কুমিল্লা-৬ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটি। নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠিত এ কমিটি বাহারের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমকর্মীর ওপর হামলার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার প্রেক্ষাপটে এ সুপারিশ করেছে।
অনুসন্ধান কমিটি তার সুপারিশে গণপ্রতিনিধিত্ব আইন (আরপিও) ও নির্বাচনি আচরণবিধির সংশ্লিষ্ট ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছে।
আরপিওর সংশ্লিষ্ট ধারামতে- এক বছর থেকে পাঁচ বছরের সাজা ও অর্থদণ্ড এবং নির্বাচনি আচরণবিধির অনুযায়ী- সর্বোচ্চ ছয় মাসের সাজা ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে।
অনুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, গত ২০ ডিসেম্বর আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের নির্বাচনি প্রচারণার সময় তারই উপস্থিতি ও নির্দেশে বেসরকারি টেলিভিশন একাত্তর টিভির রিপোর্টার ও ক্যামেরাম্যানের ওপর হামলা করা হয়। তাদের ডিভাইস ও মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়, উল্লেখিত অভিযোগ ও ঘটনাটি কমিটি সতর্কতার সঙ্গে অনুসন্ধান করেছে। অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে কমিটি ঘটনাস্থল সরেজমিন পরিদর্শন করেছে এবং ঘটনাস্থলে একাত্তর টেলিভিশনের নিজস্ব প্রতিবেদক কাজী এনামুল হক ফারুককেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এ অভিযোগ ও ঘটনা সংক্রান্তে নৌকা মার্কার প্রার্থী বাহাউদ্দিন বাহারকে অভিযোগের বিষয়ে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হলে তিনি তার স্বাক্ষরিত ব্যাখ্যা প্রতিনিধির মাধ্যমে দাখিল করেন।
লিখিত ব্যাখ্যায় নৌকা মার্কার প্রার্থী তার প্রতিপক্ষ স্বতন্ত্র প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমার সঙ্গে একাত্তর টেলিভিশনের নিজস্ব প্রতিবেদক কাজী এনামুল হক ফারুকের আত্মীয়তার সম্পর্কের বিষয় উল্লেখে তার মাধ্যমে মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে অপপ্রচার করছেন মর্মে দাবি করেছেন।
সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর নির্বাচনি প্রচারণার নিউজ কভারেজ ইস্যু নিয়ে ওই হামলার ঘটনা ঘটে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ঘটনায় বাহাউদ্দিন বাহারের এপিএস ইকবাল হোসেনসহ তার নেতাকর্মীরা জড়িত বলেও তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসে।
এছাড়া নির্বাচনি এলাকায় এক উঠান বৈঠকে ‘যদি বিএনপি এবং জামায়াতের কোনো কর্মীকে কোনো প্রার্থীর পক্ষে পাওয়া যায়, তার হাত-ঠ্যাং ভেঙে দেবেন আপনারা, আমি আ ক ম বাহাউদ্দিন আপনাদের সঙ্গে আছি’ মর্মে বক্তব্য দেন বাহাউদ্দিন বাহার। অনুসন্ধান কমিটি এ বক্তব্যকে আচরণবিধির লঙ্ঘন উল্লেখ করে একই ধরনের আইনানুগ ব্যবস্থারও সুপারিশ করেছে।
এর আগেও আচরণ বিধিমালা ভঙ্গের দায়ে চট্টগ্রাম-১৬ আসনের মোস্তাফিজুর রহমান এবং ঝিনাইদহ-১ আসনের আব্দুল হাইয়ের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ দিয়েছে ইসি।