ফিল্টার বিড়ির ওপর প্রস্তাবিত ২৫ শতাংশ কর প্রত্যাহারের দাবি

38ডেস্ক রিপোর্ট: বাংলাদেশ বিড়ি শিল্প মালিক সমিতির সহসভাপতি ও রংপুরের গফুর বিড়ি ফ্যক্টরির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাদের হোসেন বলেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা বিড়ির ওপর কোনো ধরনের ট্যাক্স বসাতে চাননি। একটি বিদেশি কোম্পানি (ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো) ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড যোগসাজশ করে ফিল্টার বিড়িতে ২৫ শতাংশ কর বসিয়েছেন। আগামী ২৯ জুন বাজেট চূড়ান্ত করার আগে এই ট্যাক্স প্রত্যাহার করতে হবে।

সোমবার সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স রুমে বাংলাদেশ বিড়ি শিল্প মালিক সমিতি আয়োজিত বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি বিজয় কৃষ্ণ দের স্বাক্ষরিত বক্তব্যে এই দাবি করেন তিনি।

নাদের হোসেন বলেন, দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বিড়ি শিল্পের ওপরে শতভাগ ট্যাক্স বৃদ্ধি করে ইতিহাস ভঙ্গ করেছিলেন অর্থমন্ত্রী। এই ঘানি বিড়ি শিল্প মালিকদের বহু বছর ধরে টানতে হবে। প্রস্তাবিত বাজেটে বিড়ির মূল্যস্তর ১২ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৫ টাকা করেছেন। অথচ গত ২০ মে বিড়ি মালিক সমিতির সঙ্গে বৈঠকে অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন তিনি বিড়ির ওপর কর বৃদ্ধি করবেন না। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে প্রতি হাজারে রাজস্ব ছিল ৩৩৬ টাকা প্রস্তাবিত বাজেটে তিনি তা বাড়িয়ে করেছেন ৪২০ টাকা। বিড়ির ওপর রাজস্ব বাড়িয়েছে ২৫ শতাংশ বা ৮৪ টাকা।

তিনি আরও বলেন, কম দামি সিগারেটের মূল্য প্রস্তাবিত বাজেটে ৩ টাকা কমানো হয়েছে। আর অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে সম্পূরক শুল্ক। বেশি দামি সিগারেটের সম্পূরক শুল্ক মোটেও বাড়ানো হয়নি। অর্থমন্ত্রীর এসব সিদ্ধান্তের ফলে দেশীয় কুটির শিল্পটি ধ্বংস হয়ে যাবে। বেকার হবে লাখ লাখ শ্রমিক। প্রস্তাবিত বাজেটে বিড়ি ও দেশীয় সিগারেট শিল্পের কোনো নিরাপত্তা দেয়া হয়নি বরং ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানির সিগারেটের দাম কমানো হয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে দেশীয় বিড়ি সিগারেটের বাজার বহুজাতিক কোম্পানির হাতে তুলে দেয়ার জন্য সুক্ষ্ম চক্রান্তের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বলে আমরা মনে করি। বিড়ি সিগারেট সমজাতীয় পণ্য হওয়া সত্ত্বেও বিড়ি শিল্পকে কম সময় দেয়ার ঘোষণায় চরম পক্ষপাতমূলক আচরণের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে প্রস্তাবিত বাজেটে।

সংবাদ সম্মেলনে ৪ দফা দাবি জানান বাংলাদেশ বিড়ি শিল্প মালিক সমিতির নেতারা। দাবিগুলো হলো: ক. প্রস্তাবিত বাজেটে বিড়ির ওপর আরোপিত মূল্যস্তর প্রত্যাহার করতে হবে। খ. বিগত অর্থবছরের মতো বহুজাতিক কোম্পানির জন্য আলাদা বিশেষ একটি স্লাব অব্যাহত রাখতে হবে। যার ফলে দেশীয় সিগারেট ও বিড়ি শিল্প রক্ষা পাবে। গ. বাংলাদেশে সিগারেট যত দিন থাকবে, বিড়ি শিল্প তত দিন থাকবে, অথার্ৎ বিড়ি শিল্পকেও সিগারেটের মতো ২০৪০ সাল পর্যন্ত সময় দিতে হবে। ঘ. প্রস্তাবিত বাজেটে বিড়িকে ভারতের মতো করারোপ করা এবং কুটির শিল্প ঘোষণা দিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, আকিজ বিড়ি ফ্যাক্টরির মহাব্যবস্থাপক ও মালিক প্রতিনিধি কাজী আনোয়ারুল ইসলাম, বাংলাদেশ বিড়ি শিল্প মালিক সমিতির সমন্বয়কারী আলী সাদাত খান মজলিস, বাংলাদেশ বিড়ি শিল্প মালিক সমিতির সাংগঠনিক ও ভৈরবের স্বাধীন বিড়ির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা কামাল, বাংলাদেশ বিড়ি শিল্প মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ভৈরবের পঁচা বিড়ি চেয়ারম্যান হাজী আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ বিড়ি শিল্প মালিক সমিতির সদস্য ও নরসিংদীর ঝর্না বিড়ির পরিচালক সামসুল হক, বিড়ি শিল্প মালিক সমিতির সদস্য ও নরসিংদির আনোয়ার বিড়ির পরিচালক আতাউর রহমান প্রমুখ।