গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে (শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে এক হাজার ৫৫৮ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে এ বছর এখন পর্যন্ত ভর্তি রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে দুই লাখ ৫১ হাজার ১০১। এছাড়াও গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন আরও ১২ জন। তাদের মধ্যে ঢাকায় মৃত্যু হয়েছে আটজনের ও ঢাকার বাইরে চারজনের। এ নিয়ে চলতি বছর মৃত্যু দাঁড়াল এক হাজার ২২৬ জনে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ডেঙ্গু রোগীর এ সংখ্যা বাংলাদেশে এবারই এত বেশি। এর আগে গত ২০১৯ সালে সর্বোচ্চ এক লাখ এক হাজার ৩৫৪ রোগী ছিল। এরপর গত বছর রোগীর সংখ্যা ছিল ৬২ হাজার ৩৮২।
এ বছরের ২১ আগস্ট ডেঙ্গু রোগীর সর্বোচ্চ রেকর্ড গড়ে। সেদিন দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয় দুই হাজার ১৯৭ রোগী ও মোট রোগীর সংখ্যা আগের সব রেকর্ডকে ছাড়িয়ে এক লাখ দুই হাজার ১৯১ জনে পৌঁছায়। সেদিন পর্যন্ত মৃত্যু ছিল ৪৮৫ জন। এরপর রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে। বর্তমানে রোগী ও মৃত্যুর সর্বোচ্চ রেকর্ড চলছে বাংলাদেশে।
মোট রোগী বাড়ার পাশাপাশি এবার ঢাকার বাইরেও রোগী বৃদ্ধির সর্বোচ্চ রেকর্ড হয়েছে। শুক্রবার পর্যন্ত রোগীর ৬০ শতাংশের বেশি ঢাকার বাইরের। অর্থাৎ বর্তমানে ঢাকার বাইরে রোগী এক লাখ ৫৬ হাজার ৪৮৩ ও ঢাকায় ৯৪ হাজার ৬১৮ জন। এমনকি গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি রোগীর মধ্যে এক হাজার ৫৫৮ ঢাকার বাইরের। এক হাজার ১৩৪ জন ও ৪২৪ জন ছিল ঢাকায়। এ বছরের আগে ঢাকার বাইরে সর্বোচ্চ ৪৯ শতাংশ রোগী ছিল ২০১৯ সালে। এবারই প্রথম ঢাকার বাইরে রোগী সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যায়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আরও ১২ জন মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ঢাকায় মৃত্যু হয়েছে আটজনের ও ঢাকার বাইরে চারজনের। এ নিয়ে চলতি বছর মৃত্যু দাঁড়াল এক হাজার ২২৬ জনে। তাদের মধ্যে ঢাকায় মারা গেছে ৭৫৭ ও ঢাকার বাইরে ৪৬৯ জন। সে অনুপাতে ঢাকায় মৃত্যুহার শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ ও ঢাকার বাইরে শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, এবার দেশে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর প্রধান কারণ ‘ডেঙ্গু শক সিনড্রোম’। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিশ্লেষণ বলছে, ৭৪ শতাংশ মৃত্যু হচ্ছে ‘ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে’।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা ঢাকার বাইরে বেশি হতে দেখা যাচ্ছে। বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে মৃতদের মধ্যে ৭৭ শতাংশের মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে, ৯৩ শতাংশের মৃত্যু হয়েছে তিন দিনের মধ্যে। অন্যদিকে যারা মারা গেছেন, তাদের ৭৪ শতাংশ মারা গেছেন ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে।