বানাবেন। আরেকজন সদস্য উঠে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, ‘মুঝে সুইজারল্যান্ড নেহি চাইয়ে, মুঝে বাংলাদেশ বানা দো।’ তিনি বলেন, এই খবরগুলো পড়ে তার মনে হয়, তিনি যদি মারাও যান, একজন রাজনৈতিক কর্মী, মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ও বঙ্গবন্ধুর একজন নগণ্য কর্মী হিসেবে তাঁর জীবনে আর কী চাওয়া-পাওয়া থাকতে পারে। বঙ্গবন্ধুর অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থানের প্রতিশ্রুতি তার কন্যার নেতৃত্বে তারা পরিপূর্ণ করতে পেরেছেন।

বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের স্মৃতিচারণ করে মতিয়া চৌধুরী বলেন, ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুকে বহনকারী বিমান যখন বিমানবন্দরে অবতরণ করে, সেদিন মানুষ বঙ্গবন্ধুকে একটু ছুঁয়ে দেখার উদ্দেশ্যে তাকিয়ে ছিল। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জনগণকে অনুরোধ করছিলেন বঙ্গবন্ধুকে বিমান থেকে নামতে জায়গা করে দেওয়ার জন্য। কিন্তু কে শুনে কার কথা। সবাই বঙ্গবন্ধুকে ছুঁয়ে দেখতে চেয়েছিলেন।

 

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানের কারাগারে অনেক নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। সেদিন বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘তোমরা আমাকে ফাঁসি দেবে আমি জানি কিন্তু আমার মৃতদেহ বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেবে।’ অবশেষে তিনি জ্যোতির্ময় হিসেবে আবির্ভূত হলেন বাংলার মাটিতে। কবির ভাষায় সেটিকে বলা যায়, ‘ভেঙেছ দুয়ার, এসেছ জ্যোতির্ময়, তোমারি হউক জয়।’ সেটিই ছিল যথার্থ উপমা।

মতিয়া চৌধুরী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা না হলে তিনি আধুনিক বাংলাদেশ বাস্তবায়িত করতে পারতেন। এ সময় তিনি আধুনিক ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সবাইকে শেখ হাসিনার পাশে থাকার আহ্বান জানান।

সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) ড. মুহাম্মদ সামাদ বলেন, বঙ্গবন্ধু পরিবারের অন্তহীন ত্যাগ-তিতিক্ষা ও কষ্টের বিষয়গুলো ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের জানা উচিত। এর থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত। বাংলাদেশের যা কিছু অর্জন, সব ক্ষেত্রেই বঙ্গবন্ধুর অবদান ছিল। বঙ্গবন্ধুর জীবনের সবচেয়ে বড় গুণ ছিল সততা, মহানুভবতা, গভীর দেশপ্রেম ও মানুষের প্রতি ভালোবাসা। তার মহাকাব্যিক আত্মজীবনী ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’, ‘কারাগারের রোজনামচা’ ও ‘আমার দেখা নয়াচীন’ বইগুলো ছেলেমেয়েদের অবশ্য পাঠ্য। এমন আত্মজীবনী পৃথিবীর ইতিহাসে খুব কম আছে।

আলোচনা সভায় সভাপ্রধান ছিলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন। তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষক বিএনপি-জামায়াতের বিষদাঁত আমাদের ভেঙে দিতে হবে। তাদের সমাবেশের নামে খুনিদের একত্র করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সংবিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রাজনীতি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাদের কাছে আমাদের সংবিধান গুরুত্বপূর্ণ নয়, গুরুত্বপূর্ণ বিদেশিদের ব্যবস্থাপত্র। ভোট নয়, তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ বাংলার মানুষের লাশ। ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে স্মার্ট বাংলাদেশের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ রায় দিয়ে তাদের রাজনৈতিক কবর বাংলার মাটিতে আমরা নিশ্চিত করব।’