চাঁদা চেয়ে হুমকী দেওয়ায় ফেসবুক সন্ত্রাসী আনোয়ারুল কবীর গ্রেফতার

ফেসবুক পেজ ব্যবহার করে যশোর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলামের কাছে মাসে ৫০ হাজার টাকা ও নরেন্দ্রপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ এর কাছে ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করায় আনোয়ারুল কবীর নামে এক চাঁদাবাজ প্রতারকের বিরুদ্ধে কোতয়ালি থানায় আলাদা দু’টি চাঁদাবাজি মামলা হয়েছে। পুলিশ আনোয়ারুল কবীরকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করেছে। সে ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর থানার নাটিমা ইউনিয়নের ওই গ্রামের বর্তমানে ডিএমপি ঢাকা মিরপুর থানার ৯৪/৩ মধ্য পিরেরবাগ,শেওড়াপাড়া গ্রামের মৃত এরশাদ আলী মন্ডলের ছেলে। পুলিশ আনোয়ারুল কবীরকে যশোর আদালতে সোপর্দ করেছে।

একটি মামলায় যশোর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শহরের ঘোপ পিলু খান রোডের একেএম কাশেম আলীর ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলন উল্লেখ করেন, তার প্রতিপক্ষলা বিবাদী আনোয়ারুল কবীর (কবীর)কে প্রভাবিত করে বিবাদী আনোয়ারুল কবীর এর ফেসবুক আইডি যার প্রোফাইল নাম আনোরুল কবীর (কবীর) আইডি লিংক থেকে বাদির নামে গত ১০ মার্চ ভিত্তিহীন ও মানহানীকর তথ্য সংবলিত পোষ্ট আপলোড করে। তার লেখায় ৮৯ জন ব্যক্তি লাইক দেয়। বাঘারপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগ ফেসবুক পেইজ থেকে মানহানিকর কমেন্টেস লিখেছে। এছাড়া,খোরশেদ ও বাবলু নামীয় ফেসবুক আইডি থেকে লিখেছেন বাংলাদেশের রাজনীতিকরা অতিত ইতিহাস ভুলে যায়। তারা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয় না,যশোরের তথাকথিত দূর্নীতিবাজ নীতিহীন,আদর্শহীন, রাজনীতিকরা যতবড় ক্ষমতাধর হোকনা কেন হিসাব নিকাশ একদিন দুনিয়ায় দিয়ে যেতেই হবে। সেদিন বেশী দূরে নয় এরাসহ আরো তিনজন মানহানিকর কমেন্টেস করে। গত ২০ মার্চ তারিখ ভিত্তিহীন ও মানহানীকর তথ্য সংবলিত পোষ্ট আপলোড করে। তার লেখায় ৫৯জন ব্যক্তি লাইক দেয়। রিফাত আরেফিন, কমেন্টে লিখেছে। বাবলু মিয়া লিখেছেন যশোর আওয়ামীলীগ বলে আর কিছু নেই মনে হয়,সব আত্মীয় লীগসহ আরো তিন জন মানহানিকর কমেন্টেস করে। বিবাদী এ ধরনের পোষ্ট দেওয়ায় বাদি তাকে মোবাইল ফোনে একাধিক ফোন দেই। বিবাদী মোবাইল ফোন রিসিভ করে নাই।

গত ২১ মার্চ বেলা ১১ টার সময় বাদি যশোর জেলা আওয়ামীলীগের দলীয় কার্যালয়ের ভিতরে অবস্থানকালে বিবাদী আনোয়ারুল কবীর বাদিতে তার ব্যবহৃত হোয়াটস অ্যাপ মোবাইল নাম্বার হতে বাদীর ব্যবহৃত হোয়াইটসঅ্যাপ মোবাইল নাম্বারে কল দেয়। তখন বাদির কাছে দলীয় অনেক লোকজন ছিল। বিবাদীর ফোন পেয়ে বাদি লাউড স্পিকার দেই। বিবাদী আনোয়ারুল কবীর বাদিকে বলে আপনি একজন অকৃতজ্ঞ বেইমান লোক। আসামী বাদিকে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি হতে সাহায্য করেছিলাম। বিভিন্ন জায়গায় তদবীর করে আসামী বাদীকে সভাপতি বানিয়েছে। কিন্তু বাদি সভাপতি হয়ে আসামীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র শুরু করেছিলেন। ইতোমধ্যে দেখেছেন আসামী বাদীর সম্পর্কে বিভিন্ন মানহানিকর তথ্য দিয়ে জনসাধারনের মনে বাদির সম্পর্কে একটি বিরুপ ধারনা পোষন করতে সক্ষম। আসামী বলেন তার লেখা পড়ে না এমন কোন লোক নেই।

সামনে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাদি এমপি হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। আনোরুল কবীর বাদিকে বলেন তার ক্ষমতা সম্পর্কে অবগত আছেন। কিছু করলে তো কিছু করতে হয়। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়ার আগ পর্যন্ত বাদি আসামীকে প্রতিমাসে বাজার খরচ হিসেবে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। আসামী বলেন বাদি সম্পর্কে ফেসবুকে ভাল ভাল কথা লিখে জনসাধারনের কাছে বাদির গ্রহনযোগ্যতা বৃদ্ধি করে দিবে। আসামীর প্রস্তাবে রাজী না থাকলে দ্রুত জানানোর কথা বাদিকে বলেন। না হলে বাদির বিরুদ্ধে আসামী লিখতেই থাকবে বলে হুমকী দেয়। বাদির সামনে থাকা উপস্থিত দলীয় লোকজন আনোয়ারুল কবীরের চাঁদা চাওয়ার বক্তব্য শুনেছেন। আসামী ফেসবুক ব্যবহার করে চাঁদাদাবি করে আসছে। বাদির ৫ কোটি টাকার সুনাম ক্ষুন্ন করেছেন। তাছাড়া,গত ৯ এপ্রিল দুইটি এবং ২০২২ সালের ২১ নভেম্বর আরো একটি মানহানিকর পোষ্ট দেয়।

অপরদিকে, নরেন্দ্রপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাজু আহম্মেদ অপর মামলায় উল্লেখ করেন,আসামী আনোয়ারুল কবীর ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে বাদিকে হুমকী ধামকী ও মান সম্মান নষ্ট করার হাত থেকে বাঁচতে বাদির কাছে ৩লাখ টাকা চাঁদাদাবি করে। চাঁদার টাকা না পেলে বাদির মান সম্মান ক্ষুন্ন করার কথা ফেসবুক আইডিতে পোষ্ট করার হুমকী ধামকী অব্যাহত রাখায় রাজু আহম্মেদ বাদি হয়ে মামলা করেন। যশোর সাইবার ক্রাইমে কর্মরত এসআই অনুপম রায় চাঁদাবাজ আনোয়ারুল কবীরকে গ্রেফতার করে। বৃহস্পতিবার ২৫ মে তাকে আদালতে সোপর্দ করে।