অনলাইনে মনোনয়নপত্র: এনআইডি’র সঙ্গে মিলতে হবে প্রার্থীর চেহারা

ec vobon

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিলের ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট পোর্টালের মাধ্যমে প্রার্থীদের আবেদন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রার্থী, প্রস্তাবকারী ও সমর্থনকারীর চেহারা জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) ছবির সঙ্গে মিলতে হবে।

জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা-২০০৮ সংশোধন করে এমন বিধান এনেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এতে নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালার বিধি-৩, ৫ ও ৯ প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।

বিধি-৩ এর বিধানে আগে ফরম-১ পূরণ করে মনোনয়নপত্র দাখিল করার জন্য বলা ছিল। এখন সেখানে সরাসরির পাশপাশি অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিলের বিষয়টি আনা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, কোনো প্রার্থী বা প্রস্তাবকারী বা সমর্থনকারী বা প্রার্থীর প্রতিনিধি মনোনয়নপত্র দাখিলের নির্ধারিত তারিখের মধ্যে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসার বা সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কাছ থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে তা সরাসরি দাখিল করতে পারবেন। অথবা, অনলাইনে মনোনয়নপত্র পূরণ ও দাখিলের জন্য কোনো প্রার্থী বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন এর ওয়েবসাইটের সংশ্লিষ্ট লিংকে (পোর্টাল) প্রবেশ করে রেজিস্ট্রেশন করে মনোনয়নপত্র করতে পারবেন।

# অনলাইনের মাধ্যমে মনোনয়নপত্র দাখিলের ক্ষেত্রে পোর্টালে প্রবেশ করে জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর বা ভোটার নম্বর, মোবাইল নম্বর, ই-মেইল আইডি এবং নির্বাচনি এলাকার নম্বর ও নাম এন্ট্রি করে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হওয়ার পর ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড পাওয়া যাবে।

# জাতীয় পরিচয়পত্রের বায়োমেট্রিক ফিচারে সংরক্ষিত মুখাবয়ব তথ্যের সহিত প্রার্থী, প্রস্তাবকারী ও সমর্থনকারীর চেহারা শনাক্তকরণ (Facial Recognition) করতে হবে।

# কোনো প্রার্থী পোর্টালে প্রবেশ করে পর্যায়ক্রমে মনোনয়ন, ব্যক্তিগত তথ্যাদি ও হলফনামা সংক্রান্ত তথ্যাদি এন্ট্রি করবেন এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র (হলফনামা, আয়কর প্রদান সংক্রান্ত কাগজপত্র, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কর্তৃক মনোনয়ন সংক্রান্ত প্রত্যয়নপত্র ও সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রসহ) স্ক্যান করে Protable Document Format (পিডিএফ) আকারে সংযুক্ত করবেন। তবে শর্ত থাকে যে, স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে, সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি এলাকার এক শতাংশ ভোটারের সমর্থন সম্বলিত স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখের মধ্যে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসার বা সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কাছে সরাসরি দাখিল করতে হবে।

# প্রার্থী পোর্টালে রক্ষিত অনলাইন পেমেন্ট মেথড ব্যবহার করে জামানত বাবদ নির্ধারিত অর্থ প্রদান করার পর মনোনয়নপত্রটি দাখিল করতে হবে।

# রিটার্নিং অফিসার অনলাইনে প্রাপ্ত প্রত্যেকটি মনোনয়নপত্রে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সৃজিত বা প্রদত্ত ক্রমিক নম্বর অনুসারে ‘ফরম-১’ এর পঞ্চম খণ্ড অনুযায়ী মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের স্থান, তারিখ ও সময় নির্ধারণ করবেন এবং প্রাপ্তি স্বীকার রশিদ ও বাছাইয়ের নোটিশ অনলাইনে প্রার্থীকে প্রেরণ করবেন।

# মনোনয়নপত্র দাখিলের পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রার্থীর প্রদত্ত মোবাইল ফোনে মনোনয়নপত্র দাখিলের প্রাপ্তি স্বীকার, মনোনয়নপত্র বাছাই এর স্থান ও তারিখ, মনোনয়নপত্র বাছাই এর সিদ্ধান্ত, প্রার্থীতা প্রত্যাহার এবং প্রতীক বরাদ্দসহ সংশ্লিষ্ট তথ্যাদি পর্যায়ক্রমে এসএমএস এর মাধ্যমে প্রেরণ করা হবে এবং এই তথ্যাদি পোর্টালেও প্রদর্শিত হবে।

# রিটার্নিং অফিসার প্রয়োজনে অনলাইনে দাখিলকৃত মনোনয়নপত্র সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রাদির মূল কপি মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের নির্ধারিত দিনে তার কাছে দাখিল করার নির্দেশনা দিতে পারবেন।

এদিকে বিধিমালায় বিধি-৫-এর উপ-বিধি (১) প্রতিস্থাপন করে বলা হয়েছে, মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের পর রিটার্নিং অফিসারের যে কোনো সিদ্ধান্তে কোনো প্রার্থী বা কোনো ব্যাংক বা কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান সংক্ষুব্ধ হলে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের পরবর্তী ৫ (পাঁচ) দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশন বরাবর সংক্ষুব্ধ পক্ষ অথবা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি আপিল দায়ের করতে পারবেন। আগে এই সুযোগ কেবল প্রার্থীর বেলায় প্রযোজ্য ছিল। আর সময় দেওয়া হয়েছিল তিন দিন।

এছাড়া সংশোধিত বিধিমালায় ফরম-১ এর ৫(ক) প্রতিস্থাপন করে ১২ ডিজিটের টিআইএন নম্বরের সঙ্গে ‘আমার টিআইএন নম্বর এবং আমার সম্পদ বিবরণী সম্বলিত সর্বশেষ দাখিলকৃত আয়কর রিটার্ন দাখিলের প্রমাণ সংক্রান্ত কাগজপত্র এতদ্সঙ্গে সংযুক্ত করিলাম’ মর্মে ঘোষণাও দিতে বলা হয়েছে।

নির্বাচন কমিশন অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিলের জন্য পোর্টাল এবং অ্যাপ তৈরির কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। এই ব্যবস্থাটি ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত ব্যবহার করা যাবে। এজন্য প্রায় ২০ কোটির টাকার মতো ব্যয় হচ্ছে সংস্থাটির।