ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ফুরসন্দি ইউনিয়নের দিঘিরপাড় গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ও তাণ্ডবের পর সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। প্রাণ বাঁচাতে অন্তত অর্ধশতাধিক পরিবার তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছেন। এই সুযোগে ফাঁকা বাড়িগুলোতে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সংঘর্ষে দুইজন নিহত হওয়ার পর থেকে নিহতদের অনুসারীরা প্রতিশোধের নেশায় নিরীহ গ্রামবাসীদের বাড়িঘরে হামলা চালাচ্ছে। সংঘবদ্ধ দুর্বৃত্তরা আসবাবপত্র ভাঙচুর করছে এবং ঘরের মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। এমনকি গৃহপালিত পশু যেমন গরু ও ছাগলও জোরপূর্বক ছিনিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তারা।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আলিম উদ্দিন, নায়েব আলী ও শহিদুল ইসলাম ওরফে সাইদুল সুরীর প্রত্যক্ষ মদদে এই হামলা ও লুটপাট চলছে। হামলায় অংশ নেওয়া অন্যান্যদের মধ্যে মজিদ সর্দার, মস্ত সর্দার, রুবেল, মারুফ, আতর বিশ্বাস, সবেদ আলী, বিল্লাল মোল্লা, মাজেদ বিশ্বাস, সাইদুল বিশ্বাস, মিহির বিশ্বাস, সামারুল বিশ্বাস, সোহান বিশ্বাস, বল্টু, সাহেব বিশ্বাস, শিমুল বিশ্বাস, টিকারী গ্রামের শিপন, রিয়াজ ওরফে চন্নু এবং বনকুমড়া এলাকার ইমরোজের নাম উঠে এসেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর দাবি, গ্রামের পরিস্থিতি বর্তমানে অত্যন্ত ভয়াবহ ও অস্থিতিশীল। নারী ও শিশুসহ বহু পরিবার নিরাপত্তাহীনতার কারণে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। অথচ প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ তাদের।
একাধিক পরিবার আরও অভিযোগ করে বলেন, যারা নিরীহ, তারা এখনও হামলা ও গ্রেফতারের ভয়ে নিজেদের বাড়িতে ফিরতে পারছেন না। অন্যদিকে, প্রতিপক্ষরা নির্বিঘ্নে লুটপাট ও তাণ্ডব চালালেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যাচ্ছে না।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কোনো প্রকার লুটপাট বা ভাঙচুর রোধে পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।