যশোরে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ শুরু

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর: জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০১৮ যশোরে শুরু হয়েছে। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ডিএফও) ড.শেখ শফিকুর রহমান প্রথম দিনে বুধবার প্রেসক্লাব যশোরে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেছেন।

jessore newsএসময় উপস্থিত ছিলেন যশোর জেলা হ্যাচারী মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব ফিরোজ খান, বৃহত্তর যশোর জেলার মৎস্য চাষ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক হরেন্দ্রনাথ সরকার, জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের সিনিয়র সহকারী পরিচালক, আক্তার উদ্দীন, প্রেসক্লাব যশোরের সাধারন সম্পাদক তৌহিদুর রহমান প্রমুখ।

যশোর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ডিএফও) ড.শেখ শফিকুর রহমান বলেন, প্রাকৃতিক উৎসের মাছে বাংলাদেশ এখন তৃতীয়। প্রথম চীন ও দ্বিতীয় ভারতের পরেই বাংলাদেশ এটি সেরা অর্জন। স্থানীয় পর্যায়ে দেশী স্বাদের অন্যতম সেরা মাছ পাবদা, গুলসা, টেংরা, দেশী মাগুর শোল মাছ চাষ হচ্ছে। আর যশোরে ৫০টি হ্যাচারী চালু রয়েছে। রয়েছে চারটি মাছের খাদ্য কারখানা। যশোরে চলতি মৎস্য সপ্তাহের বড় অর্জন রাষ্ট্রীয় স্বর্নপদক ও রোপ্য পদক জয়। গুনগত মাছের পোনা উৎপাদনের সফলতায় যশোরের শার্শা উপজেলার হরিনপোতার আফিল এ্যাকুয়া ফিশ লি.এর প্রোপাইটার হিসেবে শেখ আফিল উদ্দিন এমপি রাষ্ট্রীয় স্বর্নপদক বিজয়ী হয়েছেন। এছাড়া মৎস্য ও মৎস্যজাত পন্য রপ্তানীকরনের সফলতায় রাষ্ট্রীয় রোপ্য পদক অর্জন করেছেন এম ইউ সি ফুডস লি. এর প্রোপাইটর শ্যামল দাস। তার প্রতিষ্টানটি বালিয়াডাঙ্গাস্থ বিসিকে অবস্থিত।

তিনি আরো জানান, প্রায় ২৮ লাখ জনবসতির যশোরে মাছের ঘাটতি নেই। ৬০,৫৪৪ মে.টন চাহিদার বিপরীতে এখানে মাছ উৎপাদন হয়েছে ২,৩৬,৪২০ মে.টন। অর্থাৎ উদ্ধৃত ১,৭৫,৮৭৬ মে.টন মাছ দেশের বিভিন্ন স্থানে বা বিদেশে সরবরাহ করা হয়েছে। এখানে মোট জলাশয়ের পরিমান ৭৫,৪৮৪.৪০ হেক্টর। মোট মাছ চাষী ৮৬,৬৬৭ জন। এছাড়া নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ১৫,৭৬৪ জন। হ্যাচারি গুলোতে ৭০.৩৩ মে.টন রেনু উৎপাদন হয়েছে। চিংড়ী উৎপাদন হয়েছে ৬,৯৬৫ মে.টন। হ্যা এসবই ২০১৭ সালের পরিসংখ্যান। দেশের সবৃ বৃহৎ বেনাপোল স্থল বন্দর দিয়ে ২,৪১৯ মে.টন মাছ রপ্তানী হয়েছে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ডিএফও) ড.শেখ শফিকুর রহমান আরো জানান, আগামী ২০,২১ এবং ২২ জুলাই চাঁচড়ার সব্জীবাগ ও লুলু হ্যাচারিতে চলতি মৎস্য সপ্তাহের মৎস্য মেলার আয়োজন করা হয়েছে। ১৯৯৫ সালে যশোরে মৎস্য মেলা শুরু হয়। তারই ধারাবাহিকতায় এবার মেলায় পোনা ও খাওয়ার মাছ বিক্রি হবে। এটি হবে একটি ব্যতিক্রমধর্মী মেলা।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইউনিয়ন পর্যায়ে মৎস্য চাষ প্রযু্িক্ত সেবা সম্প্রসারন প্রকল্প (২য় পর্যায়) এর আওতায় ৫৪ টি প্রদর্শনী স্থাপন করা হয়েছে যার পরিমান ১২.৫৫ হেক্টও ৩৪ ব্যাচে ৪৩৪ জন প্রশিক্ষন গ্রহন করেছেন। এছাড়া ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল টেকনোলজি প্রজেক্ট (এনএটিপি) ফেজ ২ প্রকল্পের আওতায় প্রদর্শনী স্থাপন হয়েছে ৩৭২ টি যার পরিমান ৪৯.৭৭ হেক্টর জমি। এই শাখায় প্রশিক্ষন গ্রহন করেছেন ১৮৬ ব্যাচে ৩৭২০ জন। তাছাড়া সরকার ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি (এপিএ) বাস্তবায়নের চুক্তি করেছে। ফলে কোন মৎস্য অফিসের কর্মে ফাঁকি দেওয়ার উপায় নেই। তাদের টার্গেট বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। এটি দেশের মৎস্য খাতের জন্য ভীষন কার্যকর একটি পন্থা। অবশ্য বাংলাদেশের মাছের রাজধানী যশোরে একসময় শতাধিক হ্যাচারী মাছের রেনু উৎপাদন করলেও কয়েক বছরের ব্যবধানে তা এখন মাত্র ৫০ এ কেন নেমে এসেছে সেই প্রশ্নের কোন উত্তর নেই কারো কাছে। আর পোনা মাছ বাজার কবে নাগাদ যশোর বাসীর কপালে জুটবে তার সঠিক ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের শুরুতে।