গাড়ি নিয়ে গ্যাঁড়াকলে পড়েছি: হিরো আলম

হবিগঞ্জের স্কুল শিক্ষকের উপহার দেওয়া গাড়ি নিয়ে গ্যাঁড়াকলে পড়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন বগুড়ার দুই আসনে উপনির্বাচনে অংশ নিয়ে আলোচনায় আসা আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম।
হিরো আলমের দাবি, উপহারের গাড়ি হস্তান্তরের আগে ওই শিক্ষক গাড়ির ফিটনেস না থাকা ও ট্যাক্স বকেয়া থাকার বিষয়টি তাকে জানাননি। আর গাড়ি হস্তান্তরের সময় মানুষের ভিড়ে তার কাগজপত্র দেখার সুযোগ হয়নি। তবে উপহারের গাড়িটি ফেরত দেবেন না বলে জানিয়েছেন হিরো আলম।

হবিগঞ্জের স্কুল শিক্ষকের দেওয়া গাড়ি নিয়ে হিরো আলমকে কম ঝক্কি-ঝামেলা পোহাতে হয়নি। উপহারের গাড়ি নিতে বগুড়া যাওয়ার পথেই মামলা খেয়ে জরিমানা গুনতে হয় হিরো আলমকে। এরপর জানা যায়, টয়োটা নোয়াহ ১৯৯৮ মডেলের উপহার পাওয়া ওই গাড়িটির ফিটনেস সনদের মেয়াদ শেষ হয়েছে প্রায় ১০ বছর আগে।

এখানেই শেষ নয়, ওই গাড়ির ট্যাক্স দেওয়া হয়েছে সর্বশেষ ২০১৩ সালে। বর্তমানে ওই গাড়ির বিপরীতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) পাওনা প্রায় পাঁচ লাখ টাকা। হিরো আলমকে গাড়ি উপহার দেওয়া শিক্ষক এম মুখলিছুর রহমান এত দিন ওই গাড়িটি অবৈধভাবে চালিয়ে আসছিলেন।

বিআরটিএ পাবে ৫ লাখ টাকা, উপহারের গাড়ি নিয়ে বিপাকে হিরো আলম

এ বিষয়ে হিরো আলম বলেন, গাড়িটির কাগজপত্র নিয়ে যত জটিলতাই হোক, উপহারের গাড়ি ফেরত দেব না। ফেরত দিলে ওই শিক্ষককে অপমান ও ছোট করা হবে।

তিনি বলেন, গাড়িটি অ্যাম্বুলেন্স বানিয়ে গরিব মানুষের সেবায় ব্যবহারের ঘোষণা দিয়েছি। এখন গাড়িটি বৈধভাবে রাস্তায় চলাচল উপযোগী করতে যত টাকা লাগে, তা খরচ করতে রাজি আছি। তবে যেহেতু গাড়িটি অ্যাম্বুলেন্স হিসেবে ব্যবহার করা হবে, তাই বকেয়া মওকুফ চেয়ে বিআরটিএতে আবেদন করব।

আলোচিত এই ইউটিউবার আরও জানান, আগামী দু-এক দিনের মধ্যে গাড়িটিকে বগুড়ায় ওয়ার্কশপে নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স বানানোর কাজ শুরু করব। এর মাধ্যমে হিরো আলম ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম শুরু হবে।

বিএনপির ছেড়ে দেওয়া ছয়টি সংসদীয় আসনে গত ১ ফেব্রুয়ারি উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে বগুড়া-৬ ও বগুড়া-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেন আলোচিত আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম। এর মধ্যে বগুড়া-৪ আসনের আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় প্রার্থী রেজাউল করিম তানসেনের কাছে ৮৩৪ ভোটে পরাজিত হন হিরো আলম।

এদিকে উপনির্বাচনের আগের দিন ফেসবুক লাইভে এসে হিরো আলমকে গাড়ি উপহার দেওয়ার ঘোষণা দেন হবিগঞ্জের এক শিক্ষক। এরপর মঙ্গলবার হিরো আলম ওই গাড়ি নিতে হ‌বিগ‌ঞ্জে যান হিরো আলম। কিন্তু হবিগঞ্জ যাওয়ার প‌থেই হিরো আলম জ‌রিমানার মুখে পড়েন। হিরো আলমকে বহনকারী গা‌ড়ি‌টি নির্ধারিত গতির চেয়ে বেশি গতিতে চালানোর দায়ে শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশ তাকে জরিমানা করে।

হিরো আলমকে গাড়ি উপহার দেওয়া ওই শিক্ষকের নাম এম মুখলিছুর রহমান। তার বাড়ি হ‌বিগ‌ঞ্জের চুনারুঘাট উপ‌জেলার নরপ‌তি গ্রামে এবং তিনি চুনারুঘাট উপজেলার নরপতি গ্রামের হাজি আবদুল জব্বার জিএল একাডেমি অ্যান্ড হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

মুখলিছুর রহমান জানান, ২০১৮ সালে তিনি ৫ লাখ টাকা দিয়ে গাড়িটি কিনেছেন। এরপর থেকে তিনি গাড়িটি ব্যবহার করে আসছেন।

তিনি বলেন, গাড়িটির ফিটনেস সনদের মেয়াদ ২০১৩ সালের ১৫ জুলাই শেষ হয়েছে। আমি মেয়াদোত্তীর্ণ ফিটনেসে গাড়িটি ক্রয় করেছিলাম। এই গাড়ি নিয়ে চলাচলে আমার কখনও কোনো সমস্যা হয়নি।

এদিকে হিরো আলমের দাবি, গাড়িটি নেওয়ার আগে গাড়ির ফিটনেস সনদের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া এবং বিআরটিএর পাওনার বিষয়টি তিনি জানতেন না। গাড়িটি নেওয়ার পর কাগজপত্র যাচাই করতে গিয়ে তিনি বিষয়টি বুঝতে পারেন।