যশোরে চাকুরী দেওয়ার প্রলোভনে ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ায় আদালতে মামলা

যশোরে জাকির হোসেন নামে ব্যক্তি এক শিক্ষিত যুবককে পরিবার পরিকল্পনা ইউনিয়ন পরিদর্শক পদে চাকুরী দেওয়ার লোভ দেখিয়ে ১০লাখ টাকা টাকা নিয়ে চাকরি না দিয়ে প্রতারণা করে চলেছে। ১০ লাখ টাকা আত্মসাৎকারি জাকির হোসেন সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া থানার হিজালদি গ্রামের বাসিন্দা। তিনি বর্তমানে যশোর শহরের পুলিশ লাইন কদমতলা বর্ণমালা কোচিং সেন্টারের পাশে শরাফত এর বাড়ির ভাড়াটিয়া ও ইসলামের ছেলে। প্রতারণা শিকার ও চাকুরী না পেয়ে শিক্ষিত যুবক যশোর সদর উপজেলার রুপদিয়া গ্রামের মোবারক গাজীর ছেলে আকবার আলী যশোর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ( আমলী সদর) আদালতে অভিযোগ দায়ের করলে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার দালাল অভিযোগটি সি,আর রেজিষ্ট্রাওে এন্ট্রি করে তা তদন্ত পূর্বক জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)’র অফিসার ইনচার্জকে তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দালিখের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)’র এসআই সোলায়মান আক্কাস তদন্তে নেমে সত্যতা পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন এ বিষয়ে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের প্রস্তুতি গ্রহন করা হচ্ছে। যার সি,আর মামলা নং ১৯৩৭/২৩, তাং ৩০/০৮/২৩ইং ধারা ৪০৬/৪২০ দন্ড বিধি।

আদালতে মামলায় শিক্ষিত যুবক আকবার আলী উল্লেখ করেন, বাদি একজন সহজ,সরল শিক্ষিত বেকার যুবক। আসামী জাকির হোসেন প্রতারক ও বিশ^াস ভঙ্গকারী। বাদির বোন ফিরোজা বেগম ঘটনার সাক্ষী যশোরের শার্শা উপজেলার রুদ্রপুর গ্রামের উসমান আলীর ছেলে কামাল হোসেন যশোর সদরের মাহিদিয়া সম্মিলনী ফাজিল মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন। সেই সুবাদে বাদির সাথে কামাল হোসেনের পূর্বপরিচিত। বাদি অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রীধারী বেকার যুবক হওয়ায় চাকুরীর সন্ধান করেন। কামাল হোসেনের মাধ্যমে আসামী জাকির হোসেনের সাথে বাদি আকবার আলীর পরিচয় হয়। আসামী বাদিকে জানায়, পরিবার পরিকল্পনা ইউনিয়ন পরিদর্শক পদে বেশ কিছু লোক নিয়োগ দেওয়া হবে। তার ভাল যোগাযোগ রয়েছে। বাদিকে উক্ত পদে নিয়োগ ও চাকুরী দিতে পারবে বলে জাকির হোসেন জানায়।

উক্ত পদে নিয়োগ লাভের জন্য ১৫লাখ টাকা জামানত হিসেবে জমা দিতে হবে। প্রথমে ১০লাখ টাকা এবং ভাইবা ও মৌখিক পরীক্ষার আগে বাকী ৫লাখ টাকা জমা দিতে হবে। বাদি তার বোন এবং শ^শুর শাশুরীকে জানালে তারা সম্মত হন। বাদি আসামীর কথামতো পরিবার পরিকল্পনা ইউনিয়ন পরিদর্শক পদে চাকুরীর জন্য অনলাইনে আবেদন করে। বাদি তার সংগ্রহ করা সাড়ে ৪লাখ টাকা ও বোন রেহেনা পারভীনের কাছ থেকে সাড়ে ৩লাখ টাকা এবং শ^শুরের দেওয়া ২লাখ টাকা মোট ১০ লাখ টাকা সংগ্রহ করে বাদি আসামীকে মোবাইল ফোনে সংবাদ দেয়। পরে বাদির শ^শুর বাড়ির অর্থাৎ অভিযোগের ১নং সাক্ষী আব্দুল মোমিনের বাড়িতে আসতে বলে। প্রতারক জাকির হোসেন গত ২০২১ সালের ১০ সেপ্টেম্বও রাত ৯ টায় বাদির শ^শুরের বাড়িতে এসে বাদির নিকট হতে ১০লাখ টাকা গুনে বুঝে সাক্ষীদের সামনে অঙ্গীকার করে যে, ৬ মাসের মধ্যে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন হবে এবং বাদি নিয়োগ পাবে। ৬মাস অতিবাহিত হওয়ার পর আসামী বাদিকে জানায় যে,করোনার কারণে নিয়োগ বন্ধ আছে। অতি শিঘ্রই নিয়োগ অনুষ্ঠিত হবে। পরবর্তীতে গত ৩০/১২/২২ সালের নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। তার পরও বাদিকে নিয়োগ দিতে না পারায় বাদি তার টাকা ফেরত চাই।

আসামী টাকা ফেরত না দিয়ে তালবাহনা করে সময় ক্ষেপন করতে থাকে। সর্বশেষ আসামীকে সংবাদ দিলে গত ২৫ আগষ্ট বিকাল ৫ টায় আসামী বাদির বাড়িতে আসলে বাদি উপস্থিত সাক্ষীদেও সামনে তার পাওনা জামানতের ১০লাখ টাকা ফেরত চাইলে আসামী বাদিকে উক্ত টাকা ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানায়। বাদী ও সাক্ষীদের অনুরোধ উপেক্ষা করে চলে যায়। আসামী বাদির অর্থ আত্মসাত করার দুরভিসন্ধি গোপন করে বাদির মনে সরল বিশ্বাস স্থাপন করে পরিবার পরিকল্পনা ইউনিয়ন পরিদর্শক পদে নিয়োগের আশ্বাস দিয়ে কথিত জামানতের কথা বলে বাদির কাছ থেকে ১০লাখ টাকা গ্রহন কওে উক্ত টাকা বাদিকে ফেরত না দিয়ে অপরাধ জনক বিশ্বাস ভঙ্গ ও প্রতারনা মূলকভাবে আত্মসাত করেছে।

তদন্তে নেমে জেলা গোয়েন্দা শাখা ডিবি পুলিশ জানতে পারেন জাকির হোসেন যশোর সিটি কলেজে ইংরেজী বিভাগের শিক্ষক। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত জাকির হোসেনের সাথে তার মুঠো ফোনে ০১৭২৬৩৬৮৮২২ নাম্বারে প্রতিবেদক ঘটনার ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তিনি টাকা লেনদেনের বিষয় সম্পূর্ন অস্বীকার করে বলেন ,এসব খবর মিথ্যে ভুয়া আমি কোন টাকা পয়সা কারোর কাছ থেকে নেয়নি।