‘ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে বাংলাদেশই এগিয়ে’

mominulস্পোর্টস ডেস্ক: টেস্ট স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যানের তকমা খুব ভালভাবেই সেঁটে গেছে মুমিনুল হক সৌরভের সঙ্গে। রঙিন পোশাকে তিনি শেষ ওয়ানডে খেলেছেন ২০১৫তে। তারও এক বছর আগে খেলেছেন টি-টোয়েন্টি ফরমেটে। এবারো আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি দলে জায়গা হয়নি। তবে সামনেই আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে টেস্ট মিশন। তাই প্রস্তুতি সেরে নিচ্ছেন বেশ ভালভাবেই।

জাতীয় দলের প্রধান কোচ নেই। নেই বিশেষজ্ঞ ব্যাটিং কোচও। তাই নিজেদের উদ্যোগেই ব্যাটিং নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে টাইগারদের। অবশ্য এজন্য মুমিনুলের অন্যতম ভরসা কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। স্বদেশি এই কোচের কাছেই ক্যারিবীয় সফরের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছেন তিনি। অবশ্য যখনই তার সমস্যা তখনই ছুটে যান ছোট বেলার এ কোচের কাছে।

গতকাল অনুশীলনের ফাঁকে বিশেষজ্ঞ ব্যাটিং কোচের অভাব নিয়ে মুমিনুল হক বলেন, ‘আপনারা তো জানেন, আমার কোনো সমস্যা হলে আমি সালাউদ্দিন স্যারের কাছে যাই। উনি সমাধান করে দেন। ছোটবেলা থেকে দেখছেন, ছোটখাটো সমস্যা দেখলেই বুঝতে পারেন। তো ওটার জন্য (ব্যাটিং কোচ না থাকা) আমার খুব বেশি সমস্যা হয় না। বিদেশি কোচ থাকলেও সালাউদ্দিন স্যারের কাছে যাই। কারণ উনি আমাকে সেই ক্লাস সেভেন থেকে দেখছেন। তাই আমার সমস্যাগুলো দ্রুতই ধরতে পারেন।’

ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে টেস্ট চ্যালেঞ্জ নিতে হবে মুমিনুলদের। যদিও এ সফরের আগেই বিদেশি কোচ আসবে বলে নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এরপরও বিশেষজ্ঞ বিদেশি কোচ ছাড়া কতটা ভালো প্রস্তুতি সম্ভব তা নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন। তবে মুমিনুলের ভাবনা ভিন্ন। তিনি বলেন, ‘আপনি যদি মনে করেন আপনার ব্যাটিং কোচ নাই, তাহলে আপনি ওই জায়গায় পড়ে থাকবেন। এভাবে চিন্তা না করে যার যেখানে সমস্যা তা নিয়ে কাজ করতে হবে। অন্তত সবাই জানে কার কী সমস্যা। আগের ট্যুরে যে ভুলটা ছিল আমার, ওইটা ঠিক করতে পারলে ওভারকাম করতে পারবো এবং ভালো খেলা সম্ভব।’

সীমিত ওভারের ফরমেটে খেলার সুযোগ না থাকায় মুমিনুলকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মাঠে নামার জন্য লম্বা অপেক্ষা করতে হয়। টেস্ট সিরিজ আসলেই তাই তিনি রোমাঞ্চিত থাকেন মাঠে নামার জন্য। গত জানুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টেস্টে করেছিলেন জোড়া সেঞ্চুরি। এরপর কেটে গেছে আরো পাঁচ মাস। সব কিছু ঠিক থাকলে জুলাইয়ে তিনি ক্যারিবীয় সফরে টেস্টের ভরসা হয়ে মাঠে নামবেন।

এ বিষয়ে মুমিনুল বলেন, ‘রোমাঞ্চিত অবশ্যই। ভালো খেলার তাগিদ আছে। দলের জন্য কিছু করার তাগিদ আছে। প্রস্তুতি নিচ্ছি। ইনশাআল্লাহ ভালো কিছু হবে। প্রতিটি ম্যাচে চেষ্টা করি যে দলের জন্য যতটুকু অবদান রাখা যায়। সেটা ৫০ শতাংশ হোক বা ৭০ শতাংশ কিংবা আরো বেশি। চেষ্টা করি অবদানের হার বাড়ানোর। সেই চেষ্টাই থাকবে।’ কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে তাদের মাটিতে লড়াই ভিন্ন কন্ডিশনে কতটা সহজ হবে! দুই দলের লড়াই দেশের সেরা এ টেস্ট ব্যাটসম্যান এগিয়ে রাখলেন নিজেদেরই। তিনি বলেন, ‘টেস্টে আমার কাছে মনে হয় আমরা একটু এগিয়ে আছি। আমাদের যারা আছেন, পাঁচ-ছয়জন সিনিয়র আছেন, অনেকদিন থেকে খেলছেন। অনেক ভালো পারফর্ম করছেন। ওদের তুলনায় আমরা অনেক ভালো, আমার মনে হয়।’

এরই মধ্যে বাংলাদেশ দল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে টপকে প্রথমবারের মতো টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ে ৮ এ উঠে এসেছে। তারপরও ক্যারিয়বীয়দের কন্ডিশনে চ্যালেঞ্জ নেয়ার মতো কতটা সক্ষমতা আছে টাইগারদের তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। কারণ বিশেষ করে টেস্টে বিদেশের মাটিতে সফলতা অনেকটা সোনার হরিণের মতোই। তবে মুমিনুল মনে করেন এজন্য দলের প্রতিটি ক্রিকেটারকে মানসিকভাবে দৃঢ় হতে হবে। এটাই মন্ত্র হবে সামনে এগিয়ে যাওয়ার।

তিনি বলেন, ‘দেখেন র‌্যাঙ্কিং নিয়ে ভাবছি না। আমাদের যদি সেখানে ভালো খেলতে হয় অবশ্য শক্ত থাকতে হবে। কন্ডিশনের চ্যালেঞ্জ উতরাতে হলে মানসিক দৃঢ়তা ছাড়া কোনোভাবেই লড়াই সম্ভব নয়।’