পাইলট আবিদ সম্পর্কে দেয়া তথ্য ‘বিভ্রান্তিমূলক’

নেপালে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনায় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন নাকচ করে দিয়েছেন কমিটির বাংলাদেশি সদস্য ক্যাপ্টেন সালাহউদ্দিন।

তিনি দাবি করেন, তদন্ত প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে কাঠমান্ডু পোস্ট যে খবর দিয়েছে, তা মিথ্যা ও বিভ্রন্তিমূলক।

এয়ারক্রাফট এক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন গ্রুপ অব বাংলাদেশ (এএআইজি-বিডি) ও নেপাল সিভিল এভিয়েশন গঠিত তদন্ত কমিটির বাংলাদেশি সদস্য ক্যাপ্টেন সালাহউদ্দিন বলেন, ‘প্রতিবেদনে পাইলট আবিদ সম্পর্কে যে তথ্য দেয়া হয়েছে, তা মিথ্যা। এ রকম কোনো প্রতিবেদন কমিশন থেকে করা হয়নি।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তদন্ত করে প্রতিবেদন তৈরি অনেক দূর এগিয়েছে। তদন্তকাজ শেষ হতে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় লেগে যাবে।’

তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই তারা এমন আজগুবি তথ্য কোথায় পেল, প্রশ্ন রাখেন ক্যাপ্টেন সালাহউদ্দিন।

এর আগে সোমবার পালি গণমাধ্যম কাঠমান্ডু পোস্ট ইউএস-বাংলার উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্টের কপি হাতে পেয়েছে দাবি করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

এতে বলা হয়েছে, ঢাকা থেকে কাঠমান্ডু যেতে এক ঘণ্টা সময়ের মধ্যে পাইলট আবিদ ‘বেপরোয়া’ আচরণ করেছেন। এমনকি ককপিটে বসেই অনবরত ধূমপান করেছেন।

গত ১২ মার্চ নেপালের ত্রিভূবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলার বিএস-২১১ ফ্লাইটের উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হলে ৫১ আরোহী নিহত হন। এর মধ্যে ২৭ জন ছিলেন বাংলাদেশি।

তদন্ত প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে কাঠমান্ডু পোস্ট বলেছে, ক্যাপ্টেন আবিদ সুলতান ব্যাপকভাবে মানসিক হতাশা ও দুশ্চিন্তায় ছিলেন। এর ফলশ্রুতিতে তিনি একের পর এক যে ভুল সিদ্ধান্ত নিচ্ছিলেন, তার কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।

ফ্লাইটের শুরু থেকেই আবিদ সুলতান অস্বাভাবিক আচরণ করেছেন দাবি করে নেপালি তদন্ত কর্মকর্তারা বলেছেন, অবতরণের ছয় মিনিট আগে পাইলট আবিদ সুলতান ত্রিভূবনের নিয়ন্ত্রণ কক্ষকে তার উড়োজাহাজের ল্যান্ডিং গিয়ার নামানো ও লক করার কথা জানান এবং বলেন, ‘গিয়ারস ডাউন, থ্রি গ্রিনস।’

কিন্তু, পরে সহকারী পাইলট পৃথুলা রশিদ যখন অবতরণের আগে শেষবারের মতো সব প্রস্তুতি মিলিয়ে দেখেন, তখন দেখা যায়, ল্যান্ডিং গিয়ার নামানো হয়নি।

এর কয়েক মিনিটের মাথায় উড়োজাহাজটি রানওয়ে ছেড়ে পাশে বিধ্বস্ত হয় এবং আগুন ধরে যায়। ওই সময় উড়োজাহাজে ৬৭ যাত্রী ও চার ক্রু ছিলেন।

তদন্তকারীরা বলেছেন, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সাবেক এ পাইলট সংস্থাটির কাছে তার ধুমপানের কথা কখনো প্রকাশ করেননি। যার কারণে তাদের (তদন্তকারীরা) কাছে মনে হয়েছে, সুলতান ককপিটে ব্যাপক মানসিক চাপের মধ্যে ছিলেন।

তারা বলছেন, ‘ককপিটের ভয়েস রেকর্ডারের কনভার্সেশন বিশ্লেষণ করে আমাদের কাছে স্পষ্ট হয়েছে, তিনি (আবিদ) ব্যাপক মানসিক চাপের মধ্যে ছিলেন। পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে তাকে অবসন্ন ও ক্লান্ত বলেও মনে হয়েছে।’

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, রেকর্ড থেকে জানা যায়, অপর সহকারী নারী পাইলটের সঙ্গে আবিদ অপমানজনক কথাবার্তা বলেন। আর তার নিষ্ক্রিয় শ্রোতা ছিলেন পৃথুলা রশিদ।