বেনাপোল কাস্টমসে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ৫ হাজার ৪৮৩ কোটি টাকা

benapoleবেনাপোল প্রতিনিধি: বেনাপোল স্থল বন্দরের ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আমদানি পণ্য থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কাস্টমস হাউজকে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করেছেন ৫ হাজার ৪৮৩ কোটি টাকা। যা গত অর্থবছরের চেয়ে প্রায় ১২শ কোটি টাকা বেশি।

বেনাপোল কাস্টমস হাউজের পরিসংখ্যন সহকারী মাহবুব হোসেন লক্ষমাত্রা নির্ধারনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এর আগে গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বেনাপোল বন্দরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৪ হাজার ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ টাকার বিপরীতে আদায় হয়েছে ৪ হাজার ১৬ কোটি ২৪ লাখ টাকা। এতে ঘাটতি ছিল ১৭৯ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। এসময় ভারত থেকে আমদানি হয়েছে ১৮ লাখ ২ হাজার ২৮৪ মেট্রিক টন বিভিন্ন ধরনের পণ্য।

এদিকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে বাণিজ্যেরে ক্ষেত্রে বৈধ সুবিধা নিশ্চিত করতে না পারলে এবারও লক্ষ্যমাত্রা অর্জন অনিশ্চিত হবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের কাস্টমস বিষয়ক সম্পাদক নাসির উদ্দিন বলেন, বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বেনাপোল বন্দরের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি হলেও এখানকার অবকাঠামো উন্নয়ন ও অনিয়ম নিয়ে সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় চরম হতাশার মধ্যে রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। অন্য বন্দরের চেয়ে বেনাপোল বন্দরে আমদানি পণ্যে অতিরিক্ত মূল্যে শুল্কায়নের কারণে এপথে আমদানি কমছে।

‘সরকারি রাজস্ব পরিষদের ক্ষেত্রে নিরাপত্তায় কাস্টমস অভ্যান্তরে দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংক বুথ স্থাপনের দাবি থাকলেও আজ পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন হয়নি। দ্রুত আমদানি পণ্য ছাড়করণে বিভিন্ন সময় সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষ কাস্টমসে আমদানি পণ্য পরীক্ষাগার (ল্যাবরেটরি) স্থাপনের কথা বললেও এখন পর্যন্ত স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়নি। এতে বাইরে থেকে অনেক পণ্যের রিপোর্ট করাতে দীর্ঘদিন লেগে যায়। ফলে শিল্প-কারখানায় উৎপাদন কাজ যেমন ব্যাহত হয় তেমনি ব্যবসায়ীরাও চরমভাবে লোকসানের শিকার হন।’

আমদানিকারক ফজের আলী জানান, কাস্টমসের অযথা হয়রানি, টেবিলে ঘুষ আর বন্দরে নিরাপত্তা সমস্যার কারণে গতবার রাজস্ব আদায়ে বাধা সৃষ্টি হয়েছে। এবার এসব সমস্যা সমাধান করতে না পারলে রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন অনিশ্চিত হবে।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, বন্দরের উন্নয়নের চিত্র প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। যা আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে মারাত্মভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। এতে এপথে বাণিজ্যে আগ্রহ হারাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। বাণিজ্য বাড়াতে উন্নয়নের বিকল্প নেই।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের বন্দর বিষয়ক সম্পাদক নাজিম উদ্দিন বলেন, গত দু’দশকে বেনাপোল বন্দরে আটটি অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ব্যবসায়ীরা শত শত কোটি টাকা লোকসানের শিকার হয়েছেন। এসব ঘটনায় ক্ষতিপূরণ না পেয়ে অনেকের ব্যবসা বন্ধ হয়েছে। এপথে আমদানি বাণিজ্যের গতিশীলতা বাড়াতে হলে পণ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

বেনাপোল বন্দর পরিচালক (ট্রাফিক) আমিনুল ইসলাম বলেন, বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়নে নতুন জায়গা অধিগ্রহন ও আমদানি পণ্যের নিরাপত্তায় সিসি ক্যামেরা স্থাপনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। এছাড়া বন্দরে অগ্নিকান্ডের ঘটনা এড়াতে কেমিক্যাল ও রাসয়নিক পণ্য বন্দরে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে স্ক্যানিং ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এতে আগামীতে আশা করা যাচ্ছে অগ্নিকান্ডের ঘটনা যেমন কমবে, তেমনি আমদানি বৃদ্ধির সঙ্গে রাজস্ব আয়ও বাড়বে।