যশোরে ভেজাল কারখানার অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে চানাচুর

যশোরে নাম মাত্র প্রতিষ্ঠান মদিনা ফুডে তৈরি হচ্ছে চানাচুর। তৈরির কারখানায় অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে নিম্নমানের ডালডা আর পোড়া তেল দিয়ে ভাজা কাপড়ের রং মিশিয়ে তৈরি হচ্ছে এসব শিশু চানাচুর।

সরেজমিনে শনিবার যশোর-খুলনা মহাসড়কের সন্ন্যাসী দিঘীর পাড় চাকলাদার তেল পাম্পের পাশে একটি বেড়ার চালার ভিতরে মদিনা ফুড চানাচুর কারখানায় গিয়ে এসব চিত্র দেখা গেছে।

এসব চানাচুর প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন দোকানসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে সরবরাহ করা হচ্ছে। সরবরাহকৃত এসব পণ্য সমূহ গ্রামের অসচেতন ভোক্তা ও সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়তই পরিবেশন করছে, ফলে বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি আক্রান্ত হচ্ছে মারাত্মক রোগব্যাধিতে।

সরেজমিনে আরো দেখা গেছে, বিভিন্ন দোকানে তাদের সরবরাহকৃত পণ্যসমূহের প্যাকেটে নেই কোন উৎপাদন ও মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ ও বিএসটিআইয়ের সিল।

এছাড়াও পণ্য তৈরীর খামির (ময়দা দিয়ে প্রক্রিয়াজাত করণ) রাখার ট্রের উপরে বসে-হাটাহাটি করে কাজ করছে শ্রমিকরা। শ্রমিকদের হাত থেকে শরীরের ঘাম পর্যন্ত মিশিয়ে পড়ছে এসব পণ্যে।

নিম্নমানের ডালডা ও পোড়া তেলে প্রতিদিন তৈরী করা হচ্ছে শত শত কেজি চানাচুর।

ময়লাযুক্ত পাত্রে উপকরণ সংরক্ষণ, দুর্গন্ধযুক্ত ট্রে এবং কাদাযুক্ত মেঝে, নন ব্রান্ডের লবন, ময়দা, তৈলসহ বিভিন্ন উপকরণ পাওয়া গেছে মদিনা চানাচুরের কারখানায়।

এছাড়াও তৈরিকৃত এইসব চানাচুর খোলা মেঝেতে রেখে শ্রমিক দ্বারা ধীরগতিতে প্যাকিং করা হয়। ফলে এসব পণ্যের প্যাকেটে অনেক সময় মৃত পিঁপড়ে, তেলাপোকা, টিকটিকি সহ বিভিন্ন ধরনের ময়লা পাওয়া যায়।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই বেকারির খাবার খেয়ে অনেক মানুষ আমাশয়সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এসব চানাচুরের সঙ্গে কীটপতঙ্গ থাকতে দেখা গেছে। আইন না মেনে তৈরি করা হচ্ছে চানাচুর। কোনো খাদ্যের প্যাকেটে মেয়াদোত্তীর্ণ তারিখ ও বিএসটিআই অনুমোদিত স্টিকার নেই।

স্থানীয় চা দোকানী বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। ফুটপাথে চা-পান বিক্রি করে কোনোমতে সংসার চালাই। বেকারির তৈরি এসব খাবার উৎপাদনের তারিখ দেখার সময় নাই। আর ক্রেতারা তো আর এসব জিজ্ঞেস করে না।’

বিএসটিআইয়ের অনুমোদন ও সংশ্লিষ্ট কোন ডকুমেন্টস এবং নোংরা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চানাচুর তৈরীর বিষয়ে মদিনা চানাচুর কারখানার মালিক রুবেল হোসেন বলেন, আমার কারখানার কোন লাইসেন্স নাই। আমি কারখানা ৫/৬ মাস হয়েছে দিয়েছি। সপ্তায়ে ২/৩ দিন চালায়। প্রোডাকশন তেমন নেই ভাল হলে লাইসেন্স করবো। তবে ট্রেড লাইসেন্স বানাতে দিয়েছি।

তিনি আরো জানান, স্থানীয় কথিত সাংবাদিক আলমঙ্গীর আমার পরিচিত। তিনি প্রায় আমার কারখানায় আসেন। তিনি বলেছেন কোন সমস্যা নেই আপনি কারখানা চালান। কোন সমস্যা হলে আমি দেখব।