ঠান্ডায় ত্বকের সুরক্ষা

ঠান্ডায় ত্বকের সুরক্ষা

 ঠান্ডায় ত্বকের সুরক্ষায় বাড়তি যত্নের প্রয়োজন

ঠান্ডায় ত্বকের সুরক্ষা ত্বকের যত্নের ক্ষেত্রে নবজাতক, শিশু, কিশোর থেকে শুরু করে প্রাপ্তবয়স্ক, প্রবীণ সবার প্রতি সব ঋতুতেই যত্নশীল হতে হয়।ঠান্ডায় ত্বকের সুরক্ষা তবে শীতকালে বাড়তি যত্নের প্রয়োজন হয়। ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখার জন্য এ সময় ময়েশ্চারাইজার জাতীয় প্রসাধনী ব্যবহার করতে হবে।

এগুলোর মধ্যে তেল, লোশন, জেল, সাদা পেট্রোলিয়াম জেলি ইত্যাদি বেশ পরিচিত। স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন মেনে চলতে হবে। শীতকালে যেন ঘনঘন প্রস্রাবের চাপ না আসে, তাই অনেকেই প্রয়োজনের তুলনায় কম পানি পান করে থাকেন। অথচ এ সময় পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে।

ঠান্ডায় ত্বকের সুরক্ষা রঙিন শাকসবজি ও তাজা ফলমূল খেতে হবে

শীতকালে শরীরে খোস-পাঁচড়া, দাদ, চুলকানি, খুশকি, চুলপড়া ইত্যাদি বেশি দেখা দেয়।ঠান্ডায় ত্বকের সুরক্ষা এ সময় মাথার ত্বকে ছত্রাক জাতীয় জীবাণুর সংক্রমণ বেশি দেখা যায়। তাই মাথার ত্বক পরিষ্কার রাখতে হবে। ত্বকের ধরন অনুযায়ী শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে। প্রয়োজনে কন্ডিশনারও ব্যবহার করতে হবে। শরীরের ত্বকের জন্য ত্বকের ধরনের অনুযায়ী ইমোলিয়েন্ট ব্যবহার করতে হবে।

অনেকেই মনে করে থাকেন শীতকালে তৈলাক্ত ত্বকে ময়েশ্চারাইজারের প্রয়োজন হয় না। স্বাভাবিক, মিশ্র, শুষ্ক, তৈলাক্ত, সব ধরনের ত্বকেই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। যে কোনো ধরনের চুলকানি থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে। ত্বকের যে কোনো ধরনের সমস্যা দেখা দিলে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ ও সেবা গ্রহণ করতে হবে।

ঠান্ডায় ত্বকের সুরক্ষা তবেই ত্বকের জন্য শীত মোকাবেলা সহজ হবে। শীতে ত্বকের খেয়ালের নানা দিক নিয়ে বলেছেন রেড বিউটি স্যালনের রূপ বিশেষজ্ঞ আফরোজা পারভীন, লিখেছেন জিনাত জোয়ার্দার রিপা।

ঠান্ডায় ত্বকের সুরক্ষা ময়েশ্চারাইজার

ত্বক ফাটার অন্যতম কারণ শুষ্কতা। এখন ত্বকে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা জরুরি।

অয়েল বেসড ময়েশ্চারাইজারে এই সময় বেশি উপকার পাওয়া যাবে। দিনে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। রাতের জন্য অয়েল বেসড নাইট ক্রিম লাগাতে পারেন। অ্যাভোকাডো অয়েল, মিনারেল অয়েল, রোজ অয়েল, আমন্ড অয়েল, শিয়া অয়েলসমৃদ্ধ ময়েশ্চারাইজার বেছে নিতে পারেন।
এতে ত্বক বেশি আর্দ্র ও কোমল থাকবে।
ঠোঁটের যত্ন

ঠান্ডায় ত্বকের সুরক্ষা ঠোঁটের ত্বক অনেক বেশি সংবেদনশীল ও স্পর্শকাতর। শীতের প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়ে ঠোঁটে। বাইরে বের হওয়ার আগে ঠোঁটে পেট্রোলিয়াম জাতীয় লিপবাম লাগিয়ে নিতে পারেন। অয়েল বেসড লিপস্টিকও ব্যবহার করতে পারেন।

শীতের জন্য আলাদা লিপস্টিকও পাওয়া যায়। এগুলো ঠোঁট ফাটা থেকে সুরক্ষা দেয়। ঠোঁট আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে। ঘুমানোর আগে ঠোঁটে লিপজেল দিতে পারেন।
হাত ও পা

মুখের ত্বক নিয়ে মানুষ যতটা সচেতন ততটা হাত-পায়ের ত্বকের বেলায় হতে দেখা যায় না। অথচ ঠোঁটের পর হাত ও পায়ের ত্বকই শীতে সবচেয়ে রুক্ষ হয়ে পড়ে। পায়ের গোড়ালিতে ফাটলও ধরে অনেকের। প্রতিবার হাত ও পা ধোয়ার পর গ্লিসারিন, পেট্রোলিয়াম জেলি বা ময়েশ্চারাইজার ক্রিম ব্যবহার করতে হবে। হাত-পা যখনই রুক্ষ মনে হবে তখনই লোশন লাগাতে হবে। পার্লারে গিয়ে ম্যানিকিউর-পেডিকিউরও করে আসতে পারেন। বাইরে থেকে বাড়ি ফিরেই হাত ও পা সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলার অভ্যাস করতে হবে।

ঠান্ডায় ত্বকের সুরক্ষা সানস্ক্রিন

অনেকের ধারণা রোদ না উঠলে শীতের দিনে বা মেঘলা দিনে সানস্ক্রিন ব্যবহারের দরকার নেই। ধারণাটি ভুল। গ্রীষ্ম, বর্ষা বা শীত সব সময়ই সূর্যরশ্মি ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। শীতেও ত্বকের সুরক্ষায় সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। বাইরে বেরোনোর কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে মুখে, হাতে এবং সূর্যের আলো সরাসরি এসে পড়ে শরীরের এমন স্থানে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে।

পানি পান

ঠান্ডায় ত্বকের সুরক্ষা শীতে পানি থেকে দূরে থাকতে চান অনেকে। শীতে সাধারণত পিপাসাও কম লাগে। এ জন্য পানি কম পান করা হয়। এতে ত্বক আরো বেশি রুক্ষ হয়ে ওঠে। আর্দ্র ত্বকের জন্য তো বটেই, শরীর সুস্থ রাখার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা জরুরি। শরীরে পানির অভাব হলে ত্বকে এর বিরূপ প্রভাব পড়ে। সকালে ঘুম থেকে উঠে এক গ্লাস উষ্ণ লেবুপানি পান করতে পারেন। এ ছাড়া বিভিন্ন ফলের রস, ডাবের পানি পান করতে পারেন। যাঁদের অ্যালার্জিজনিত সমস্যা আছে তাঁরা সুতি অথবা ফ্লানেল কাপড়ের জামা পরে তার ওপর উলের কাপড় পরতে পারেন। শীতে প্রতিদিন কিছুক্ষণ রোদে থাকা দরকার। এতে শরীর পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ‘ডি’ পাবে। ভিটামিন ‘ডি’ ত্বককে সুন্দর ও মসৃণ করে এবং বার্ধক্য রোধ করে।

লেখক : মেডিকেল অফিসার, চর্ম ও যৌন রোগ বিভাগ, প্রবীণ হাসপাতাল।